অর্থ ও বাণিজ্য
হাকীমপুরী জর্দার মালিকের সর্বোচ্চ করদাতা হওয়ার গল্প
মো. কাউছ মিয়া একজন জর্দা ব্যবসায়ী। হাকীমপুরী জর্দার মালিক তিনি। তবে এখন তাঁকে সবাই চেনেন দেশের একজন শীর্ষ করদাতা হিসেবে। ২০১৫-১৬ অর্থবছর দেশের সর্বোচ্চ কর দিয়েছেন। স্বীকৃতি হিসেবে গত মাসে ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন। তার আগের অর্থবছরও ব্যক্তি পর্যায়ে সেরা করদাতা হয়েছিলেন। তার আগে কয়েক বছর ধরেই ছিলেন শীর্ষ ১০ করদাতার তালিকায়।
প্রবীণ এই ব্যবসায়ী সম্পর্কে জানতে গত বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় হাজির হই পুরান ঢাকার আগা নওয়াব দেউড়ি রোডের হাকীমপুরী জর্দার কারখানায়। মৌলভীবাজার থেকে সরু এই গলি ধরে কয়েক মিনিট হাঁটলেই এই কারখানা। ভেতরে প্রবেশ করতেই নাকে এল জর্দার ঝাঁজালো গন্ধ। নিচতলার একটি কক্ষে বসে ছয় শ্রমিক জর্দা বানাচ্ছেন। পাশের এক কক্ষ তামাক ভরা বস্তায় বোঝাই।
দোতলায় উঠে একপাশে ছোট্ট একটি কক্ষ। সেখানে আসবাব বলতে একটি ছোট খাট, দুই-তিনটি চেয়ার, একটি টেবিল আর একটি স্টিলের আলমারি। খাটটির এক পাশে বসেন কাউছ মিয়া। পাশেই একটা কোলবালিশ। বিছানার অন্য পাশে অনেক ফাইলপত্র আর পেছন দিকে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা।
জর্দা বানানোর মূল কাঁচামাল তামাকপাতা, যা কিনা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাহলে তামাক ও জর্দার ব্যবসা কেন করেন কাউছ মিয়া? প্রশ্নের জবাবটি যেন তৈরিই ছিল। ৮৬ বছর বয়স্ক মানুষটি বললেন, ‘আমি তো ৪৬ বছর ধরে জর্দা খাই। আমার শরীরে ক্যানসারের কোনো আলামত চিকিৎসকেরা খুঁজে পাননি। তারপরও বয়স হওয়ার কারণে সিঙ্গাপুরের ডাক্তার আমাকে জর্দা খেতে নিষেধ করেছিলেন। আমি তাঁকে বলেছিলাম, যে জিনিস আমি খাই না তা কীভাবে মানুষকে খাওয়াব। যেদিন আমি জর্দা খাওয়া বন্ধ করব, সেদিন এই ব্যবসাও বন্ধ করে দেব।’
দীর্ঘ আলাপচারিতায় কাউছ মিয়া তাঁর ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার গল্প শোনালেন। জানালেন, ১৯৫০ থেকে ১৯৫৭ সালের ঘটনাগুলোর কথা। ‘বাবা কোনোভাবেই চাইতেন না, আমি ব্যবসা করি। তাঁর এক কথা, জমিদার বংশের ছেলে ব্যবসা করবি কেন? তারপরও ২০ বছর বয়সে মায়ের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে চাঁদপুরের পুরান বাজারে স্টেশনারি দোকান দিলাম। সেখানে প্রসাধনসহ বিভিন্ন মুদি সামগ্রী পাইকারি বিক্রি হতো। পরের বছর দিলাম আরেকটি। ব্যবসা বাড়তে থাকল দ্রুত। কয়েক বছরের মধ্যে ওই এলাকায় ছয়টি দোকান হয়ে গেল।’
গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বরও কাউছ মিয়ার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছিল। সেদিন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে বিছানায় বসে হাকীমপুরী জর্দা দিয়েই পান খাচ্ছিলেন কাউছ মিয়া। পরিচয় দিয়ে কথা বলতে প্রথমে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। অনেকক্ষণ অনুরোধ করার পর রাজি হয়েছিলেন। এবার অবশ্য খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কাউছ মিয়ার সেই ছোট্ট কক্ষের কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ল না। কারুকাজ করা পাঞ্জাবি আর পায়জামা পরে বসেছিলেন তিনি। মুখে জর্দা দেওয়া পান তো ছিলই।
১৯৫৮ সাল থেকে কাউছ মিয়া নিয়মিত আয়কর দেন। সেরা করদাতা হিসেবে ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার তাঁকে স্বীকৃতি হিসেবে সনদ ও ক্রেস্ট দিয়েছিল। কাউছ মিয়া বললেন, ‘তখন আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। এত বড় বড় ব্যবসায়ী রেখে আমারে কেন ক্রেস্ট দিল আমার মাথাতে ধরে না। গেলাম কর অফিসে। এখন যেখানে জাতীয় সংসদ ভবন, সেখানে ছিল এই অফিস। এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলাম, আমাকে কেন দেওয়া হলো? বললেন, “ছয় বছর ধরে গোপনে খোঁজখবর নেওয়ার পরই আপনাকে নির্বাচিত করা হয়েছে”।’
১৯৩১ সালে চাঁদপুরে কাউছ মিয়ার জন্ম। ১৯৪৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নবম শ্রেণিতে ওঠেন। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে আর পড়াশোনা হয়নি। যুদ্ধের পর তাঁর বাবা স্কুলে ভর্তি করতে চাইলেও তিনি রাজি হননি। শুরুতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে ছোট করে মুদি দোকান দিলেও বাবা জোর করে ধরে নিয়ে এলেন। কিন্তু কাউছ মিয়ার মন পড়ে আছে ব্যবসায়।
সব মিলিয়ে এ রকম ১৩ বার ঘটেছে বলে দাবি করলেন কাউছ মিয়া। পরে ১৯৫০ সালে তাঁর মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাঁদপুরে শুরু করলেন ব্যবসা। পাশাপাশি ১৮ ব্র্যান্ডের সিগারেট, বিস্কুট ও সাবানের এজেন্ট ছিলেন। এর মধ্যে কয়েকটি ব্র্যান্ডের সিগারেট পূর্ব পাকিস্তানের সব জায়গায় সরবরাহ করতেন তিনি।
কাউছ মিয়া টানা ১০ বছর ছিলেন চাঁদপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। এভাবেই তাঁর ব্যবসায়ী জীবনের ২০ বছর কেটে যায়। একপর্যায়ে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব হলো। ১৯৭০ সালে ছোট ভাইকে দোকানগুলো লিখে দিলেন। বললেন, ‘নগদ আট লাখ টাকা নিয়ে চলে আসলাম নারায়ণগঞ্জে। শুরু করলাম তামাকের ব্যবসা।’
দেশ স্বাধীনের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে তামাক কিনে পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে গুদামে রাখলেন কাউছ মিয়া। বললেন, ‘সব মিলিয়ে সাড়ে তিন লাখ মণ তামাক কিনে গুদামজাত করলাম। লোকে তখন আমাকে পাগল বলতে লাগল। ১৯৭৮ সালে হঠাৎ দেখা দিল তামাকের সংকট। তখন গুদামের সব তামাক বিক্রি করে দুই-তিন শ কোটি টাকা মুনাফা করলাম।’
তামাক কেনাবেচার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে থাকার সময় শান্তিপুরী জর্দা তৈরি করে বাজারজাত শুরু করেন কাউছ মিয়া। ১৯৭৬ সালে হাকীমপুরী, শান্তিপুরী ও মানিক জর্দার ট্রেডমার্ক নেন তিনি। তবে নারায়ণগঞ্জে শুধু শান্তিপুরী জর্দাই তৈরি করতেন। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয়ে গেল কারখানা। ৮০ সালের দিকে তিনি চলে এলেন ঢাকায়।
আগা নওয়াব দেউড়ি রোডে ভাড়া করা কারখানায় তিন-চারজন শ্রমিক দিয়ে শুরু করেন জর্দা তৈরি। বর্তমানে তিন নামে আট ধরনের জর্দা তৈরি হয় তাঁর কারখানায়। শ্রমিক আছেন ৩০-৩৫ জন। প্রথমে মাসে ১০-১৫ মণ জর্দা বিক্রি হলেও এখন কয়েক গুণ হয়েছে। এখন বিক্রি কেমন জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন তিনি। বললেন, ‘জর্দার ব্যবসা ম্যানেজারই চালায়। সেই বলতে পারবে।’
কাউছ মিয়া জানালেন, তাঁর মূল ব্যবসা তামাক কেনাবেচা। রংপুরে তামাক কিনে সেখানেই বিক্রি করা হয়। একবার পণ্য আমদানির ব্যবসা করার জন্য লাইসেন্স নেন। তবে কারসাজি না করলে এ ব্যবসায় টিকতে পারবেন না জানতে পেয়ে সেটি ছিঁড়ে ফেলে দেন। নদীপথে পণ্য পরিবহনের জন্য ১৬টি কার্গো জাহাজ আছে কাউছ মিয়ার। তবে ছেলেদের মধ্যে এগুলো ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দিয়েছেন।
কী চিন্তাভাবনা থেকে এত বছর সরকারকে কর দেন, দেশপ্রেম নাকি দায়িত্ববোধ। জানতে চাইলে কাউছ মিয়া বললেন, ‘এভাবে কখনো ভাবি নাই। ১৯৫৮ সাল থেকে নিয়মিত কর দিই। স্বাধীনতার পরও সেটি অব্যাহত রেখেছি।’ তিনি বলেন, ‘কর দিলে টাকা হোয়াইট (বৈধ) হয়। আমার যা মন চায় তাই করতে পারব। কেউ হামলা করবে না। হয়তো এ জন্যই আমি সব সময় কর দিয়ে আসছি।’
অনেক ব্যবসায়ী তো কর ফাঁকি দেন। শীর্ষ করদাতা হিসেবে দেশের ব্যবসায়ীদের কী বলবেন? এই প্রশ্নের জবাবে কাউছ মিয়া বললেন, ‘বাকিদের কথা জানি না। আমার কথা বলতে পারি। ছোটবেলা থেকে আমি ফাঁকি দেওয়া শিখি নাই। মা বলেছিলেন, সৎ পথে চলবা। সৎভাবে ব্যবসা করবা। তোমার উন্নতি কেউ ঠেকাতে পারবে না। সত্যিই, আমি যে ব্যবসাতেই হাত দিয়েছি সেখানে লাভ করেছি। ঠকা খাইনি।’
কথা শেষে বিদায় নেওয়ার আগে এক কৌটা হাকীমপুরী জর্দা উপহার দিলেন কাউছ মিয়া। কৌটার গায়ে তাঁর ৪০ বছর বয়সের একটি ছবি। কৌটার দুই জায়গায় লেখা: ‘তামাক খাইলে ক্যানসার হয়’ এবং ‘তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। সূত্র: প্রথম আলো।
অর্থ ও বাণিজ্য
দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট জগতে সফল বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: এক দশকেরও কম সময়ে কঠোর পরিশ্রম, সততা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মাত্র ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির। নান্দনিক শহর দুবাইয়ের অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক আবাসন (রিয়েল এস্টেট) খাতে তিনি শুধু নিজের অবস্থানই তৈরি করেননি, প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম এমজে প্রপার্টিজ (MJ Properties)।
এমজে প্রপার্টিজ আকিবের নেতৃত্বে অল্প সময়েই দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় এক উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছে। এই সাফল্যের মূল কারণ হলো গ্রাহকদের প্রতি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে মেধাবী তরুণ-তরুণীদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাদের লক্ষ্য দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা।
আকিবের অঙ্গীকার: “সততা ও ন্যায়ের মাধ্যমে এমজে প্রপার্টিজকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেন এই প্রতিষ্ঠান দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে।”
একসময় আকিবের স্বপ্ন ছিল স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েই তিনি এখন এমজে প্রপার্টিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (Founder & CEO)। তার কর্মজীবনের শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে—হজ, ওমরাহ ও টিকেটিং-এর কাজের মাধ্যমে। সেখানেই সততা ও কঠোর পরিশ্রমের হাত ধরে একজন সফল উদ্যোক্তা ও প্রকল্প উদ্ভাবক হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে ওঠে।
উদ্যোক্তা হিসেবে আকিবের বিশেষ গুণ হলো *বিনিয়োগের সঠিক ক্ষেত্র নির্ধারণ* করে ক্লায়েন্টদের জন্য *সর্বোচ্চ মুনাফা ও নিরাপদ রিটার্ন* নিশ্চিত করা। তিনি দুবাইয়ের আধুনিক স্থাপত্য ও সমৃদ্ধ জীবনযাত্রার মান বজায় রেখে নির্মিত উন্নতমানের আবাসন প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য ক্লায়েন্টদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আকিবকে। ছাত্রাবস্থায়, ২০১৪ সালে বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের, বিশেষত মায়ের, দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত থাকাকালে করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়িক ধস নামলে উন্নত জীবনের আশায় তিনি দুবাই পাড়ি জমান।
বর্তমানে তিনি রিয়েল এস্টেট ছাড়াও আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার পুরো পরিবার নিয়ে দুবাইতেই বসবাস করছেন। সততা, কঠোর পরিশ্রম আর স্বপ্ন পূরণের অদম্য স্পৃহা আকিব মুনিরকে আজ তরুণ প্রজন্মের কাছে একজন আদর্শ রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আকিবের বাবা ছিলেন খুলনার বিশিষ্ট সাংবাদিক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং খুলনার সুপরিচিত একটি পত্রিকার সম্পাদক—এডভোকেট কামরুল মুনির। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন খুলনার শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদের একজন। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের ভার নেমে আসে তরুণ আকিবের কাঁধে।
বাবার মৃত্যুর শোক সামলেই তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি দিয়ে। সেখানেই ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক জগতে তাঁর হাতেখড়ি।
তবে ভাগ্যের পরিক্রমায় আসে করোনাকালীন সংকট। বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক ধস নেমে আসে, বন্ধ হয়ে যায় ট্রাভেল খাতের কার্যক্রমও। জীবনের কঠিন সময়ে হাল না ছেড়ে আকিব নতুন করে স্বপ্ন দেখেন—উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা
দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
-
বিবিধ2 years agoবাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন2 years agoরিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ3 months agoরাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আইন-কানুন3 months agoদলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়
-
আইন-কানুন2 years agoরিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ3 months agoসীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ11 months agoবন্ধ হচ্ছে অবৈধ আবাসন প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ3 months agoপ্রিমিয়াম হোল্ডিংয়ের বর্ষপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী একক আবাসন মেলা অনুষ্ঠিত
