ইট, কাঠ, পাথরের শহুরে জীবনে উঁচু ভবন এখন মাথা উঁচু করেই ঠাঁই করে নিয়েছে প্রায় সবখানেই। অফিস, বাসাবাড়ি, হাসপাতাল-সবকিছুই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উঁচু হওয়ায় ওঠানামার সুবিধার্থে লিফট ব্যবহার করা হয়। লিফট ব্যবহারের সুবিধা যেমন রয়েছে তেমনি ইলেকট্রিসিটি চলে গেলে বা লিফটে থাকাকালীন কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে আচমকাই বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। তাই লিফট ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুঁটিনাটি বিষয় জানা থাকলে আপনি সাবধানতা অবলম্বন করতে পারবেন এবং সতর্ক থাকতে পারবেন।
- লিফটের সেন্সর কাজ করছে কি না, দেখে নিন। আজকাল সব লিফটেই সেন্সর থাকে। অর্থাৎ, লিফটের দরজার লাইনের ওপর ব্যক্তির উপস্থিতি যাচাই করে লিফট খোলে বা বন্ধ হয়। তবে অনেক সময় এই সেন্সর কাজ না-ও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে লিফটে ওঠার আগে দরজার মাঝবরাবর বা পাশে হাত রাখবেন। এতে আগে থেকেই বুঝতে পারবেন সেন্সর কাজ করছে কি না এবং সে অনুযায়ী পরিস্থিতি বুঝে লিফট ব্যবহার করবেন।
- লিফটে উঠেই যে ফ্লোরে যাবেন, সেই বাটন প্রেস করার পর লিফটের প্রয়োজনীয় কিছু বাটন, যেমন ইমার্জেন্সি অ্যালার্ম, ইমার্জেন্সি স্টপ এগুলো আছে কি না, দেখে নিন। হঠাৎ ইলেকট্রিসিটি চলে গেলে অথবা লিফটে যান্ত্রিক গোলযোগ হলে এই বাটনগুলো ব্যবহার করতে হতে পারে।
- ধারণক্ষমতা অতিক্রম করছে কি না, দেখুন। সব লিফটেরই একটি নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা থাকে, সেই ধারণক্ষমতার বাইরে লোকসংখ্যা লিফটে উঠলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লিফটে যে কয়জন লোকের ধারণক্ষমতা থাকে, তার অতিরিক্ত লোক উঠলে লিফটের অ্যালার্ম বেজে ওঠে। সে সময় একজন একজন করে লিফট থেকে বের হয়ে ধারণক্ষমতার মধ্যে এসে এরপর ওঠানামা করা উচিত।
- ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে লিফট ব্যবহার করবেন না। ভবনে আগুন লেগে ফায়ার অ্যালার্ম বাজলে হন্তদন্ত হয়ে লিফটে না উঠে ইমার্জেন্সি এক্সিটের জন্য যে সিঁড়ি আছে, সেখান দিয়ে নামুন। কারণ, ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে যান্ত্রিক ত্রুটি হয়ে লিফট বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- স্টপ বাটনে যেন চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিশেষ করে শিশুরা লিফটে উঠলে এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। খেলাচ্ছলে শিশুরা অনেক সময় লিফটের বাটন চেপে দেয়। তাই শিশুদের নিয়ে লিফটে উঠলে অবশ্যই এই বিষয়টি লক্ষ রেখে সাবধানতা অবলম্বন করবেন। এ ছাড়া শিশুরা যেন লিফটের দুই দরজার মাঝে হাত না রাখে বা দরজা থেকে সব সময় একটু দূরে দাঁড়ায় সেই বিষয়টিও লক্ষ রাখবেন।
- হঠাৎ লিফট বন্ধ হয়ে গেলে আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন না। ইমার্জেন্সি কল বাটন বা ইমার্জেন্সি ফোনকল করে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করুন।
- যে লিফটে আপনি নিয়মিত ওঠানামা করেন, সেটিতে কোনো রকম সমস্যা দেখলে অবশ্যই বিল্ডিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজনকে জানিয়ে দিন। আগে থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে পরবর্তী সময়ে হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে।