ধাতব পণ্য ব্যবহারের দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষ দেশ চীন। তবে দেশটিতে অবকাঠামো নির্মাণ কমে যাওয়ায় সম্প্রতি ইস্পাতসহ অন্যান্য ধাতব পণ্যের চাহিদা কমে এসেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা কম থাকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি বাড়িয়েছে দেশটির ইস্পাত উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। এ কারণে বিশ্ববাজারে রফতানীকৃত ইস্পাতে চীনের হিস্যা বেড়েছে। রফতানি বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে কমে এসেছে ধাতব পণ্যটির দাম।
চীন চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মোট ৫ কোটি ৩০ লাখ টন ইস্পাত রফতানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। সূত্র জানায়, উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর কাছে এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ টন ইস্পাত মজুদ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা কম থাকায় দেশটি থেকে মূলত রফতানি বাড়ানো হয়েছে।
ইস্পাত কোম্পানিগুলোর দেয়া তথ্যমতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে ২০২১-২২ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত হট-রোল্ড স্টিল কয়েলের দাম ছিল টনপ্রতি ৭০০-৯০০ ডলার। সম্প্রতি চীনের রফতানি বাড়ায় তা কমে টনপ্রতি ৫১০-৫২০ ডলারে নেমে এসেছে। অন্যদিকে শিকাগো মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জেও নিকটতম সময়ে সরবরাহের জন্য হট-রোল্ড স্টিল কয়েলের পূর্ববতী দাম ১ হাজার থেকে ৬০০ ডলারে নেমে এসেছে।
এদিকে চীনের রফতানি বাড়ার কারণে দাম কমে যাওয়ায় জাপানের ইস্পাত উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর আয় নিম্নমুখী হয়েছে। মে মাসে দেশটির নিপ্পন স্টিল এক আয় বিবরণীতে জানায়, চীনের রফতানি বৃদ্ধির কারণে বিদেশী বাজারে ইস্পাতের দাম কমেছে।
জাপানে চলতি অর্থবছরের ব্যবসায়িক মুনাফা গত বছরের তুলনায় ৯ হাজার কোটি ইয়েন (৫৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার) কম হতে পারে।
এদিকে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, অপরিশোধিত ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন চলতি বছরের প্রথমার্ধে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় স্থিতিশীল ছিল। ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের প্রথমার্ধে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯৫ কোটি ৪৬ লাখ টন। তবে এ সময় বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ চীনের উৎপাদন কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত দেশটি মোট ৫৩ কোটি ৬ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ কম।
অন্যদিকে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ভারতের ইস্পাত উৎপাদন ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৭ কোটি ৪২ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। একই সময় জাপানে উৎপাদন কমেছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ। উৎপাদন নেমেছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টনে। যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে চার কোটি টনে নেমে এসেছে। সূত্র: নিক্কেই এশিয়া।