বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের আদলে দেশে বিশেষ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন খাতের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। সেই সাথে, কোস্টাল ট্যুরিজম, নাইট-লাইফ ট্যুরিজম, ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়নসহ পর্যটন বহুমুখীকরণ, পর্যটন বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, সেবার মান ও নিরাপত্তা জোরদারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) এফবিসিসিআই আইকনে, সিভিল এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় এই এসব কথা উঠে আসে। ওই স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আবুল কালাম মো. আবু রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সুজীব রঞ্জন দাস। এ সময় এফবিসিসিআইর সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, মো. মুনির হোসেন, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকবৃন্দ, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দেশের জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ পর্যটনকে সম্প্রসারণের পাশাপাশি কমিউনিটি ট্যুরিজম, ইকো-ট্যুরিজম, কোস্টাল ট্যুরিজমসহ পর্যটন পণ্য ও সেবাকে বহুমুখীকরণের মাধ্যমে অর্থনীতিতে এই খাতের অংশীদারত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিদেশী পর্যটক পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিশেষ করে ভিসা জটিলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ভিসা জটিলতা দূরীকরণসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকরণ, সেবার মান উন্নতকরণ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং জোরদার করতে হবে।
এ সময় পর্যটন খাতের টেকসই উন্নয়নে কমিটির সদস্যদের কাছে লিখিত আকারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আহ্বান করেন তিনি।
বিদেশী পর্যটক আকর্ষণের আগে খাতের উদ্যোক্তাদের গুণগত সেবা দিয়ে স্থানীয় পর্যটকদের সন্তুষ্টি অর্জনে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. মুনির হোসেন। তিনি বলেন, আমরা কি লোকাল ট্যুরিস্টদের সন্তুষ্ট করতে পেরেছি? বিদেশী পর্যটককে আকৃষ্ট করতে হলে স্থানীয় পর্যটকদের সন্তুষ্টি আগে নিশ্চিত করতে হবে। সেবার মান বৃদ্ধিতে এই খাতের কমপ্লায়েন্সগুলো মেনে চলার কোন বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সভার মুক্ত আলোচনায়, পর্যটনকে কেন্দ্র করে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ, বিমান বন্দরের সংখ্যা বৃদ্ধি, পর্যটন কেন্দ্র সমূহে যোগাযোগ ও ট্র্যাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, ভিসা ব্যবস্থা ও টিকেট বুকিং সহজিকরণ, দক্ষ জনবল তৈরিতে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সেতুবন্ধন, অঞ্চলভিত্তিক পর্যটনের উন্নয়ন, স্যুভিনিয়র পণ্য উন্নয়ন, প্রমোশনাল কার্যক্রম জোরদার, নিরাপত্তা জোরদার, পর্যটন উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ, পর্যটন সেবায় স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, পর্যটন কেন্দ্র সমূহে পর্যাপ্ত মানি চেঞ্জার বা মানি এক্সচেঞ্জ সেবা চালু, ই-ভিসা এবং অন-অ্যারাইভাল ভিসা সহজ করাসহ বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে কমিটির সদস্যরা।