আবাসন সংবাদ
প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থানে এগিয়ে আবাসন শিল্প
দেশের অর্থনীতিতে আবাসন শিল্পের অবদান অনস্বীকার্য। এ শিল্পটি একদিকে যেমন মানুষের মৌলিক অধিকার- মাথা গোঁজার ঠাঁই নির্মাণ করে দিচ্ছে, অন্যদিকে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। সর্বোপরি এ আবাসন শিল্প দেশের জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শুধু তা-ই নয়, এ শিল্পটিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে আরও শতাধিক সহযোগী শিল্প। এসব শিল্পের মাধ্যমেও কর্মস্থান হয়েছে আরও লাখ লাখ বেকারের।
সব মিলে আবাসন শিল্প দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে অগ্রগামী ভূমিকা রাখছে। জিডিপিতে আবাসন খাতের অবদান ১৫ শতাংশ। এ খাত থেকে সরকার ট্যাক্স, ভ্যাট, রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ প্রচুর রাজস্ব পায়। অর্থনীতিতে গতি আনতে হলে অবশ্যই আবাসন খাতে গতি আনতে হবে। সমগ্র নির্মাণ খাতে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত আছেন। তাদের ওপর নির্ভর করেই প্রায় আড়াই কোটি নাগরিকের অন্ন-বস্ত্রের চাহিদা পূরণ হয়।
এই খাতকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় বিশাল কর্মযজ্ঞ। এভাবে বাংলাদেশে আবাসন খাত গত প্রায় ৪০ বছর ধরে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা অবকাঠামোগত উন্নয়নকে অর্থনীতির উন্নয়নের মূল সূচক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এ অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিস্তৃতি বিশাল। রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট ও পরিবহন সেক্টরের সমস্যা সবই এই বিভাগের অধীন।
রিয়েল এস্টেট বা হাউজিং শিল্পও এই অবকাঠামোগত শিল্পগুলোর মধ্যে একটি। নানা চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে বছরের পর বছর ধরে এই সেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। সব শিল্প থেকেই এই গ্রোথ প্রত্যাশিত হলেও অনেক শিল্পই আশানুরূপ ফল পায় না। এককথায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে আবাসন খাতের দ্বারা। এ শিল্পের চালিকাশক্তি কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সম্পত্তির মূল্য, সুদের হার, সম্পত্তির চাহিদা, নগরায়ণ ইত্যাদি। আবারও এই শিল্পটি সিমেন্ট, ইস্পাত, টাইলস, স্যানিটারি, গ্লাস এবং অন্যান্য বিল্ডিং উপকরণ শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গেও জড়িত। আবাসন শিল্পের উন্নয়ন ঘটলে এ পণ্যগুলোর চাহিদাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই রিয়েল এস্টেট সেক্টরের উন্নয়ন অন্যদের উন্নয়নে পরোক্ষ প্রভাবক হিসেবেও কাজ করে।
রিয়েল এস্টেট সেক্টর গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ সময় দ্রুত নগরায়ণ এবং অস্বাভাবিক জনসংখ্যার বৃদ্ধি হয়েছে। ফলস্বরূপ, আবাসন খাতের চাহিদাও বেড়েছে অতি দ্রুত। রিহ্যাবের হিসাব মতে ২০১৪ সালে এ সেক্টর জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশ যা আগের বছরেও ছিল ৭.০৪ শতাংশ। এখন জিডিপিতে অবদান বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশ।
জাতিসংঘের করা জরিপ অনুসারে দেশের ৪০ শতাংশ এলাকা নগরায়ণের আওতায় চলে আসছে। আর অধিক নগরায়ণের অর্থই হলো আবাসনের চাহিদা বৃদ্ধি। তাই রিয়েল এস্টেটের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকবে। এ ছাড়া সামাজিকভাবেও আমাদের দেশ ভিন্ন ধরনের একটি সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বৃহৎ যৌথ পরিবার ভেঙে ছোট ছোট একক পরিবারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তাই ফ্ল্যাট এবং অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
এ ছাড়া দেশে বাড়ছে মধ্যবিত্ত মানুষের সংখ্যা এবং তাদের ক্রয়ক্ষমতা। আর এমন মানুষ প্রতিনিয়ত খোঁজ করছে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই। সব দিক ভেবেই বলা যায় এদেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে। শিল্প বাণিজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে নগরায়ণ। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ নগরবাসী ছিল।
জাতিসংঘের তৈরি ‘ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টাস : দ্য রিভিসন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকা হবে বিশ্বের ষষ্ঠ জনবহুল নগরী। লোকসংখ্যা হবে ২ কোটি ৭০ লাখ। ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের ফলে বর্ধিত নগরায়ণে বিপুল জনস্রোতের বিপরীতে বদলেছে শহরের ধরন, গড়ন ও পরিধি।
কেবলমাত্র রাজধানী ঢাকাই নয়, একই কারণে অবকাঠামো ও পরিধিগতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের ব্যাপ্তিও। বাড়তে থাকা নাগরিকের ক্রমবর্ধমান আবাসন সমস্যা নিরসনে আবাসন শিল্প এগিয়ে এসেছে। নগরায়ণের ক্রমাগত চাপকে সামাল দিতে নাগরিক জীবনমান নিশ্চিতকরণ, পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা ও আবাসন পরিকল্পনা নিয়ে দেশের আবাসন খাত হেঁটেছে সমান গতিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সহজলভ্যতা, পুঁজির সঠিক বিনিয়োগ ও এর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, উন্নত আবাসন ব্যবস্থাপনা নিয়ে আবাসন খাতে কয়েক দশকের পরিবর্তন এক কথায় চোখে পরার মতো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে ‘সবার জন্য আবাসন’ নীতি আবাসন খাতের সম্প্রসারণে ব্যাপক অবদান রাখবে। সরকারের আবাসন খাত সহায়ক নীতি সহায়তা, পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনায় উন্নত আবাসনের ছোঁয়া দেশের প্রত্যন্ত পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অনেকেই।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৬ শতাংশ যা ২০১৬-২০১৭, ২০১৭-২০১৮ ও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৭ শতাংশের উপরে ছিল এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৮ শতাংশ অতিক্রম করে। কোভিডকালেও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঈর্ষণীয় ৬.৯৪ শতাংশ ছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ আর চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ধলা হয়েছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় আবাসন খাত প্রতিবছর জিডিপির এই প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পরিসংখ্যান বলছে মোট দেশজ জিডিপির ৭ শতাংশ আসে সরাসরি রিয়েল এস্টেট খাত থেকে। এ ছাড়াও এ খাতের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাকআপ লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিসহ জিডিপিতে মোট অবদান ১৫ শতাংশেরও বেশি। সম্ভাবনাময় এ খাতের সঙ্গে জড়িত আছে ২১১টি থেকে ২৬০টি সংযুক্ত খাত।
বর্তমানে আবাসন খাত দেশের সার্বিক শিল্পোন্নয়নে অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর তাই অব্যাহত এ অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে কখনো যৌথ উদ্যোগ, কখনো ব্যক্তি উদ্যোগকে সহায়তা করেছে রাষ্ট্র। নীতি সাহায্য থেকে শুরু করে দ্রুত বর্ধমান এ খাতকে নানামুখী পদক্ষেপ এ খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির ধারা অক্ষুণ্ন রাখতে সহায়তা করে চলছে।
নব্বই দশকের শুরুতে শহরমুখী জনস্রোত, শিল্প-বাণিজ্য উদারীকরণ ও তেজি অর্থনৈতিক প্রবণতায় শুরু হয় অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, রেডি প্লট বিক্রয়, বৃহদাকায় আবাসন পরিকল্পনার। উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত ও সচ্ছল মধ্যবিত্ত অনেকেই সে সময় আগ্রহী হয় আধুনিক আবাসন ব্যবস্থায় সংযোজিত হতে। ক্রমশ দেশে করপোরেট ব্যবসার সম্প্রসারণ, গার্মেন্টস খাতে অগ্রগতি এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিস্থিতিতে শহরের আবাসন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। বাড়ে ক্রেতা এবং এ খাত থেকে সরাসরি সুবিধাভোগীর সংখ্যা। অনেকেই নিজের পুরোনো ভবন বদলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে আবাসন শিল্প বিশেষত বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে জোয়ার দেখা যায়।
দ্রুত নগরায়ণের ফলে জমির ওপর চাপ বেড়েছে দিন দিন। এরই এক অনিবার্য ফসল আবাসন খাত। বাংলাদেশে আবাসন ব্যবসার বয়স এখন ৪০ পেরিয়ে গেছে। দেশের বেসরকারি আসান খাত মোট নগর আবাসনের অর্ধেকটা মেটায়। ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে আবাসন ব্যবসা বড় আকারে শুরু হয়। আবাসন ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান রিয়াল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯১ সালে। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির সদস্যসংখ্যা ছিল মাত্র ১১। রিহ্যাবের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন এর সদস্যসংখ্যা ৯১১।
অর্থ ও বাণিজ্য
দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট জগতে সফল বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: এক দশকেরও কম সময়ে কঠোর পরিশ্রম, সততা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মাত্র ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির। নান্দনিক শহর দুবাইয়ের অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক আবাসন (রিয়েল এস্টেট) খাতে তিনি শুধু নিজের অবস্থানই তৈরি করেননি, প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম এমজে প্রপার্টিজ (MJ Properties)।
এমজে প্রপার্টিজ আকিবের নেতৃত্বে অল্প সময়েই দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় এক উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছে। এই সাফল্যের মূল কারণ হলো গ্রাহকদের প্রতি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে মেধাবী তরুণ-তরুণীদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাদের লক্ষ্য দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা।
আকিবের অঙ্গীকার: “সততা ও ন্যায়ের মাধ্যমে এমজে প্রপার্টিজকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেন এই প্রতিষ্ঠান দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে।”
একসময় আকিবের স্বপ্ন ছিল স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েই তিনি এখন এমজে প্রপার্টিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (Founder & CEO)। তার কর্মজীবনের শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে—হজ, ওমরাহ ও টিকেটিং-এর কাজের মাধ্যমে। সেখানেই সততা ও কঠোর পরিশ্রমের হাত ধরে একজন সফল উদ্যোক্তা ও প্রকল্প উদ্ভাবক হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে ওঠে।
উদ্যোক্তা হিসেবে আকিবের বিশেষ গুণ হলো *বিনিয়োগের সঠিক ক্ষেত্র নির্ধারণ* করে ক্লায়েন্টদের জন্য *সর্বোচ্চ মুনাফা ও নিরাপদ রিটার্ন* নিশ্চিত করা। তিনি দুবাইয়ের আধুনিক স্থাপত্য ও সমৃদ্ধ জীবনযাত্রার মান বজায় রেখে নির্মিত উন্নতমানের আবাসন প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য ক্লায়েন্টদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আকিবকে। ছাত্রাবস্থায়, ২০১৪ সালে বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের, বিশেষত মায়ের, দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত থাকাকালে করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়িক ধস নামলে উন্নত জীবনের আশায় তিনি দুবাই পাড়ি জমান।
বর্তমানে তিনি রিয়েল এস্টেট ছাড়াও আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার পুরো পরিবার নিয়ে দুবাইতেই বসবাস করছেন। সততা, কঠোর পরিশ্রম আর স্বপ্ন পূরণের অদম্য স্পৃহা আকিব মুনিরকে আজ তরুণ প্রজন্মের কাছে একজন আদর্শ রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আকিবের বাবা ছিলেন খুলনার বিশিষ্ট সাংবাদিক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং খুলনার সুপরিচিত একটি পত্রিকার সম্পাদক—এডভোকেট কামরুল মুনির। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন খুলনার শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদের একজন। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের ভার নেমে আসে তরুণ আকিবের কাঁধে।
বাবার মৃত্যুর শোক সামলেই তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি দিয়ে। সেখানেই ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক জগতে তাঁর হাতেখড়ি।
তবে ভাগ্যের পরিক্রমায় আসে করোনাকালীন সংকট। বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক ধস নেমে আসে, বন্ধ হয়ে যায় ট্রাভেল খাতের কার্যক্রমও। জীবনের কঠিন সময়ে হাল না ছেড়ে আকিব নতুন করে স্বপ্ন দেখেন—উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে।
আবাসন সংবাদ
দ্বিগুণেরও বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুযোগ দিয়ে ড্যাপ সংশোধন
দ্বিগুণেরও বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুযোগ দিয়ে ড্যাপ সংশোধন, ঢাকার বাসযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সংশোধিত ড্যাপে রাজধানীকে আগের ২৭৫টি জনঘনত্ব ব্লকের পরিবর্তে ৬৮টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। গাজীপুরের অংশ বাদ দিয়ে নতুন পরিকল্পনায় ঢাকাকে ১ হাজার ৯৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এতে ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বোচ্চ জনঘনত্বও ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে।
ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় ভবনের উচ্চতা সীমা বাড়িয়ে ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) ২০২২–২০৩৫-এর সংশোধন চূড়ান্ত হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
একইসঙ্গে খসড়া ‘ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা–২০২৫’-এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে ড্যাপ রিভিউ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি।
সংশোধিত ড্যাপে রাজধানীকে আগের ২৭৫টি জনঘনত্ব ব্লকের পরিবর্তে ৬৮টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। গাজীপুরের অংশ বাদ দিয়ে নতুন পরিকল্পনায় ঢাকাকে ১ হাজার ৯৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এতে ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বোচ্চ জনঘনত্বও ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে।
২০২২ সালে গেজেট প্রকাশের পর এক দফা সংশোধন আনা হয়েছিল। কিন্তু আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা বারবার ঢাকায় ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ সংশোধনে তাদের চাপেই ভবনের উচ্চতা ও জনঘনত্ব বাড়ানো হয়েছে বলে রাজউক ও মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে।
রাজউক সূত্র জানায়, ড্যাপ (২০২২–২০৩৫) সংশোধনে যেসব বিষয়ের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় ভবনের উচ্চতা সীমা বৃদ্ধি, মুখ্য ও সাধারণ জলস্রোত একীভূত করে ‘বন্যা প্রবাহ অঞ্চল’ ঘোষণা (যেখানে কোনো ধরনের স্থাপনা করা যাবে না), এবং ব্লকভিত্তিক উন্নয়নে অন্তত ৫০ শতাংশ এলাকা খেলার মাঠ ও পার্কের জন্য সংরক্ষণ।
বিশেষ করে কেরানীগঞ্জ, সাভারের হেমায়েতপুর, নারায়ণগঞ্জের কাশিপুর, রূপগঞ্জের কাঁচপুর, ভুলতা ও গাউছিয়া এলাকায় আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুযোগ থাকছে।
এদিকে খসড়া ‘ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা–২০২৫’-এ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে ভবন নির্মাণের পর প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অকুপ্যান্সি সার্টিফিকেট নবায়ন বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন বিধিমালায় একবার সার্টিফিকেট নিলেই তা আজীবনের জন্য কার্যকর থাকবে। পাঁচ কাঠা বা তার বেশি জমির প্লটে স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
২০০৮ সালের পুরোনো বিধিমালা অনুযায়ী, ভবন নির্মাণের আবেদন করলেই অনুমোদন ফি দিতে হতো। নতুন বিধিমালায় ভবন নির্মাণের সুপারিশপ্রাপ্তির পর ফি পরিশোধ করতে হবে। আবেদন নিষ্পত্তির সময়ও ৪৫ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৮০ দিন করা হয়েছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, সংশোধিত ড্যাপে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি মুখে বলা হলেও বাস্তবে অধিকাংশ পরিবর্তন এসেছে ব্যবসায়িক স্বার্থে। শুধু জলস্রোত একীভূত করে ‘বন্যা প্রবাহ অঞ্চল’ ঘোষণা পরিবেশগত ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও বাকি সংশোধনগুলো ঢাকার ওপর আরও চাপ বাড়াবে। জনঘনত্ব ও ভবনের উচ্চতা বাড়লে রাজধানীর বাসযোগ্যতা কমবে এবং যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
এদিকে, আবাসন ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী ড্যাপ সংশোধন হওয়ায় তারা সন্তুষ্ট। তাদের মতে, এ সংশোধনের ফলে আবাসন খাতে নতুন গতি আসবে এবং ব্যবসায়ীরা পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
বাংলাদেশ রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন (রিহ্যাব)-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, “আমরা মনে করি, ড্যাপে রাজউক এলাকার ভবনের উচ্চতায় যে বৈষম্য ছিল, সেটি সংশোধনের মাধ্যমে সমন্বয় করা হয়েছে। এতে যেমন আবাসন খাত পুনরুজ্জীবিত হবে, তেমনি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও গতি আসবে।”
তিনি আরও বলেন, “ড্যাপে ভবনের উচ্চতা কমিয়ে দেওয়ার কারণে গত ১৫ মাস ধরে এই খাতের কার্যক্রম প্রায় স্থবির ছিল। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সংশোধিত ড্যাপে আবাসন ব্যবসায়ীদের দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাতের মন্দাও কাটবে।”
তবে খসড়া ‘ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা–২০২৫’-এ স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে রিহ্যাব আপত্তি জানাবে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে রাজউক জানিয়েছে, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই ড্যাপ সংশোধন ও খসড়া ইমারত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ঢাকার বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করেই প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, “ড্যাপের সংশোধন ঢাকার পরিবেশ, আবাসন ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে করা হয়েছে। বিশেষভাবে পরিবেশ সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। মিড আরবান এরিয়ায় ভবনের উচ্চতা সীমা কিছুটা বাড়ানো হলেও ব্লকভিত্তিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ কাঠা বা তদূর্ধ্ব প্লটে ভবন নির্মাণে স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সংশোধনীগুলো ঢাকার বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করেই করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ঢাকার আশপাশের সাভার, বিরুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, ভুলতা–গাউসিয়া ও নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় ভবনের উচ্চতা সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে, ফলে কেন্দ্রীয় ঢাকার ওপর চাপ কিছুটা কমবে।”
কোন এলাকায় ভবনের উচ্চতা কতটুকু বাড়ছে?
রাজউক এলাকার প্রায় সব জায়গাতেই ভবনের উচ্চতা বাড়ছে। সংশোধিত ড্যাপ ও খসড়া ‘ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা–২০২৫’ অনুযায়ী, অনেক স্থানে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর—ফার) দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে আগে যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচতলা ভবন নির্মাণের সুযোগ ছিল, এখন সেখানে ১০ থেকে ১১ তলা পর্যন্ত ভবন তোলা যাবে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্লটে যত বেশি খোলা জায়গা রাখা হবে, সে অনুযায়ী ভবনের উচ্চতায় অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হবে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো এলাকায় ফার-এর মান ২.৫ হয়, তাহলে ন্যূনতম ফাঁকা জায়গা রেখে ৪–৫ তলা ভবন করা যাবে। কিন্তু জমির মালিক যদি আরও বেশি জায়গা খালি রাখেন, তবে একই মানে ৭–৮ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যাবে।
যেসব এলাকায় ফার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—মিরপুরে ২.৮ থেকে ৩.৪, দক্ষিণ খানে ২ থেকে ৩.১, শেওড়াপাড়ায় ২ থেকে ৩, কড়াইলে ০ থেকে ২, মহাখালীতে ২.২ থেকে ৩.৩, মোহাম্মদপুরে ২.৭ থেকে ৩.৪, পুরান ঢাকায় ২.৬ থেকে ৩.৩, খিলগাঁওয়ে ২ থেকে ৩.৪, টঙ্গীতে ২.৪ থেকে ৩.২, রূপগঞ্জে ২ থেকে ৩.২, সাভারে ২ থেকে ৩.৪, মিরপুর ডিওএইচএসে ২.৫ থেকে ৪.৮ এবং খিলক্ষেত আবাসিক এলাকায় ২ থেকে ৪.৪।
এছাড়া বারিধারা, বসুন্ধরা, কচুক্ষেত, উত্তরা, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর, পান্থপথ, ডেমরা ও মগবাজারসহ আরও বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যমান ফার-এর মানের তুলনায় সর্বোচ্চ ১.৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু ফার-এর মান বৃদ্ধি নয়—যদি ব্লকভিত্তিক উন্নয়নে একাধিক প্লট একীভূত করা হয়, তাহলে নির্ধারিত ফার-এর ওপর অতিরিক্ত ০.২৫ থেকে ০.৭৫ পর্যন্ত বোনাসও দেওয়া হবে।
রাজউক জানিয়েছে, কোনো মালিক যত বেশি খোলা জায়গা ছেড়ে দেবেন, তার প্লটে ভবনের উচ্চতা তত বেশি করা যাবে। ফলে ভবনের উচ্চতা বাড়লেও খোলা জায়গা ও সবুজ এলাকা সংরক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
ফ্লোর ইউনিটও বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি
ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফ্লোর ইউনিটের সংখ্যাও বেড়েছে, অনেক জায়গায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রায় সব এলাকাতেই ফ্লোর ইউনিট বা আবাসন ইউনিটের হার বাড়ানো হয়েছে, ফলে ফ্ল্যাট নির্মাণের সুযোগও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এলাকাভেদে আবাসন ইউনিটের হার মূল ড্যাপের তুলনায় বাড়ানোয় সব এলাকাতেই ফ্ল্যাটের সংখ্যা বাড়বে। উদাহরণস্বরূপ, মূল ড্যাপে পুরান ঢাকায় আবাসন ইউনিটের হার ছিল ১.২, যা এখন দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ৩.১ করা হয়েছে। ফলে পুরান ঢাকার পাঁচ কাঠা জমিতে আগে সর্বোচ্চ ছয়টি ফ্ল্যাট করা যেত, এখন সেখানে ১৩টি পর্যন্ত ফ্ল্যাট নির্মাণের সুযোগ থাকবে।
সংশোধিত ড্যাপের তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণ খানে ফ্লোর ইউনিট ১.৪ থেকে বাড়িয়ে ২.৯, মিরপুরে ১.৭ থেকে ২.৯, শেওড়াপাড়ায় ১.৩ থেকে ৩, মহাখালীতে ১.৯ থেকে ৩.২, মোহাম্মদপুরে ১.৭ থেকে ২.৮, পুরান ঢাকায় ১.২ থেকে ৩.১, টঙ্গীতে ১.২ থেকে ৩, রূপগঞ্জে ১.২ থেকে ৩, সাভারে ১.২ থেকে ৩, মিরপুর ডিওএইচএসে ১.৯ থেকে ২.৭ এবং খিলক্ষেত আবাসিক এলাকায় ১.২ থেকে ২.৬ করা হয়েছে।
‘ড্যাপের সংশোধন হতাশাজনক’— বিশেষজ্ঞরা
নগর পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশবিদরা বলছেন, ড্যাপের সংশোধন যেভাবে করা হয়েছে তা হতাশাজনক এবং এতে ঢাকার ওপর চাপ আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-এর সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, “ড্যাপের এই সংশোধন পুরোপুরি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর স্বার্থে করা হয়েছে। যেখানে ঢাকার ওপর জনঘনত্বের চাপ কমানোর কথা, সেখানে তা ২৫০ থেকে ৩০০ করা একেবারেই হঠকারী সিদ্ধান্ত। বিশ্বের কোনো শহরেই জনঘনত্ব ১৫০ থেকে ২০০-এর বেশি নয়। আগের ড্যাপে যে এফএআর (ফার) নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটিই বেশি ছিল; এখন সেটিকে আবার দ্বিগুণ করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলো সুউচ্চ ভবনের বস্তিতে পরিণত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সংশোধিত ড্যাপ ও ইমারত বিধিমালা–২০২৫-এ ব্লকভিত্তিক উন্নয়নের কথা বলা হলেও, ফার ও ইউনিট সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে ঢাকার ট্রাফিক পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হবে। ভবন নির্মাণের সময় খোলা জায়গা দেখালেও বাস্তবে মালিকরা নিয়ম ভঙ্গ করে ভবন নির্মাণ করেন। ফলে উচ্চতায় ছাড় দিয়ে আবাসন ব্যবসায়ীদের আরও সুযোগ করে দেওয়া হলো।”
তিনি আরও বলেন, “ভবন নির্মাণের আবেদন নিষ্পত্তির সময় ৪৫ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৮০ দিন করায় জমির মালিকদের ভোগান্তি বাড়বে। রাজউকের ফাইল প্রক্রিয়াকরণে সর্বোচ্চ তিন মাস সময় লাগতে পারে, সেখানে ছয় মাসে উন্নীত করায় জটিলতা আরও বাড়বে।”
তবে তিনি নতুন বিধিমালায় ভবনে স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার, পানি পুনর্ব্যবহার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা যুক্ত করাকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে এসবের কার্যকর বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নতুন বিধিমালায় ইমারত নির্মাণে অতিরিক্ত ভয়েড স্পেস, সেটব্যাক, ভূমি আচ্ছাদন ও জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণে সংশোধন আনা হয়েছে এবং বিল্ডিং কোডের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগঝুঁকি বিবেচনায় রেখে স্থাপত্য নকশার পাশাপাশি কাঠামোগত ও অন্যান্য নকশা অনুমোদনের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
রাজউক জানিয়েছে, গ্রিন বিল্ডিং নির্মাণে প্রণোদনা প্রদান, আপিল কমিটি গঠনসহ আরও কয়েকটি নতুন বিষয় সংযোজন ও পরিমার্জন করা হয়েছে।
-
বিবিধ2 years agoবাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন1 year agoরিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ2 months agoরাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আইন-কানুন2 months agoদলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়
-
আবাসন সংবাদ2 months agoসীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আইন-কানুন2 years agoরিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ2 months agoপ্রিমিয়াম হোল্ডিংয়ের বর্ষপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী একক আবাসন মেলা অনুষ্ঠিত
-
আবাসন সংবাদ2 months agoআবাসন পরিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও হিসাবরক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

