মেয়াদি শিল্পঋণ ও গৃহনির্মাণ ঋণের কিস্তি আদায় নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকঋণের সুদহার নতুন পদ্ধতিতে হিসাব করার কারণে ঋণের কিস্তির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া গ্রাহকদের জন্য সমস্যাজনক হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ঋণের কিস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি না করে মেয়াদ পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি বিবেচনার আবশ্যকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিপত্রে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে স্মার্ট ও বাজারভিত্তিক সুদহার উভয় ক্ষেত্রে ১ জুলাই ২০২৩-এর আগে নির্ধারিত সুদহারের চেয়ে বেশি হওয়ায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো এবং ব্যক্তিপর্যায়ে গৃহনির্মাণ ঋণগ্রহীতাদের প্রদেয় কিস্তির পরিমাণ বেড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে গ্রাহকেরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। শিল্পায়ন ও রপ্তানির গতিধারা অক্ষুণ্ন রাখা এবং সীমিত আয়ের ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা বজায় রাখতে বিদ্যমান মেয়াদি শিল্পঋণ ও গৃহনির্মাণ ঋণের কিস্তির পরিমাণ না বাড়িয়ে মেয়াদ পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি বিবেচনার আবশ্যকতা আছে বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ পরিস্থিতিতে গত ১ জুলাই ২০২৩ তারিখের আগে বিতরণ করা মেয়াদি শিল্পঋণ এবং ভোক্তাঋণের আওতায় দেওয়া গৃহঋণের কিস্তি আদায়ের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কিস্তি আদায়ে প্রয়োজনীয় মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে। এ ধরনের আদায়ের ক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলে তা বিআরপিডি সার্কুলার নম্বর ১৬ / ২০২২-এর আওতায় ঋণ পুনর্গঠন হিসেবে বিবেচিত হবে না।
বেতনভোগী চাকরিজীবীদের বেতনের বিপরীতে গৃহীত ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহকের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের সময়সীমার মধ্যে ব্যাংক নিজস্ব বিবেচনায় অর্থ পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এ ছাড়া ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখে অশ্রেণিকৃত ছিল, এমন ঋণ এই সুবিধার আওতায় আসবে। রূপান্তরিত মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
পরিপত্রে কোন কোন ঋণ এই সুবিধার আওতায় আসবে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার কর্তৃক প্রণীত বা গঠিত প্রণোদনা প্যাকেজ বা বিশেষ তহবিলের আওতায় দেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না।
এসব সুবিধা পাওয়ার যোগ্য সব ঋণগ্রহীতাকে এ বিষয়ে অবহিত করতে হবে। কোনো ঋণগ্রহীতা এই সুবিধা নিতে চাইলে লিখিত আবেদন করতে হবে; আবেদন পাওয়া সাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়া যাবে।
এর আগে ঋণের সুদহার সম্পূর্ণরূপে বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে ব্যাংকিং খাতে ঋণের চাহিদা ও ঋণযোগ্য তহবিলের জোগান সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারণে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।