যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিপোর্ট এলএনজি পুনরায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানি শুরু করেছে। অন্যদিকে জাপানের প্রধান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় পণ্যটির মজুদ সম্প্রতি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এ কারণে চলতি সপ্তাহে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম কমেছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় সেপ্টেম্বরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১২ ডলার, গত সপ্তাহে যা ছিল ১২ ডলার ২০ সেন্ট।
এ বিষয়ে ডাটা ও অ্যানালিটিকস ফার্ম কেপলারের বিশ্লেষক আনা সুবাসিক বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশে আবহাওয়া ঊষ্ণ থাকলেও অন্যান্য কারণে চলতি সপ্তাহে এলএনজির দাম কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিপোর্ট এলএনজি প্লান্টে পুনরায় লোডিং শুরু, জাপানের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় গ্যাসের বাড়তি মজুদ ও চীনে নিম্নমুখী চাহিদা।’
এলএসইজি ডাটা ও টেক্সাস এনভায়রনমেন্টাল রেগুলেটরসের ফাইলিং অনুসারে, টেক্সাসের ফ্রিপোর্ট এলএনজির রফতানি প্লান্ট বুধবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে পরদিন আবার পরিষেবায় ফিরে আসে।
বিশ্বের প্রধান এলএনজি আমদানিকারক দেশগুলোর একটি জাপান। দেশটির অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুসারে, ২১ জুলাই পর্যন্ত দেশটির প্রধান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় পণ্যটির মজুদ ছিল ২৩ লাখ ৫০ হাজার টন, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২১ শতাংশ বেশি। এছাড়া দেশটিতে এলএনজির সাম্প্রতিক এ মজুদ ২০১৯-২৩ সালের গড়ে ২১ লাখ ৯০ হাজার টনের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইট অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার আদর্শে গত বৃহস্পতিবার প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় দাম স্থির হয়েছে ১০ ডলার ২৯৪ সেন্টে। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভার্চুয়াল ট্রেডিং পয়েন্ট টিটিএফে সেপ্টেম্বরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।
আরগাস সেপ্টেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১০ ডলার ২৫ সেন্ট। অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিজ আগস্টে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ৯ ডলার ৯৮ সেন্ট।
এশিয়ার স্পট মার্কেটে চলতি সপ্তাহে এলএনজির দাম কমতির দিকে। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে ১২ ডলার বা তার ওপরে বেচাকেনা হচ্ছে। এর প্রধান কারণ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি। অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে বাঁচতে এ অঞ্চলে এয়ারকন্ডিশনার থেকে শুরু করে অন্যান্য বিদ্যুচ্চালিত যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়ছে। বাড়তি চাহিদা মেটাতে এশিয়ার দেশগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে এলএনজির চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে রয়টার্স সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাড়তি চাহিদার কারণে এলএনজি রফতানিকারকরা সরবরাহ সংকটে পড়তে পারে, যার কারণে স্পট মার্কেটে বেড়ে যেতে পারে এ জ্বালানি পণ্যের দাম। এরই মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল-মে পর্যন্ত এলএনজির দাম আগের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। সূত্র: বিজনেস রেকর্ডার।