রাশিয়ার জব্দ সম্পদ থেকে আসা আয়ের ব্যবহার নিয়ে নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। প্রস্তাব অনুসারে, জব্দ হওয়া সম্পদের আয়কে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ক্রয় ও বেসামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। তবে প্রস্তাবে সমর্থন জানানো থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারবে ইইউ নিরপেক্ষ সদস্যরাষ্ট্রগুলো। ব্লকটি থেকে যখন কিয়েভের জন্য তহবিল খুঁজছিল, ঠিক সে মুহূর্তে এমন প্রস্তাব এলো।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্রাসেলস প্রস্তাব দিয়েছিল জব্দ করা সম্পদের আয় বাজেয়াপ্ত করার চেয়ে তা ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যয় করার। তবে সে সময় পদক্ষেপটি অস্ট্রিয়া, আয়ারল্যান্ড, মাল্টা, সাইপ্রাসসহ ইইউর সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। সে সময় তারা কিয়েভের জন্য অস্ত্র কেনা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে চেয়েছিল। ইইউর পরিকল্পনার সোচ্চার সমালোচকদের মধ্যে ছিল হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার নামও।
নতুন প্রস্তাবটিকে ইইউর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ওপর জয়লাভ করার সর্বশেষ চেষ্টা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে যে দেশগুলো এ পরিকল্পনাকে কেবল ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা প্রদানে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখতে চায় এবং বিরোধিতা করে সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ব্রাসেলস এখন দুটি ভিন্ন ট্র্যাক তৈরির ধারণা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। প্রথমটি সম্পদ থেকে আসা আয় বেসামরিক সহায়তার জন্য ব্যবহার করার প্রস্তাব, দ্বিতীয়টি অস্ত্র কেনা। যদি নিরপেক্ষ দেশগুলোকে বিরত থাকার সুযোগ রাখা হয় তাহলে বিপরীত পক্ষে ভোট কম পড়বে বলে বিবেচনায় রাখছে ইইউ।
ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম রাশিয়ার সার্বভৌম তহবিলে প্রায় ৩০ হাজার কোটি ডলার জব্দ করা হয়েছে। ব্রাসেলসভিত্তিক ক্লিয়ারিং হাউজ ইউরোক্লিয়ারের কাছে প্রায় ২০ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের তহবিল রয়েছে, যেখান থেকে গত বছরে সুদ সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৪৪০ কোটি ইউরো।
ইইউর পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল আটকে থাকা রাশিয়ান সম্পদ থেকে আসা আয়ের ৯০ শতাংশ নেয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। প্রস্তাব করেছিলেন সে অর্থকে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রের অর্থায়ন করে এমন একটি ইইউ-চালিত তহবিলে স্থানান্তর করার। ইইউ কিয়েভকে এ বছর এর মাধ্যমে ২০০-৩০০ কোটি ইউরো রাজস্ব দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখছে। সব সদস্য রাষ্ট্রের অনুমোদন নিশ্চিত করতে পারলে জুলাইয়ের প্রথম দিকে অর্থের প্রথম কিস্তি বিতরণ করা যেতে পারে।
এদিকে রাশিয়া বলেছে, তার সম্পদের বিরুদ্ধে নেয়া যেকোনো পদক্ষেপ চুরির সমান হবে। জানানো হয়েছে, তহবিল বাজেয়াপ্ত করা বা অনুরূপ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, যা পশ্চিমা মুদ্রা ও বৈশ্বিক অর্থ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।সূত্র: আরটি।