আকরিক লোহার বৈশ্বিক রফতানি চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় বিশ্বব্যাপী ধাতব পণ্যটির রফতানি ৭৫ কোটি ১ লাখ টনে পৌঁছেছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিগমিন্ট।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের আকরিক লোহার শীর্ষ রফতানিকারক। এ বছরের প্রথমার্ধে দেশটি ৪২ কোটি ৭০ লাখ টন আকরিক লোহা রফতানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। এর আগে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) অস্ট্রেলিয়া থেকে রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
সে সময় বিরূপ আবহাওয়া পরিস্থিতি ও প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং সাইক্লোন ওলগার কারণে ওয়ালকট ও রিও টিন্টো ডাম্পিয়ার বন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং হেডল্যান্ড বন্দরে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হয়েছিল। যদিও দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) দেশটি থেকে আকরিক লোহা রফতানি আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়।
এছাড়া জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ব্রাজিল ১৮ কোটি ১ লাখ টন আকরিক লোহা রফতানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। দেশটির শীর্ষ খনি ও ইস্পাত কোম্পানি ভেল ও সিএসএনের উৎপাদনক্ষমতা বাড়ার কারণে রফতানির পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও ব্রাজিলের রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেড়েছিল।
চলতি বছরের প্রথমার্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও আকরিক লোহা ৩ শতাংশ বা ৩০ লাখ টন বেড়েছে। এছাড়া এ সময় কানাডা থেকে ১০ শতাংশ, ভারত থেকে ২০ শতাংশ ও ইউক্রেন থেকে ১০০ শতাংশ রফতানি বেড়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি ইউক্রেন সামুদ্রিক রফতানি করিডোর খুলে দিয়েছে। তাই এ পথে ইউক্রেনের স্থানীয় কোম্পানিগুলো রফতানি বাড়িয়েছে। জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত ১ কোটি ৭০ লাখ টন আকরিক লোহা রফতানি করেছে ইউক্রেন।
এদিকে আকরিক লোহা আমদানিতে এখনো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে চীন। চলতি বছরের প্রথমার্ধে দেশটি ৬১ কোটি ৫০ লাখ টন আকরিক লোহা আমদানি করেছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি।
তবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার আমদানি কমেছে। দেশ দুটির আকরিক লোহা আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ২ ও ৫ শতাংশ কমেছে।
বিগমিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ চীনের বিভিন্ন প্রদেশে ইস্পাতের উৎপাদন কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তাছাড়া দেশটির বন্দরগুলোয় আকরিক লোহার বড় আকারের মজুদ আছে।
ফলে দেশটিতে ধাতব পণ্যটির চাহিদা কমতে পারে। কিন্তু একই সময়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চাহিদা বাড়তে পারে। এ প্রেক্ষাপটে আকরিক লোহার বৈশ্বিক রফতানি গত বছরের তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র: জিএমকে সেন্টার।