Connect with us
<

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

নতুন আইনে দলিল যার, জমি তার

আমি একজন কর্মজীবী নারী। জানার বিষয় ছিল, ভাড়াটে কি জমি দখল করে নিতে পারে? আমাদের বাড়িতে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ভাড়া থাকেন। তাঁকে এ মুহূর্তে তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় আছি। উল্লেখ্য, বাড়ির মালিক আমার মা। জমি ও বাড়িসংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র আমাদের কাছেই আছে।
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক

আপনার মা জমির মালিক এবং তাঁর কাছে জমি ও বাড়িসংক্রান্ত সব কাগজ আছে। এটা আপনি বলেছেন। কিন্তু আপনার মা কি ওই বাড়িতেই থাকেন বা তাঁর দখলে ওই বাড়ি আছে কি না, সেটি বলেননি। ভাড়াটে কত দিন ধরে ভাড়া থাকেন, তা-ও বলেননি। যদি ভাড়াটে কোনো বাড়িতে ১২ বছরের বেশি সময় থাকেন, মালিক সেই বাড়ির দখল না রাখেন এবং ওই বাড়ির কোনো দেখভালও না করেন, তাহলে যাঁকে থাকতে দেওয়া হয়েছে, তিনি সেই বাড়ি দখলের চেষ্টা করতে পারেন। বিদ্যমান দখলিস্বত্ব আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পদ ১২ বছর নিজের দখলে রাখতে পারলেই তার মালিকানা দাবি করা যায়। কিন্তু আইনটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী, জমির মালিকানা নির্ধারিত হবে দলিলের ভিত্তিতে; অর্থাৎ যাঁর নামে দলিল থাকবে, তিনিই হবেন ওই ভূমির মালিক। নতুন ভূমি আইনে দখলের মাধ্যমে মালিকানার সুযোগ থাকছে না। জমি ও কাগজ যাঁর, মালিকানাস্বত্বও তাঁর। কাজেই আপনার মায়ের জমি কেউ দখল করতে পারবে না। নিশ্চিন্ত থাকুন।

এবার আসি, আপনি যে ভয় পাচ্ছেন, ভাড়াটে প্রভাবশালী বিধায় তাঁকে তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এ প্রসঙ্গে। আইন অনুযায়ী, এ দেশে কেউ কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কাজেই আপনার মা তাঁর ভাড়াটেকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে জানা দরকার ছিল যে ভাড়া দেওয়ার সময় আপনার মা কি কোনো লিখিত চুক্তি করেছিলেন? আপনার প্রশ্নে তার কোনো উল্লেখ নেই। যদি লিখিত চুক্তি থেকে থাকে, তাহলে আপনার মা সেই অনুযায়ী তাঁর ভাড়াটেকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিতে পারেন।

আইন অনুযায়ী বাড়ির মালিক ও ভাড়াটের মধ্যে একটি চুক্তিনামা সই করতে হবে। যদিও এই চুক্তিনামা সইয়ের বিষয়টি অধিকাংশই এড়িয়ে চলেন। চুক্তিনামায় ভাড়ার মেয়াদ, বাড়ির মালিক ও ভাড়াটের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ভাড়ার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ থাকবে। বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল ইত্যাদি কে পরিশোধ করবেন, তা স্পষ্ট উল্লেখ করা থাকবে। জামানত থাকলে তা কবে ফেরত দেওয়া হবে, ভাড়ার সঙ্গে সমন্বয় করে কাটা হবে কি না, এসবও পরিষ্কার করে উল্লেখ থাকবে। এসব চুক্তির লিখিত দলিল হিসেবে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করতে হবে।

আপনার মা তাঁর নিজ প্রয়োজনে ভাড়াটেকে চুক্তি অনুযায়ী ১, ২ বা ৩ মাস যা-ই থাকুক, সেই সময়ের মধ্যে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিতে পারেন। লিখিত চুক্তি যদি না থাকে, তাহলে মৌখিক চুক্তি অনুযায়ীও নোটিশ দিতে পারেন।

Advertisement

বাড়িওয়ালা হিসেবে আপনার মা তাঁর নিজের প্রয়োজন ছাড়াও বেশ কিছু কারণে ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করতে পারেন। তা হলো, ভাড়ার সময়সীমা নির্ধারিত থাকলে, আপনার অনুমতি ছাড়া বাড়ির নকশা পরিবর্তন করলে কিংবা ভাড়াটে-স্বত্ব অন্য লোকের কাছে হস্তান্তর করলে অথবা সাবলেট দিলে, ভাড়া বাকি থাকলে, কোনো উৎপাত বা ক্ষতিকর কাজ করলে।

মেয়াদ শেষে বা নোটিশ পাওয়ার পর ভাড়াটে যদি বাড়ির দখল না ছাড়েন, তাহলে আপনার মাকে অবশ্যই আইনের আশ্রয় নিতে হবে। এ সম্পর্কে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৬ ধারায় বাড়ির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাড়াটের ব্যর্থতাকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ভাড়াটে যদি বাড়ির দখল না ছাড়েন, তাহলে বাড়িওয়ালার অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত তাঁকে ভাড়ার ১০ গুণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করবেন। ভাড়াটের কোনো অধিকার নেই মেয়াদ শেষে বা নোটিশপ্রাপ্তির পর বাড়ি দখল করে রাখার, তা তিনি যতই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হোন না কেন।

তিন বছর খাজনা না দিলে জমি হবে খাসতিন বছর খাজনা না দিলে জমি হবে খাস
মেয়াদ শেষে দখল বুঝিয়ে না দিলে বাড়িওয়ালা হিসেবে আপনার মায়ের উচিত হবে কালবিলম্ব না করে ঘরভাড়া নিয়ন্ত্রকের কাছে অভিযোগ করা। ঘরভাড়া নিয়ন্ত্রক তদন্তক্রমে উল্লিখিত দণ্ডে ভাড়াটেকে দণ্ডিত করবেন।

পরামর্শ দিয়েছেন : ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

Advertisement
Continue Reading
Advertisement

আইন-কানুন

একই জমি দুইজনের কাছে বিক্রি: কে হবেন প্রকৃত মালিক?

Published

on

By

আবাসন কনটেন্ট কাউন্সিলর

একটি জমি যদি ভিন্ন সময়ে দুইজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়, তাহলে প্রকৃত মালিক কে হবেন? এ বিষয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া আনজুম স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ধরুন, একটি জমি ২০০০ সালে একজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়েছে, যার দলিল নম্বর ১২০০। পরে একই জমি ২০০৫ সালে আরেকজনের কাছে বিক্রি হয়, যার দলিল নম্বর ২০০০। দ্বিতীয় ব্যক্তি সেই জমির নামজারিও করে ফেলেছেন।”

এই পরিস্থিতিতে আইন অনুযায়ী, যিনি আগে জমিটি কিনেছেন অর্থাৎ ২০০০ সালের দলিল যাঁর নামে, তিনিই হবেন জমির প্রকৃত মালিক। যদিও দ্বিতীয় ব্যক্তি নামজারি করে ফেলেছেন, তবুও প্রথম ক্রেতা এসিল্যান্ড অফিসে ‘মিসকেস’-এর মাধ্যমে দ্বিতীয় নামজারিটি বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ব্যারিস্টার তাসমিয়া আরও জানান, “আবেদনের পর কর্তৃপক্ষ উভয় দলিল পর্যবেক্ষণ করবে। যদি দেখা যায় একটি দলিল আগে হয়েছে এবং অপরটি পরে, তাহলে প্রথম দলিলটিই বৈধ হিসেবে গণ্য হবে। ফলে দ্বিতীয় দলিল ও নামজারি উভয়ই বাতিল হয়ে যাবে।”

সুতরাং, একই জমি একাধিকবার বিক্রি হলেও—আইন অনুযায়ী যে ব্যক্তি আগে দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন, তিনিই হবেন জমির বৈধ ও প্রকৃত মালিক।

Advertisement
Continue Reading

ফিচার

প্রথম ফ্ল্যাট কিনে ঠকতে না চাইলে মেনে চলুন এই ১০ কৌশল

Published

on

By

আবাসন কনটেন্ট কাউন্সিলর

ছয় বছর আগে রাজধানীর শাহীনবাগে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কিনতে স্বল্প পরিচিত এক আবাসন প্রতিষ্ঠানে বুকিং দেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী মাজহার হোসেন। তারপর প্রতি মাসে কিস্তিও পরিশোধ করতে থাকেন। তবে কয়েক মাস যেতেই তিনি লক্ষ করলেন, প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী।

মাজহার হোসেন জানালেন, এখন ফ্ল্যাট বুঝে পাইনি। কবে পাব সেটি নিশ্চিত না। ভবনের কাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হলেও অন্যান্য কাজ বাকি। আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিক কেবল আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।

অধিকাংশ মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার নিজেদের স্থায়ী ঠিকানার জন্য একটা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের স্বপ্ন দেখে। সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ফ্ল্যাট কিনতে অনেকেই সারা জীবনের সঞ্চয় বিনিয়োগ করেন। তাঁদের কেউ কেউ মাজহার হোসেনর মতো প্রথম অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়েন। এখান থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন হয়ে পড়ে।

রাজধানীতে জমির দাম অত্যধিক। নির্মাণসামগ্রীর দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সে জন্য ফ্ল্যাটের দাম অনেক বছর ধরেই আকাশচুম্বী। তবে চাহিদা বেশি থাকায় এই খাতে ব্যবসায়ীর সংখ্যাও অনেক। তাদের অধিকাংশই নিয়মনীতি মেনে ব্যবসা করলেও কিছু প্রতিষ্ঠান সেসবের তোয়াক্কা করছে না। চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। অনেকে বুঝে, না বুঝে সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। পরে দেখেন, প্রতিষ্ঠানের কথা আর কাজে মিল নেই। তখন বছরের পর বছর ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত ফ্ল্যাট বুঝে পান না। নিজের একটি বাড়ির স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।

নিজের ফ্ল্যাটের স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্ন না হয়ে ওঠে, সে জন্য নানা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। আপনি যদি জীবনের প্রথম ফ্ল্যাট কেনার চিন্তাভাবনা করেন, তাহলে চুক্তি করার আগে ১০টি কৌশল জেনে নেওয়া উচিত। এগুলো বিবেচনা করে ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ঝামেলার মুখে পড়া থেকে আপনি রক্ষা পেতে পারেন—

Advertisement

১. সাধ আর সাধ্য
ফ্ল্যাট কেনার আগে আপনার সাধ আর সাধ্যের মধ্যকার বোঝাপড়া সম্পন্ন করতে হবে। ধরা যাক, আপনার ৮০ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট কেনার আর্থিক সক্ষমতা রয়েছে। তবে আপনি সাতপাঁচ না ভেবে গৃহঋণ নিয়ে দুই কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনে ফেললেন। কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে দেখলেন, দৈনন্দিন সংসার চালানো কঠিন। একপর্যায়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ। তখন ফ্ল্যাট বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। সে জন্য বাজেট অনুযায়ী ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।

রাজধানী ঢাকায় কমবেশি ৬০-৭০ লাখ থেকে শুরু করে ১৫-২০ কোটি টাকার ফ্ল্যাটও আছে। গুলশান-বনানী, ধানমন্ডি, বারিধারার মতো এলাকায় অভিজাত ফ্ল্যাটের দাম প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ৩৬ হাজার টাকা। আবার বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও, মিরপুরসহ কিছুটা পিছিয়ে থাকা এলাকায় প্রতি বর্গফুট ১০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। আবাসন খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ফ্ল্যাট কিনতে গেলে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। তবে এসব প্রতিষ্ঠান নিয়মনীতি মেনে ব্যবসা করে।

অভিজাত এলাকার বাইরে অন্য সব এলাকায় স্থানীয় ছোট কোম্পানির আবাসন প্রকল্প রয়েছে। তাদের ফ্ল্যাটের দাম তুলনামূলক কম। আবার কয়েকজন মিলে জমি কিনে বাড়ি বানাতে পারলে ফ্ল্যাটের দাম কম পড়ে। পুরোনো ফ্ল্যাটের দামও কম। আর্থিক সামর্থ্য না থাকলে সেটিও বিবেচনা করতে পারেন।

২. প্রয়োজন মিটবে যেখানে
অনেকেই কোথায় ফ্ল্যাট কিনবেন সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। তবে সন্তানের লেখাপড়ার বিষয়টি মাথায় রেখেই ফ্ল্যাট কেনার এলাকা বাছাই করা দরকার। আপনি যেখানে ফ্ল্যাট কিনতে চান, তার আশপাশে ভালো স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় আছে কি না, দেখে নিন। আবার ফ্ল্যাটটি যেখানে, সেখান থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার যোগাযোগব্যবস্থা কেমন, তা-ও বিবেচনা করতে হবে। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হলে অফিস কিছুটা দূরে হলেও সমস্যা হয় না। তা ছাড়া ফ্ল্যাটের আশপাশের রাস্তাঘাট, বাজারসুবিধা কেমন, সেসবও বিবেচনায় রাখা দরকার।

৩. ভবনের সুযোগ-সুবিধা
আবাসন প্রকল্পে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ এখন আর বিলাসিতা নয়, নিত্যদিনের প্রয়োজন। তাই ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, কমিউনিটি স্পেস, বাচ্চাদের খেলার জায়গা, গাড়ি পার্কিং, নিরাপত্তাব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সরবরাহের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে। তবে সবগুলো সুবিধা নিতে গেলে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে, সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।

Advertisement

৪. সঠিক প্রতিষ্ঠান বাছাই
কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনছেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ সেই প্রতিষ্ঠান যদি নিয়মকানুন না মেনে ব্যবসা করে, তাহলে আপনি বিপদে পড়বেন। সে জন্য খোঁজ নিন, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপার্টমেন্ট হস্তান্তরের অতীত ইতিহাস কেমন। প্রতিষ্ঠানটি আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সদস্যপদ আছে কি না, সেটিও যাচাই করুন। কারণ পরবর্তী ফ্ল্যাটসংক্রান্ত কোনো ঝামেলা হলে আপনি সংগঠনটির দ্বারস্থ হতে পারবেন। এ ধরনের জটিলতা নিরসনের রিহ্যাবের পৃথক কমিটিও রয়েছে। তারা নিয়মিতই এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করে। তবে কেবল নিজেদের সদস্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগই আমলে নেয় রিহ্যাব। ফলে আবাসন প্রতিষ্ঠানের রিহ্যাব সদস্যপদ থাকাটাও জরুরি।

৫. অনুমোদনহীন প্রকল্পে সতর্ক
রাজধানীতে আবাসিক, বাণিজ্যিক যেকোনো ভবনের অনুমোদন দিয়ে থাকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। অনুমোদন না নিয়ে ভবন করলে সেটি ভেঙে দিতে পারে রাজউক। সে জন্য আপনি যে আবাসন প্রকল্পের ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা করছেন, সেটি রাজউক অনুমোদিত কি না, তা যাচাই করে দেখতে হবে।

৬. জমির খোঁজও লাগবে
আপনি যে আবাসন প্রকল্পের ফ্ল্যাট কিনতে চান, সেটি যে জমিতে নির্মাণ হবে বা হচ্ছে, সেটি নিষ্কণ্টক কি না, যাচাই করতে হবে। ভূমি কার্যালয়ে গিয়ে তল্লাশি দিয়ে জমির মালিকানা ও দখলদার সম্পর্কে সব তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। অর্থাৎ যে জমির ওপর আবাসিক প্রকল্প হবে, সেটির দলিলপত্র যাচাই করে নেওয়া ভালো। জমি নিয়ে কোনো মামলা আছে কি না, সেটি দেখতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কা থাকবে।

৭. শর্তের খুঁটিনাটি জানুন
ফ্ল্যাট কেনার আগে আবাসন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির সব শর্ত ভালো করে পড়ে দেখতে হবে। চুক্তিতে সুস্পষ্টভাবে ফ্ল্যাট কেনার শর্ত, ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ, ফ্ল্যাটের অনুমোদিত নকশা, ভবনের কোন ফ্ল্যাটটি কিনছেন এবং ক্রেতা যদি উন্নত মানসম্পন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করতে চান, তাহলে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতি—এ বিষয়গুলো উল্লেখ থাকতে হবে। এ ছাড়া একেক আবাসন প্রতিষ্ঠানের ফ্ল্যাটের আয়তন একেকভাবে পরিমাপ করে। ফলে ফ্ল্যাটের মোট আয়তন ও ব্যবহারযোগ্য আয়তনের বিষয়ে পরিষ্কারভাবে আগেই বুঝে নিতে হবে। সেটি চুক্তিতে রয়েছে কি না, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গেও পরামর্শ করে নেওয়া যেতে পারে।

৮. কিস্তি নিয়ে পরিষ্কার ধারণা
ফ্ল্যাট যদি কিস্তিতে কেনা হয়, তাহলে কত কিস্তি ও কবে হস্তান্তর হবে, সেটি চুক্তিতে উল্লেখ থাকতে হবে। কোনো কারণে ফ্ল্যাট কেনা না হলে সেটি কীভাবে নিষ্পত্তি হবে, তা–ও স্পষ্টভাবে থাকতে হবে।

Advertisement

৯. কোনটি কেনা লাভজনক
রেডি বা প্রস্তুত, নির্মাণাধীন নাকি শিগগিরই নির্মাণ শুরু হবে, এমন প্রকল্পের ফ্ল্যাট কিনবেন, সেটিও চূড়ান্ত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রস্তুত ফ্ল্যাটের দাম বেশি। নির্মাণ শুরু হবে এমন ফ্ল্যাট বুঝে পেতে সময় লাগে। সে ক্ষেত্রে নির্মাণাধীন ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনাটা আপনার জন্য বেশি সুবিধাজনক। কারণ, যত দ্রুত আপনি নিজের বাসা বা ফ্ল্যাটে উঠতে পারবেন, তাতে বাসাভাড়া বাবদ খরচ কমবে। সেই টাকা দিয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধে সুবিধা হবে আপনার।

১০. ঋণ নিন বুঝেশুনে
বর্তমানে ব্যাংকগুলো একজন গ্রাহককে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত গৃহঋণ দিতে পারে। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (লিজিং কোম্পানি) আগে থেকেই গ্রাহকের চাহিদামতো ঋণ দিয়ে দেয়। আবার সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) অন্যদের চেয়ে কম সুদহারে ঋণ দেয়। ফলে ঋণ নেওয়ার আগে সুদহারের পাশাপাশি শর্তগুলো ভালো করে দেখে নিন।

Continue Reading
Advertisement
Advertisement
আবাসন সংবাদ5 hours ago

দ্বিগুণেরও বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুযোগ দিয়ে ড্যাপ সংশোধন

দ্বিগুণেরও বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুযোগ দিয়ে ড্যাপ সংশোধন, ঢাকার বাসযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সংশোধিত ড্যাপে রাজধানীকে আগের ২৭৫টি জনঘনত্ব...

আবাসন সংবাদ1 day ago

ড্যাপ সংশোধনীতে ফ্লোর ইউনিটও বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি: জেনে নিন কোন এলাকায় কত

ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) ২০২২–২০৩৫-এর চূড়ান্ত সংশোধনীতে ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ফ্লোর ইউনিটের সংখ্যাও বেড়েছে, অনেক জায়গায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। ...

আবাসন সংবাদ3 days ago

ড্যাপ সংশোধনীর প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রণীত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সংশোধনীর প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই অনুমোদনের...

আবাসন সংবাদ4 weeks ago

রিহ্যাবের আধুনিক ভবন নির্মাণে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল অফিসে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান হাজী দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সিডিএ কর্তৃক প্রস্তাবিত মাস্টারপ্ল্যান...

নির্বাচিত প্রতিবেদন1 month ago

আবাসন খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে

দেশের আবাসন খাতের অবস্থা বিভিন্ন কারণে কিছুটা নাজুক। এ খাতের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা অনুপস্থিত। এর ওপর...

Advertisement

সর্বাধিক পঠিত