ভ্রমণ ভিসায় কিংবা সেনজেন ভিসার সুযোগ নিয়ে পর্তুগালে এসে অভিবাসন সুবিধা নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে এই নতুন নীতিমালাতে। অভিবাসন ইস্যুতে ৪১টি প্রস্তাব কাউন্সিলর মিনিস্টাররা পাশ করার পর সোমবার (৩ জুন) রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য তা পাঠানো হয়। এরপর ঠিক ৩ ঘণ্টার মধ্যেই স্বাক্ষর করে দেন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়টি উঠে এসেছে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যমে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনেগ্রো বলেছেন, পর্তুগালের দরজা বন্ধ হচ্ছে না। তবে যেরকম অরক্ষিত ছিলো এখন আর সেরকম থাকবে না। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পর্তুগাল আসা যাবে। তবে থাকতে হবে কাজের কন্ট্রাক্ট ও আবাসনের নিশ্চয়তা। চাকরি বা নিয়োগ দেয়া কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও কড়া নির্দেশনা দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী।
এতদিন ভ্রমণ ভিসায় কিংবা অন্য কোনোভাবে পর্তুগালে এসে কাজের চুক্তি করলে মিলতো বৈধ হবার সুযোগ। এ কারণে অনুন্নত দেশ থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ভিড় পর্তুগালে। বাংলাদেশিরাও ইউরোপের এই দেশটিতে আসছে নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায়। তবে ইতিমধ্যেই যারা বৈধ হওয়ার জন্য অভিবাসন ও ইমিগ্রেশন সংস্থায়- সেফ এন্টি করে ফেলেছেন তাদের আতঙ্কিত হবার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন পর্তুগাল বাংলাদেশ ফেন্ডসশিপ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রানা তসলিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, যারা সেফ এন্টি করেছেন তাদের কার্যক্রম পূর্বের নিয়মেই চলমান থাকবে। পর্তুগালে অতিরিক্ত অভিবাসী প্রত্যাশী হওয়ায় বাসস্থান ও কর্মসংস্থান সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে দেশটির সরকার অভিবাসন নীতিমালায় এই পরিবর্তন আনছে। এছাড়াও অভিবাসন বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপ রয়েছে দেশটি। তবে ইতিমধ্যে যারা পর্তুগালে এসে সেফ এন্টি করতে পারেননি তাদের অনেকেই অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
নতুন এ প্রস্তাবে অদক্ষ কর্মীর পরিবর্তে মেধাবী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন খাতে দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে। ভোগান্তি কমবে পর্তুগালে বসবাসরত নাগরিকদের পরিবারের সদস্যদের পর্তুগাল আসাসহ অন্যান্য ইস্যুতেও। সেইসঙ্গে বিভিন্ন দেশে থাকা পর্তুগালের কনস্যুলেটগুলোর কার্যক্রম আরো গতিশীল করার বিষয়টিও উঠে এসেছে নতুন প্রস্তাবে।
অন্য দেশের ভিসা নিয়ে পর্তুগাল এসে রেসিডেন্স পারমিটের আবেদন করতে পারবে না শিক্ষার্থীরা। তবে নিজ দেশে পর্তুগিজ কনস্যুলেট থেকে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আসা যাবে। নতুন এ প্রস্তাবে- সুযোগ বাড়বে পর্তুগিজ ভাষাভাষী বা সিপিএলপি দেশের অভিবাসীদের। সিপিএলপি দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হচ্ছে বৃত্তির ব্যবস্থাও। পড়াশোনা শেষ না করে কোন শিক্ষার্থী রেসিডেন্স স্ট্যাটাস চেঞ্জ করতে পারবে না এমন বিষয়ও রয়েছে নতুন প্রস্তাব।
এদিকে, এরইমধ্যে বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীদের কাছ থেকে ৩০ মিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগারে জমা করেছে পর্তুগালের অভিবাসন সংস্থা আইমা। এখনো ৪ লাখের বেশি আবেদনের নিষ্পত্তি করতে কাজ করছে সংস্থাটি। দ্রুত এসব আবেদনের নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন-পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী।
তবে পর্তুগালে কেউ অমানবিকতার শিকার হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছে প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনেগ্রো। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত আসার পরপরই নতুন করে আবেদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও ধারণা করছে অভিবাসন প্রত্যাশীরা।