অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়াকে বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
সংগঠনটির মতে, প্রস্তাবিত বাজেটের এ সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে বিনিয়োগ আসবে, রাজস্ব বাড়বে সরকারের।
ররিবার (৯ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫’ সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি লায়ন এম এ আউয়াল, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ এবং সহ-সভাপতি (অর্থ) আব্দুর রাজ্জাক।
রিহ্যাব সভাপতি বলেন, জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের আগে রিহ্যাব থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সরকারের কাছে বাজেট সংক্রান্ত দাবি তুলে ধরা হয়। এসব দাবি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বৈঠক হয়েছে। গণমাধ্যমে আমাদের দাবি এবং প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযাগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। দুই হজার কোটি টাকার রাজস্ব পেয়েছে সরকার। প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখায় আমরা প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। বিনাপ্রশ্নে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
ওয়াহিদুজ্জামান আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। আমরা রিয়েল এস্টেট খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের পদ্ধতি পরিবর্তনের অনুরোধ করবো। বর্তমানে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় অত্যাধিক।
তিনি বলেন, এর মধ্যে গেইন ট্যাক্স ৮ শতাংশ, স্ট্যাম্প ফি দেড় শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি এক শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ, এমআইটি ৫ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর সাড়ে ৪ শতাংশ মিলিয়ে মোট ২২ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন খরচ। এর সঙ্গে যদি করপোরেট ট্যাক্স যোগ করা হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশনের খরচ হয় ৩০ শতাংশ। এই রেজিস্ট্রেশন খরচ সব মিলিয়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এর আগেও রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোর প্রস্তাব দিয়েছি আমরা।
রিহ্যাব সভাপতি আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কম হলে ক্রেতারা জমির সঠিক মূল্য দেখাতে উৎসাহিত হবেন। ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ তৈরি হওয়া স্বাভাবিকভাবে কমে আসবে। দেশের অর্থনীতিতে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থ রয়েছে, সে জন্য অনেকাংশে দায়ী এই বড় অংকের নিবন্ধন ব্যয়। এই রেজিস্ট্রেশন ব্যয় সার্কভুক্ত দেশ এমনকি বিশ্বের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি, যা আমরা আগেও বলেছি। উচ্চ নিবন্ধন ব্যয়ের কারণে অনেকে নিবন্ধন ছাড়াই ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। যা পরে আইনি সমস্যা তৈরি করবে। আমাদের দাবি রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) ব্যয় কমানো হোক। নিবন্ধন ব্যয় কমালে রাজস্ব আয় কমবে না, বরং আরও বাড়বে।