দস্তার দাম চলতি বছরের শুরুর দিক থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ শতাংশ বেড়েছে। আগামী বছরগুলোয় শিল্পোৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাতবটির চাহিদা বাড়বে। পাশাপাশি এর সরবরাহ সংকট তৈরি হওয়ার পূর্বাভাসও দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় দস্তার দাম আরো বেড়ে যেতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার অফিস অব দ্য চিফ ইকোনমিস্ট (এওসিই) জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে শিল্পোৎপাদন বাড়ায় দস্তার চাহিদা বাড়ছে। ২০২৩ সালে ধাতব পণ্যটির দাম বড় পতনের মুখে পড়েছিল। তবে ২০২৪ সালে এর দাম টনপ্রতি প্রায় ২ হাজার ৭০০ ডলারে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, যা ২০২৬ সালের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৮০০ ডলারে পৌঁছতে পারে।
তবে এ বছর দস্তার দাম টনপ্রতি ২ হাজার ৬০০ ডলারে পৌঁছার পূর্বাভাস দিয়েছে ফিচ সলিউশনসের অঙ্গ সংস্থা গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বিএমআই। সংস্থাটির ভাষ্যমতে, বাজারের অন্য নিয়ামক শক্তিগুলো ধাতুটির দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায়, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত দস্তার গড় দাম ২ হাজার ৬৮১ ডলার রয়েছে। পূর্বাভাসের চেয়েও কম সরবরাহের কারণে দস্তার দাম ঊর্ধ্বমুখী।
২০২৩ সালে দস্তার দাম টনপ্রতি ৩ হাজার ৪০০ ডলারে পৌঁছেছিল। ওই বছর দস্তার বাজারে বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। দস্তা পরিশোধন সক্ষমতা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। এতে দস্তার শেয়ারদরও কমে যায়। তবে ক্রমান্বয়ে বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। চলতি বছরের মে মাসে দস্তার গড় উৎপাদন ২ লাখ ৫০ হাজার টনে দাঁড়ায়।
অর্থনীতিবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইএনজি থিংক বলেছে, ১২ জুলাই পর্যন্ত সপ্তাহের ব্যবধানে দস্তার শেয়ারদর কমেছে দশমিক ৬ শতাংশ। বর্তমানে লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে তৃতীয় মাসে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন দস্তা ২ হাজার ৮৭০ ডলারে লেনদেন হয়েছে।
এর আগে এপ্রিলে বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি আউটলুকে বলা হয়েছিল, ২০২৪ সালে দস্তার দাম ৬ শতাংশ কমতে পারে। এতে বলা হয়, চীনসহ প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর শিল্পোৎপাদন কমে যাওয়ায় ধাতবটির চাহিদা কমতে পারে। ফলে এর দাম কমে যেতে পারে। যদিও বাস্তবে এর বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে।
আইএনজি থিংক বলছে, চীনে পরিশোধিত দস্তা উৎপাদন জুনে আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টনে উন্নীত হয়েছে। চলতি মাসে পরিশোধন কেন্দ্রগুলোয় নিয়মিত সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া কাঁচামাল ঘাটতির কারণে দেশটিতে উৎপাদন কমে ৫ লাখ ৭ হাজার টনে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে দাম আরো বেড়ে যেতে পারে। সূত্র: দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।