রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় একটি আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধের জেরে জমির মালিকের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিম (৩৪)। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা এবং জমির মালিক সুলতান আহমেদের ছেলে।
পুলিশ ও নিহত তানজিলের পরিবার জানায়, আজ সকালে একটি ফ্ল্যাটের সংস্কারকাজ করার সময় আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তানজিল এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মী, তাঁদের সঙ্গে আসা ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তানজিল ও তাঁর বাবা সুলতান আহমেদের ওপর হামলা করেন। এতে তানজিলের মৃত্যু হয়।
হাতিরঝিল থানা-পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য তানজিলের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়েছে। হত্যার অভিযোগে আবাসন প্রতিষ্ঠানের একজন প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, প্লিজেন্ট প্রপার্টি নামের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একজন জমির মালিকের সমস্যা ছিল। এর জেরে আজ সকালে আবাসন প্রতিষ্ঠানটি বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এর জেরে জমির মালিকের ছেলে নিহত হন।
তানজিলের মামা মাসুদ করিম বলেন, প্লিজেন্ট প্রপার্টির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ রবিউল আলম এই হত্যার নির্দেশদাতা।
এ বিষয়ে কথা বলতে রবিউল আলমকে ফোন দেওয়া হয়। তবে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র তানজিলের পরিবারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মহানগর প্রজেক্টে তানজিলের বাবা সুলতান আহমেদসহ তিনজন বাড়ি করার জন্য আবাসন প্রতিষ্ঠান প্লিজেন্ট প্রপার্টিকে জমি দিয়েছিলেন। সেই জমিতে ৯ তলা ভবন তৈরি করা হয়। পাঁচটি ফ্ল্যাট পাওয়ার কথা ছিল সুলতান আহমেদের। ২০২৩ সালে আবাসন প্রতিষ্ঠান তাঁদের দুটি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে। কিন্তু বাকি তিনটি ফ্ল্যাট দিতে গড়িমসি শুরু করে। এ নিয়ে অনেক দিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। একপর্যায়ে সুলতান আহমেদকে আটতলার একটি ফ্ল্যাট নিজেদের টাকায় সংস্কার করতে বলে আবাসন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার ওই ফ্ল্যাট সংস্কার করতে গেলে প্রতিষ্ঠানের লোকজন বাধা দেন। আজ সকালে আবার কাজ শুরু করলে আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং ভাড়াটে ব্যক্তিরা তানজিল ও তাঁর বাবার ওপর হামলা করেন। এ সময় তানজিলের অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।