ফিচার

বর্ষায় ঘরের যত্ন

Published

on

দরজায় কড়া নাড়ছে বর্ষাকাল। এ সময়ে স্যাঁতসেঁতে আর গুমোট ভাব, সঙ্গে সোঁদা গন্ধ ঘরের মধ্যে বাড়িয়ে দেয় বাড়তি ঝামেলা। তাই বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ঘরের যত্ন না নিলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যেতে পারে। স্যাঁতসেঁতে আর গুমোট ভাব, সঙ্গে সোঁদা গন্ধ ঘরের মধ্যে বাড়িয়ে দেয় বাড়তি ঝামেলা। এ কারণে বর্ষাকালে ঘরবাড়ির বিশেষ যত্ন নিতে হয়।

বর্ষায় আসবাবের যত্ন : বৃষ্টির সময় জানালার কাছ থেকে একটু দূরে আসবাব রাখার চেষ্টা করুন। বৃষ্টির পানির ছাঁট যাতে না লাগে। আর পানি লেগেই যায় তবে শুকনো কাপড় দিয়ে আসবাব মুছে ফেলুন। বর্ষায় অনেকের বাড়ির দেয়াল স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায় বা ফাঙ্গাস পড়ে। এমন দেয়াল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে আসবাব সাজান। যদি দেয়াল ঘেঁষে রাখতেই হয় তা হলে আসবাবের পেছনে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখুন। এ সময় কাঠের আসবাবে পোকার আক্রমণ বেশি হয়। আলমারিতে আপনি ন্যাপথলিন রেখে দিন, সব ধরনের পোকামাকড় থেকে দূরে রাখে। নিমপাতা বর্ষায় পোকামাকড়ের হাত থেকে আসবাব রক্ষায় এর বিকল্প নেই। ন্যাপথলিন, স্পিরিট ও নিমের তেল পোকামাকড় দূর করতে উপকারী। বসার ঘরের সোফার গদি ভিজে গেলে রোদে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। রোদে দিলে সোফার কাঠের ফ্রেম ফেটে যাবে। এমন অবস্থায় মোটা তোয়ালে রাখুন ভেজা স্থানে, তারপর ওপরে গরম ইস্ত্রি চালান। দামি আসবাবের নিচে একটি ছোট টিনের বা কাচের পাত্রে এক টুকরো সালফার বা গন্ধক রেখে দিন, এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে আসবাব মুক্ত থাকবে। আসবাবে ছত্রাক জমে গেলে চা পাতা জ¦াল দিয়ে কড়া লিকার বানিয়ে ঠা-া করুন। তাতে মেশান অল্প একটু ভিনেগার। একটি কাপড়ে মিশ্রণটি ডুবিয়ে ভালো করে চিপে নিন। এরপর পরিষ্কার করুন। ছত্রাক দূর হবে। প্লস্টিকের আসবাবও নোংরা হলে লিকুইড সাবান বা টুথ পেস্ট ব্যবহার করুন পরিষ্কার করার কাজে।

মেঝের যত্ন: বেশিরভাগ বাসার মেঝে মোজাইক দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রতিদিন পানি দিয়ে মোছার পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত একদিন লিকুইড ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। রান্নাঘরের মেঝে বেশি ময়লা হয়। সপ্তাহে একদিন গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে মেঝে পরিষ্কার করলে মেঝের তেল চিটচিটে ভাব দূর হয়। খাবার বা অন্য কিছুর দাগ মেঝেতে পড়লে সহজে উঠতে চায় না। সেক্ষেত্রে তেঁতুলের পানি বা কামরাঙ্গার রস দিয়ে কাপড় ভিজিয়ে মুছলে সহজেই দাগ উঠে যাবে। বর্ষাকালে ঘরের কোণে নানা ধরনের পোকামাকড় বাসা বাঁধে। সেক্ষেত্রে ছোট পাতলা কাপড়ে কালিজিরা রেখে পুঁটলি বেঁধে ঘরের কোনায় বা যেখানে পোকামাকড় বাসা বাঁধে সেসব স্থানে রাখলে পোকামাকড়ের উপদ্রব দূর হবে।

কার্পেটের যত্ন: কার্পেট ক্লিনারটি যদি ভালোমানের হয়, তবে যেকোনো ধরনের গন্ধ থেকেও মুক্তি মিলবে। মেঝের কার্পেট বর্ষা মৌসুমে তুলে রাখুন। কারণ, এ সময়টাতে ব্যবহার মানেই বাড়তি ময়লা ডেকে আনা। পলিথিন কাগজে করে ভালো করে মুড়ে রাখলে পানি আর্দ্রতা বা পোকামাকড় থেকেও রক্ষা পাবে।

বাড়িকে আলো-বাতাস যুক্ত রাখুন : এই আবহাওয়ায় আপনার ঘরে ঠিকমতো আলো-বাতাস ঢুকছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। তা নাহলে একটা আর্দ্রতা ও গুমোট ভাব পুরো বাসা ঘিরে থাকবে। বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ব্যবস্থা রাখুন।

Advertisement

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই : ঘরের সব আসবাবপত্র আলো আসে সে দিকে খেয়াল রাখুন। ঘরের গাছ, টব, পুরনো ভাঙা জিনিসপত্র পানিমুক্ত রাখুন। বর্ষায় যেহেতু পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ে, তাই আপনার বাড়ির চারপাশে কার্বলিক এসিড দিয়ে রাখুন।

টুকিটাকি : বর্ষাকালে সব থেকে বড় সমস্যা কাপড় শুকানো। বৃষ্টি না থাকলে কাপড় বাইরে শুকানোই ভালো। কিন্তু বৃষ্টি থাকলে ফ্যানের বাতাসে যত দ্রুত সম্ভব কাপড় শুকিয়ে ফেলা উচিত।

ভেজা কাপড় ঘরে শুকালে ঘরের গুমোট ভাব আরও বৃদ্ধি পাবে। বর্ষায় ধোয়া কাপড় শুকালেও, একটা সোঁদা গন্ধ থেকেই যায়। গন্ধ দূর করতে কাপড় ধোয়ার সময় একটু বেকিং সোডা ব্যবহার করুন। বৃষ্টির জন্য সব দরজা-জানালা বন্ধ রাখলেও রান্নাঘর ও বাথরুমে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে নির্গমন ফ্যান (এগজস্ট ফ্যান) ব্যবহার করা। ঘরের কোনো দেয়ালে বা মেঝেতে যদি শেওলা হয়, তাহলে সাদা ভিনেগার স্প্রে করে কিছুক্ষণ রেখে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।

ঘরের বিভিন্ন স্থানে সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালালে ঘরের গন্ধ দূর হয়ে যাবে। বর্ষাকালে প্রচ- বৃষ্টিতে পুরনো বাড়ির ছাদ, দেয়াল ও মেঝেতে ড্যাম্প হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব স্থানে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটা দ্রুত সারিয়ে নিতে হবে। বাড়ির সানশেড এবং ছাদে যাতে পানি জমে না থাকে, সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।

Advertisement

সর্বাধিক পঠিত

Exit mobile version