অর্থ ও বাণিজ্য
ভ্যাট ছাড় কমাতে শুরু করেছে এনবিআর

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে গতি আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সময়ে সময়ে অনেক ভ্যাট ছাড় দিয়ে থাকে। এতে দেশের রাজস্ব আহরণ কম হয়। তবে সাম্প্রতিক কালে সেই ছাড়ের পরিমাণ কিছুটা কমে এসেছে।
এনবিআরের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত কয়েক বছরে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন করের (মূসক) ছাড়ের পরিমাণ কমেছে। ২০২২ সালে মোট ভ্যাট ছাড়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা; ২০২১ সালে যা ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা, অর্থাৎ ২০২২ সালে ভ্যাট ছাড়ের পরিমাণ কমে ১৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এনবিআর এই প্রথম এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, অর্থনীতির স্বার্থে এখন ভ্যাট ছাড়ের যৌক্তিকীকরণ দরকার। এনবিআরের তৈরি করা ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স এক্সপেনডিচার রিপোর্ট ২০২৩-২৪-এ এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে সব খাতে যে একই হারে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তা নয়। প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে যত ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়েছে, তার সিংহভাগই পেয়েছে খাদ্য ও পানীয় খাত। সেবার যে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা পরিমাণে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এর মধ্যে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ দেওয়া হয়েছে খাদ্য ও পানীয় খাতে।
অন্য খাতগুলোয় জিডিপির তুলনায় যে হারে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা এ রকম-পোশাক ও জুতা শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, গৃহনির্মাণ ও বাড়িভাড়ায় শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ, জ্বালানি ও বাতিতে শূন্য দশমিক ০৮ শতাংশ, স্বাস্থ্যে শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ, শিক্ষায় শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ ও বিবিধ খাতে শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ সবচেয়ে কম ছাড় দেওয়া হয়েছে শিক্ষা খাতে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে যে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে, তার অন্যতম শর্তগুলোর একটি হচ্ছে রাজস্ব ছাড়ের হিসাব করা। সেই সঙ্গে আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে বেরিয়ে আসবে। তখন বাংলাদেশকে প্রণোদনা ও ছাড় কমাতে হবে।
একই কারণে আইএমএফ বাংলাদেশকে ভ্যাট ছাড় যৌক্তিকীকরণের পরামর্শ দিয়েছে। এনবিআরের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, ভ্যাট ছাড় যৌক্তিকীকরণের সময় এসেছে।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যাট অবকাশ বন্ধ করা ও সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করাসহ নিয়মনীতি পরিপালন করা গেলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা যেত। কিন্তু ওই বছর আদায় হয়েছে ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ভ্যাট গ্যাপ বা সম্ভাবনা ও আদায়ের মধ্যে ঘাটতি ছিল প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংক মনে করে, নীতিগত অবস্থানের কারণে ভ্যাট আদায়ে এমন ব্যবধান থেকে যাচ্ছে। নীতি ও বিধিবিধান পরিপালনের ব্যবধান কমানো গেলে অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আদায়ের সম্ভাবনা আছে। যেসব নীতি ও দুর্বলতার কারণে ভ্যাট আদায় হয়নি, তার মধ্যে আছে বড় অঙ্কের ভ্যাট ছাড়, ভ্যাট আদায় পদ্ধতিতে ফাঁকফোকর থাকা এবং নিয়মের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ প্রভৃতি।
এনবিআরের প্রতিবেদনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রাহমাতুল মুনিমের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, এই প্রতিবেদনের আলোকে এনবিআর ভ্যাট ছাড় প্রক্রিয়ার যৌক্তিকীকরণ করতে পারবে। ন্যায্য ও স্বচ্ছ করব্যবস্থা প্রণয়নে এই প্রতিবেদনের ভূমিকা আছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বিশ্বাস করেন, এই প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে যে কেবল রাজস্ব আদায় বাড়বে, তা নয়, বরং দেশের টেকসই উন্নয়নেও তা ভূমিকা পালন করবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভ্যাট ছাড় যৌক্তিকীকরণ করা হলে দেশে কর-জিডিপির অনুপাত বাড়বে।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা

দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
অর্থ ও বাণিজ্য
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক করল সরকার

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কেউ এ-সংক্রান্ত নির্দেশিকার ব্যত্যয় ঘটালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’ অনুযায়ী পরিহারযোগ্য বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন তথ্যাদি শেয়ার করছেন এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারকে বিব্রত করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন; যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চাকরিবিধির পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ। প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। অনেক ক্ষেত্রে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হানিকর এবং বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের পর্যায়ের অপরাধ। এ ধরনের বিভিন্ন ব্যত্যয়গুলো নজরে আসায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আদেশে জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’-এর সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা’, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা’ এবং ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা’ অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
-
বিবিধ2 years ago
বাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
সীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
রাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
মাত্র ২৪ ঘন্টায় খতিয়ানের ভূল সংশোধনের সরকারি নির্দেশনা
-
ফিচার4 weeks ago
প্রথম ফ্ল্যাট কিনে ঠকতে না চাইলে মেনে চলুন এই ১০ কৌশল
-
আইন-কানুন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
প্রিমিয়াম হোল্ডিংয়ের বর্ষপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী একক আবাসন মেলা অনুষ্ঠিত