চীনে চলতি মাসে চাহিদা কমে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণে ইস্পাতের দাম কমে যেতে পারে। ফলে দেশটিতে ইস্পাতের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারেন ব্যবসায়ীরা। ধাতবপণ্যের বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান মাইস্টিলের প্রধান বিশ্লেষক ওয়াং জিনহুয়া এ পূর্বাভাস দিয়েছেন।
তবে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার শিগগিরই অর্থনৈতিক প্রণোদনা ঘোষণা করতে পারে। এ আশাবাদ সামনে রেখে বাজারে কিছুটা ভালো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এর আগে জুনে চীনে ইস্পাতের চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে যায়। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক সময় দেশটিতে ধাতবপণ্যটির উৎপাদন কমে যায়। তবে জুলাইয়ের শুরুতে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া সত্ত্বেও ইস্পাতের ব্যবহার বাড়েনি।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, জুলাইয়ে চীনের কারখানাগুলোয় ইস্পাতের উৎপাদন কমে যেতে পারে। এতে কোম্পানিগুলো খুব সীমিত আকারে মুনাফা অর্জন করতে পারবে। ফলে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া বা কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগানও ব্যাহত হতে পারে।
পিপলস ব্যাংক অব চায়নার পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে মে মাসে অর্থের সরবরাহ ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সরবরাহ কমেছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। একই সঙ্গে মে মাস শেষে চীনা বড় কোম্পানিগুলোর প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ ২৪ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি।
ওয়াং জিনহুয়া বলছেন, জুলাইয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে তাদের ব্যবসা অব্যাহত কিংবা সম্প্রসারণ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই। উপরন্তু ইস্পাতের চাহিদা কমে গেছে। একই সময়ে চীনের স্থানীয় বাজারে ইস্পাতজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ার কারণে ধাতবপণ্যটির দামের ওপর প্রভাব পড়বে। ফলে বিক্রি থেকে ক্ষতি কমাতে চীনা ইস্পাত উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশটির শাসক দল চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকের নির্দেশনা স্টিল বাজারের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে না। তবে বৈঠককে সামনে রেখে স্টিলের দামের ব্যাপারে ভালো খবর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে কিছুটা আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে।
চীনা সরকার চলতি বছরের দ্বিতীয় অর্ধে কার্বন নিঃসরণ কমাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ইস্পাতের উৎপাদন কমিয়ে আনতে নীতিমালা প্রণয়ন করা হতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ নীতির ওপর নির্ভর করছে দেশটির ইস্পাতের দাম।
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে চীনের ইস্পাত উৎপাদন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল। এ সময় দেশটিতে ৪৩ কোটি ৮৬ লাখ ১০ হাজার টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল। মে মাসে এ পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ এবং আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার টনে উন্নীত হয়। সূত্র: জিএমকে সেন্টার।