আবাসন খাতে বিনিয়োগ করাকে অত্যন্ত লাভজনক বলে মনে করেন রিয়েল স্টার প্রোপারটিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সৈয়দ আব্দুলাহ শাওন।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের দিক থেকে এই ধারণার ভিন্ন মতও আছে। যেমন, স্বপ্নের নগরী রাজধানী ঢাকায় একটা ভাল লোকেশনে একটা মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট কিনতে কম করে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা লাগবে। অনেকেই মনে করেন যে, এই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট না কিনে, সে টাকাটা যদি কোন একটা ব্যাংকে এফডিয়ার করে রাখি, তাহলে সেখান থেকে যে লভ্যাংশ পাবো, সে টাকা দিয়ে তো আমি ঢাকার একটা ভাল লোকেশনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে পারি। এটা সত্য।
এ প্রসঙ্গে আবাসন খাতের এই উদ্যোক্তা বলেন, এই খাতের ব্যবসায়ী হিসেবে আমি মনে করি, আবাসন খাতে বিনিয়োগ মানে সম্পূর্ণ একটা হালাল বিনিয়োগ। এখন টাকার অংকের হিসেবে যদি আসি, তাহলে বছরে ওই ব্যক্তি ১০% লভ্যাংশ পাবেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি যদি আবাসন খাতে আসেন তাহলে এখানে জমির দাম বা ফ্ল্যাটের দামই হোক, বছরে কিন্তু ১০% এর চেয়ে বেশি করে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রিয়েল স্টার সোসাইটির এই চেয়ারম্যান বলেন, আবাসন খাতে সাধারণ ক্রেতারা ইএমআই ব্যবহার করে ফ্ল্যাট কিরতে পারছেন। সব সময় যে নগদ টাকা দিয়ে যে তাকে ফ্ল্যাট কিনতে হচ্ছে বিষয়টা তেমন না। তার তো দেড় কোটি টাকা একঙ্গে দেওয়ার দরকার নেই।
ক্রেতাদের ফ্ল্যাট কেনার বিষয়ে একটা পরামর্শ দিয়ে রিয়েল স্টার প্রোপারটিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, একজন ক্রেতা এভাবে তার দেড় কোটি টাকাকে ভাগ করে নিতে পারেন। যেমন, ফ্ল্যাটের এক কোটি টাকা ব্যাংকে রাখলেন। সেখান থেকে ক্রেতা একটা লভ্যাংশ পাবেন। বাকি যে তার ৫০ লক্ষ টাকা থাকলো সেটা দিয়ে তিনি একটা ফ্ল্যাট বুক করতে পারেন। ফ্ল্যাট বুকিংয়ের দুই বছর পরে হয়তো তিনি ফ্ল্যাটটা বুঝে পাবেন। বাকি যে ব্যাংকে টাকা থাকল সেখান থেকে ক্রেতা ইএমআইয়ের টাকা দিলেন। এ প্রক্রিয়ায় একজন ক্রেতা দুই বছরের মধ্যে একটা ফ্ল্যাটের মালিক হতে পারছেন।
সৈয়দ আব্দুলাহ শাওন বলেন, অন্যদিকে কোন ক্রেতা যদি ভাড়া বাসায় থেকে ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন তাহেলে প্রতি বছর কিন্তু একটা ফ্ল্যাকচুয়েশন হচ্ছে। একদিকে ব্যাংক থেকে ১০% লভ্যাংশ দিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ৬-৭% ফ্ল্যাকচুয়েশন হচ্ছে। সব মিলে তিনি ৩% লাভ করছেন। ওই ক্রেতা যদি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বা নিজের টাকায় একটা ফ্ল্যাট কিনে, তাহলে সেটার সব টাকা পরিশোধ হতে ১৫-২০ বছর লেগে যাবে। এরপর তিনি ফ্ল্যাটের মালিক হয়ে যাবেন। কিন্তু ১৫ বছর ধরে যদি ভাড়া বাসায় থাকেন, ব্যাংকে যে টাকাটা আছে, সে টাকাটা ফ্ল্যাকচুয়েশন হয়ে ১৫ বছর পরে কিন্তু ১৫ বছরের আগের মূল্য পাবেন না।
স্টার অ্যাগ্রর এই ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, অন্যদিকে, আপনি যদি এখন কেউ ফ্ল্যাট কেনার চেষ্টা করেন তাহলে ১৫ বছর পর তিনি ওই ফ্ল্যাটের মালিক হয়ে যাবেন। আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭০-৭২ বছর। একজন ক্রেতা ৩০-৩৫ বছর বয়সে যদি ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা করেন, আর আল্লাহ যদি বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে একটা ফ্ল্যাটের মালিক হয়ে যাবেন। গড় আয়ু হিসেব করলে তিনি আরও ২০-২২ বছর ফ্ল্যাটটা ভোগ করতে পারবেন। তার যে ছেলে-মেয়ে, তারপরের প্রজন্মের জন্যও একটা ফ্ল্যাট রেখে যেতে পারছেন। শুধু তাই নয়, তার যদি কোন বিপদ-আপদ হয়, তাহলে যেকোন সময় ফ্ল্যাটটি বিক্রি করতে পারবেন। সেটাকাটা তুলে আনতে পারবেন।
তিনি বলেন, এখানে ফ্ল্যাকচুয়েশনের ঝুঁকিটা নাই। ফ্ল্যাকচুয়েশন হয় তখন, যখন ফ্ল্যাটের দাম কমে যাওয়ার সুযোগ থাকে। এখন ফ্লাটের দাম কমে যাওয়ার সুযোগ নেই, প্রতিনিয়তই বাড়ছে। ব্যাংকে যদি টাকা রাখেন তাহলে ফ্ল্যাকচুয়েশনের কারণে ১০% লভ্যাংশ পাচ্ছেন। কিন্তু ফ্ল্যাকচুয়েশনটা যখন সমন্বয় করবেন তখন ১০% হয়ে যাবে ৩%। সুতরাং কেউ যখন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা তখন জবি বা ফ্লাট দুটিই সব সময়কার জন্য লাভজনক বিনিয়োগ।