জাঁকজমক আর শানশওকতের শহর সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই। বিলাসবহুল সব আবাসিক খাতের জন্য এ শহরের আলাদা পরিচিতি রয়েছে। বলা যায় বিশ্বের আবাসন খাতের এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় কেন্দ্র হচ্ছে দুবাই। শহরটিতে ক্রমেই বাড়ছে বিলাসবহুল আবাসনের চাহিদা।
ক্রমবর্ধমান চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখেই আগামী পাঁচ বছরে দুবাইয়ের বিলাসবহুল ডেভেলপার ওমনিয়াত বিনিয়োগ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। দুবাইয়ের অন্যতম শীর্ষ কোম্পানিটি আশা করছে, আগামী পাঁচ বছরে তাদের সম্পত্তি পোর্টফোলিও ১০০ বিলিয়ন দিরহাম তথা ২৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।
ওমনিয়াতের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মাহদি আমজাদ এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি আগামী ৫-১০ বছরের অতি বিলাসবহুল আবাসনের চাহিদা ব্যাপক আকারে বাড়বে। গত দুই বছরে পরিসংখ্যানে বিষয়টি নিয়ে আমি মোটামুটি নিশ্চিত।’
কভিড-১৯ আঘাত হানার পর দুবাইয়ের আবাসন খাতে ধস নামে। গত দুই বছরে সে অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠছে খাতটি। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে এ অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলেও বিলাসবহুল এবং অতি বিলাসবহুল আবাসনের চাহিদা বৃদ্ধি রেকর্ড গড়েছে।
২০২৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসে বিলাসবহুল ও অতি বিলাসবহুল ৯৪৮টি সম্পত্তি বিক্রি হয়েছে দুবাইয়ে। যার প্রতিটির গড় মূল্য ১৫ মিলিয়ন দিরহামেরও বেশি। এ উচ্চ মূল্যের সম্পত্তিগুলো মূলত বিক্রি হয়েছে পাম জুমেইরাহ, মোহাম্মদ বিন রশিদ সিটি, দুবাই ওয়াটার ক্যানেল, তিলাল আল গাফ ও দুবাই হিলস এস্টেটের মতো অভিজাত এলাকায়।
২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ওমনিয়াত মে মাসে তাদের সর্বশেষ প্রকল্প দ্য লানা রেসিডেন্সের একটি পেন্টহাউজ বিক্রি করেছে ১৩৯ মিলিয়ন দিরহামে। এরই মধ্যে নতুন দুটি অতি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।
নতুন বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প আনছে দুবাইয়ের সবচেয়ে বড় আবাসন কোম্পানি ইমার প্রোপার্টিজও। ফেব্রুয়ারিতে দুটি নতুন বিলাসবহুল প্রকল্প ঘোষণা করেছে তারা। এগুলো হলো দ্য হাইটস কান্ট্রি ক্লাব ও গ্র্যান্ড ক্লাব রিসোর্ট, যার সম্মিলিত মূল্য ৯৬ বিলিয়ন দিরহাম।
দুবাইয়ে আরেক জায়ান্ট ডেভেলপার কোম্পানি আরাদা তাদের বিলাসবহুল আবাসন বিক্রি শুরু করেছে। যেগুলোর অবস্থান পাম জুমেইরার আরমানি বিচ রেসিডেন্সে। যেখানে পাঁচ বেডরুমের ইউনিটের দাম ৬০ মিলিয়ন দিরহাম থেকে শুরু।
বিশ্বের উঠতি ধনীদের আকৃষ্ট করার জন্য আমিরাত সরকারের বিভিন্ন নীতিও আবাসন কোম্পানিগুলোকে ব্যাপকভাবে সহায়তা করছে।
আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অভিবাসন উপদেষ্টা সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, এ বছরের শেষ নাগাদ রেকর্ড ৬ হাজার ৭০০ মিলিয়নেয়ার সংযুক্ত আরব আমিরাতকে সেকেন্ড হোম বানাবেন, যা টানা তিন বছর আমিরাতকে ধনীদের জন্য বিশ্বের শীর্ষ গন্তব্যে পরিণত করেছে। সূত্র: দ্য ন্যাশনাল নিউজ