বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সম্প্রতি কার্বন ক্যাপচার, ব্যবহার ও সংরক্ষণ (সিসিইউএস) প্রযুক্তি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এতে শিল্প উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস সংগ্রহ করে তা মুক্তভাবে বায়ুমণ্ডলে মিশে যেতে বাধা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দিকটিও ধীরে ধীরে সামনে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানি এক্সনমবিল বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে সিসিইউএসের বাজার ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। প্রখ্যাত জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এ বাজার সম্প্রসারণ অত্যন্ত জরুরি। তবে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ পরিবেশবাদী গ্রুপের অবস্থান এর বিরুদ্ধে।
তবে তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর সংশ্লিষ্টতার কারণে একে অপছন্দ করে পরিবেশবাদী গ্রুপগুলো। অবশ্য বিশ্লেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, কয়লা পোড়ানো নিয়ে গ্রুপগুলো যতটা না উদ্বিগ্ন, সিসিইউএস নিয়ে তার চেয়ে বেশি সমালোচনা করেন।
বর্তমান বৈশ্বিক কার্বন ক্যাপচার সক্ষমতা বার্ষিক প্রায় চার কোটি টন। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৭৬০ কোটির বেশি টনে উন্নতি করা প্রয়োজন। এর সঙ্গে একই ধরনের প্রযুক্তি ডিরেক্ট এয়ার ক্যাপচার (ডিএসি) সক্ষমতাও ৯৮ কোটি টন হওয়া দরকার। তবে অন্য একটি পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে ডিএসি সক্ষমতা ৫০০ কোটি টনের বেশি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি অসিডেন্টালের প্রধান নির্বাহী ভিকি হলাবের মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে সিসিইউএস বাজার ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে, যা জ্বালানি তেল ও গ্যাস থেকে কোম্পানিটির বর্তমানের আয়ের সমান। অন্যদিকে এক্সনমবিল চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ৬ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারের প্রত্যাশা করছে। সিসিইউএসের ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারকে তারা এর সঙ্গে তুলনা করছে।
এক্সনমবিল প্রতি টন কার্বন নিঃসরণে ৫০০ ডলার আয়ের চিন্তা করছে। তবে এ প্রত্যাশাকে ‘অবাস্তব’ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, কার্বন ক্যাপচার কোম্পানিগুলোর সিসিইউএস থেকে ১২০ ডলার এবং তুলনামূলক ব্যয়বহুল ডিএসি থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত।সূত্র: দ্য ন্যাশনাল।