অর্থ ও বাণিজ্য
বাড়ি কেনার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে আমেরিকান ৭৮ শতাংশ নাগরিকের
নিজের একটি বাড়ি থাকবে এমন আশা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মনেই বাসা বাঁধে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বেলায়ও কথাটি সত্য, যাকে কেউ কেউ বলছেন, ‘আমেরিকান ড্রিম’।
তবে ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বাড়ি কেনার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটির একটি উল্লখযোগ্যসংখ্যক নাগরিকের। কনজিউমার ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কোম্পানি ব্যাংকরেটের এক গবেষণায় সম্প্রতি এমন তথ্য উঠে এসেছে।
মূলত জরিপের মাধ্যমে নিউইয়র্কভিত্তিক কোম্পানিটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। এর একটি হলো বাড়ি কিনতে তারা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন? উত্তরদাতাদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ জানিয়েছেন, আর্থিক বাধার কারণে বাড়ি কিনতে পারছেন না তারা।
যেসব আর্থিক বাধার কথা উত্তরদাতারা উল্লেখ করেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার এসেছে অপর্যাপ্ত আয়। ৫৬ শতাংশ উত্তরদাতাই জানিয়েছেন, কম আয়ের কারণে তারা বাড়ি কিনতে পারছেন না। ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা বাড়ির দাম বেশি হওয়াকে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। এছাড়া ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা ডাউন পেমেন্ট ও ঋণজনিত ফি বহনে অক্ষমতাকে বাড়ি না কেনার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন।
মার্কিন নাগরিকদের বাড়ির স্বপ্নপূরণের বিপরীতে হাউজিং মার্কেটের মর্টগেজ সুদহার বৃদ্ধিকে সামনে আনেন ডিএফডব্লিউর হাউজিং অ্যান্ড ম্যাক্রো ইকোনমি বিশ্লেষক অ্যামি নিক্সন। তার মতে, একটি বাড়ির মালিকানা দীর্ঘকাল ধরে আমেরিকানদের কাছে স্বপ্নের প্রধান স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাড়ির মালিকদের বড় অংশ বলছেন, মর্টগেজ রেটের কারণে তারা এ স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন না।
রিয়েল এস্টেট ব্রোকারেজ রেডফিনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছর প্রথমবারের মতো মর্টগেজ সুদহার ৭ শতাংশে উঠে এসেছে। এমন উচ্চ মর্টগেজ রেট ও বাড়ির উচ্চ মূল্য মধ্যম মানের মাসিক হাউজিং পেমেন্টকে ২ হাজার ৭৭৫ ডলারের নতুন রেকর্ডে ঠেলে দিয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।
এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে করকোরান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা বারবারা করকোরান আবাসন খাতের বাজারে দেখা দেয়া সাম্প্রতিক প্রবণতা ও চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি মনে করেন, উচ্চ খরচ অনেক আমেরিকানকে বাড়ির মালিকানা অর্জনের সীমার নাগালের বাইরে ঠেলে দিয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরে খাতটির বাজারে একধরনের স্থবির অবস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে অনেক ক্রেতা ও বিক্রেতা তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ার অপেক্ষা করছেন।
ব্যাংকরেটের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১০ জনের মধ্যে প্রায় সাতজন আমেরিকান বলেছেন যে তারা সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন খোঁজার জন্য অন্তত একটি পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক। ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা তাদের থাকার জায়গা সংকুচিত করতে চান। একই সময় ৩৪ শতাংশ বলেছেন, তারা হয় রাজ্যের বাইরে চলে যাবেন কিংবা ফিক্সার-আপার কিনবেন। ২৬ শতাংশ বলেছেন, তারা প্রিয়জনদের থেকে দূরে সরে যেতে ইচ্ছুক। ২৪ শতাংশ বলেছেন, তারা রুমমেট নেয়া বা পরিবারের অতিরিক্ত সদস্যদের সঙ্গে বসবাস করার কথা বিবেচনা করছেন। উত্তরদাতাদের ২০ শতাংশ বলেছেন, তারা কম পছন্দসই এলাকায় যেতে পারেন আর ১৭ শতাংশ বলেছেন, তারা কাজ থেকে দূরে সরে যেতে চান।
ব্যাংকরেটের প্রধান আর্থিক বিশ্লেষক গ্রেগ ম্যাকব্রাইড বলেছেন, ‘একটি বাড়ির মালিকানা এখনো আমেরিকান স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু, কিন্তু ক্রয়ক্ষমতাই এটিকে বাস্তবে পরিণত করার প্রধান বাধা। বাড়ির দাম, ভাড়া ও বীমা খরচের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থান সংকোচনের ফলে খরচের আনুপাতিক আকার হ্রাস নাও হতে পারে।’ সূত্র: বণিক বার্তা, ফক্স বিজনেস।
অর্থ ও বাণিজ্য
দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট জগতে সফল বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: এক দশকেরও কম সময়ে কঠোর পরিশ্রম, সততা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মাত্র ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির। নান্দনিক শহর দুবাইয়ের অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক আবাসন (রিয়েল এস্টেট) খাতে তিনি শুধু নিজের অবস্থানই তৈরি করেননি, প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম এমজে প্রপার্টিজ (MJ Properties)।
এমজে প্রপার্টিজ আকিবের নেতৃত্বে অল্প সময়েই দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় এক উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছে। এই সাফল্যের মূল কারণ হলো গ্রাহকদের প্রতি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে মেধাবী তরুণ-তরুণীদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাদের লক্ষ্য দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা।
আকিবের অঙ্গীকার: “সততা ও ন্যায়ের মাধ্যমে এমজে প্রপার্টিজকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেন এই প্রতিষ্ঠান দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে।”
একসময় আকিবের স্বপ্ন ছিল স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েই তিনি এখন এমজে প্রপার্টিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (Founder & CEO)। তার কর্মজীবনের শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে—হজ, ওমরাহ ও টিকেটিং-এর কাজের মাধ্যমে। সেখানেই সততা ও কঠোর পরিশ্রমের হাত ধরে একজন সফল উদ্যোক্তা ও প্রকল্প উদ্ভাবক হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে ওঠে।
উদ্যোক্তা হিসেবে আকিবের বিশেষ গুণ হলো *বিনিয়োগের সঠিক ক্ষেত্র নির্ধারণ* করে ক্লায়েন্টদের জন্য *সর্বোচ্চ মুনাফা ও নিরাপদ রিটার্ন* নিশ্চিত করা। তিনি দুবাইয়ের আধুনিক স্থাপত্য ও সমৃদ্ধ জীবনযাত্রার মান বজায় রেখে নির্মিত উন্নতমানের আবাসন প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য ক্লায়েন্টদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আকিবকে। ছাত্রাবস্থায়, ২০১৪ সালে বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের, বিশেষত মায়ের, দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত থাকাকালে করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়িক ধস নামলে উন্নত জীবনের আশায় তিনি দুবাই পাড়ি জমান।
বর্তমানে তিনি রিয়েল এস্টেট ছাড়াও আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার পুরো পরিবার নিয়ে দুবাইতেই বসবাস করছেন। সততা, কঠোর পরিশ্রম আর স্বপ্ন পূরণের অদম্য স্পৃহা আকিব মুনিরকে আজ তরুণ প্রজন্মের কাছে একজন আদর্শ রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আকিবের বাবা ছিলেন খুলনার বিশিষ্ট সাংবাদিক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং খুলনার সুপরিচিত একটি পত্রিকার সম্পাদক—এডভোকেট কামরুল মুনির। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন খুলনার শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদের একজন। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের ভার নেমে আসে তরুণ আকিবের কাঁধে।
বাবার মৃত্যুর শোক সামলেই তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি দিয়ে। সেখানেই ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক জগতে তাঁর হাতেখড়ি।
তবে ভাগ্যের পরিক্রমায় আসে করোনাকালীন সংকট। বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক ধস নেমে আসে, বন্ধ হয়ে যায় ট্রাভেল খাতের কার্যক্রমও। জীবনের কঠিন সময়ে হাল না ছেড়ে আকিব নতুন করে স্বপ্ন দেখেন—উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা
দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
-
বিবিধ2 years agoবাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন2 years agoরিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ3 months agoরাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আইন-কানুন3 months agoদলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়
-
আইন-কানুন2 years agoরিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ3 months agoসীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ12 months agoবন্ধ হচ্ছে অবৈধ আবাসন প্রকল্প
-
বিবিধ2 years agoফ্ল্যাট বা অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা
