লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সংগতি রেখেই সৌদি আরবের পর্যটন খাতে আয় বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশটিতে পর্যটকরা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি খরচ করেছে।
সৌদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে দেশটিতে ভ্রমণকারীরা ব্যয় করেছে ৪ হাজার ৫০০ সৌদি রিয়াল বা ১২ বিলিয়ন ডলার।
পরিসংখ্যানে আরো বলা হচ্ছে, বিদেশী পর্যটকদের সৌদি ভ্রমণ ও দেশী পর্যটকদের বিদেশ ভ্রমণ মিলিয়ে ব্যালান্স অব পেমেন্টে উল্লেখযোগ্য উদ্বৃত্ত রয়ে গেছে। উপসাগরীয় অঞ্চলের বৃহৎ অর্থনীতির দেশটিতে এ খাতে প্রথম প্রান্তিকে উদ্বৃত্ত ছিল ২ হাজার ৪০০ কোটি রিয়াল, যা ২০২৩ সালের একই সময়েয়ের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি।
সৌদি সরকারের নেয়া অর্থনীতি বৈচিত্র্যকরণ কৌশল ‘ভিশন ২০৩০’ হিসেবে পরিচিত। এ লক্ষ্য অনুসারে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে দেশটির অংশগ্রহণ বাড়ছে। যার অন্যতম একটি খাত হলো পর্যটন ও বিনোদন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দর্শনার্থীদের ব্যয় বৃদ্ধি বিশ্বের শীর্ষ ১০ পর্যটক গন্তব্যের নাম লেখানোর সৌদি উচ্চাভিলাষের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
মে মাসে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিবেদন অনুসারে, আন্তর্জাতিক স্তরে পর্যটকদের চলাচল এবং বৈশ্বিক জিডিপিতে ভ্রমণ খাতের অবদান চলতি বছর প্রাক-মহামারী স্তরে ফিরে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে এ খাতে এগিয়ে রয়েছে সৌদি আরব। ডব্লিউইএফের ভ্রমণ ও পর্যটন উন্নয়ন সূচক ২০২৪ অনুসারে, ২০১৯ সালের ৫০তম অবস্থান থেকে ২০২৪ সালে ৪১তম স্থানে উন্নীত হয়েছে দেশটি।
প্রাক-কভিড স্তরে ফিরে যাওয়ার এ প্রক্রিয়ায় পর্যটক ও সাংস্কৃতিক আকর্ষণকে বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগও বাড়ছে। সম্প্রতি সৌদি-ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে দেশটির পরিবহন ও লজিস্টিকমন্ত্রী সালেহ আল-জাসের জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন খাত ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করবে সৌদি। এর মাধ্যমে ১০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন রিয়াল বা ৪২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা সৌদি পর্যটন খাতকে উদ্ভাবনের নেতৃত্ব স্থানে রয়েছে বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। তখন বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের সাত বছর আগে ১০ কোটি দর্শনার্থী আকর্ষণের মাধ্যমে ‘ভিশন ২০৩০’-এর লক্ষ্য অর্জন করেছে দেশটি।
এ বিষয়ে সৌদি পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিব জানান, ‘ভিশন ২০৩০’-এর পর্যটক লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়েছে। দশকের শেষ নাগাদ সৌদি আরব বার্ষিক ১৫ কোটি দর্শনার্থী আশা করছে। সূত্র: আরব নিউজ।