অর্থ ও বাণিজ্য
আবাসন খাতে গতি ফেরাতে যেসব পরিবর্তন আনল চীন

এক সময়ে চীনের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে পরিচিতি পেলেও দেশটির আবাসন খাতের সেই রমরমা অবস্থা এখন আর নেই। গত কয়েক বছরে এ খাতে নজরদারিসহ ব্যাপক ব্যবস্থা নিয়েছে বেইজিং। তা সত্ত্বেও ২০২৩ সালের প্রথম চার মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে চীনে আবাসন খাতের আকার প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার এবং আশা করছে, এতে আবাসন খাতের গতি ফিরবে।
কভিড-১৯-এর পর চীনের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হিসেবে এসেছে আবাসন খাতের পতন। কয়েক বছরে এ খাতের একাধিক জায়ান্ট ঋণ খেলাপের পাশাপাশি অবসায়নের মুখোমুখি হয়েছে।
নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, বন্ধকির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। এছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সুদহারের পূর্বনির্ধারিত সীমা সরিয়ে নেয়া হবে।
অতিরিক্ত ঋণপ্রবাহের কারণে কয়েক বছর আগে চীন সরকার আবাসন খাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এ সময় ডজন ডজন ডেভেলপার অর্থ সংকটে পড়ে ও ঋণ খেলাপ হয়। এ পরিপ্রক্ষিতে অনেক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, আবাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হোম ফার্নিশিং, সরঞ্জাম ও নির্মাণ খাত প্রভাবিত হয়।
এ বিষয়ে চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফং জানান, প্রতিটি শহরের উপযোগী করে আলাদা নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। অসম্পূর্ণ বাণিজ্যিক আবাসনের ঝুঁকি মোকাবেলায় কর্মকর্তারা কাজ করছেন। স্থানীয় সরকারকে অবিক্রীত সম্পত্তি কিনতে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।
এর আগে হে লাইফং বলেছিলেন, স্থানীয় সরকারগুলো ‘যুক্তিসংগত মূল্যে’ সম্পত্তি কিনতে পারে। পরে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন হিসেবে এগুলো বিক্রি হবে।
এদিকে গতকাল থেকে কার্যকর হওয়া এ ঘোষণায় পিপলস ব্যাংক অব চায়না জানায়, পাঁচ বছরের কম সময়ের জন্য প্রথমবারের হাউজিং প্রভিডেন্ট ফান্ড লোনের সুদহার দশমিক ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ করা হবে। পাঁচ বছরের বেশি ঋণের ক্ষেত্রে দশমিক শতাংশীয় পয়েন্ট কমে হবে ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এছাড়া প্রথম বাড়ির জন্য ঋণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ডাউন পেমেন্ট ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ হবে। দ্বিতীয় বাড়ির ক্ষেত্রে এটি ৩০ শতাংশ থেকে হবে ২৫ শতাংশ।
আবাসন খাতসংশ্লিষ্ট সংস্থা চায়না ইনডেক্স হোল্ডিংসের ভাষ্য অনুসারে, পেমেন্ট লেভেল ও বন্ধকি সুদহার রেকর্ড কমানো থেকে বোঝা যাচ্ছে, চীনের কর্মকর্তারা আবাসনের বাজারকে স্থিতিশীল করতে বদ্ধপরিকর। এতে সম্ভাব্য ক্রেতাদের মাঝে বাড়ি কেনার আগ্রহ বাড়বে। বড় শহরে নতুন নীতিগুলো বাস্তবায়ন হলে বাজারের মনোভাব আরো উন্নত হবে।
দেশটির আবাসন ও নগর-পল্লী উন্নয়নবিষয়ক উপমন্ত্রী ডং জিয়াংগুয়ের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, আবাসন খাত এখন সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘আইনিভাবে আবাসন ক্রেতাদের বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’
গত শুক্রবার চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তারা জানান, চীনে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় ভোক্তা ব্যয় ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম অপ্রতুল। অর্থাৎ ভোক্তাদের মাঝে আস্থা ফেরেনি। তারা বলেন, জানুয়ারি-এপ্রিলে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় আবাসনের দাম ৯ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গেছে। এ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকারের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
অবশ্য সম্প্রতি চীন সরকার আবাসন কিনতে ক্রেতাদের সাহায্য করার ঘোষণা দিয়েছে। সর্বশেষ নীতিগত সহায়তায় সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার কোটি ইউয়ান বা ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার তহবিলের ঘোষণা দেয় চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী, ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসেবে গণ্য করলে এ হার তুলনামূলকভাবে ধীর। এছাড়া অর্থনীতিতে দুর্বলতার লক্ষণগুলো এখনো অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে পরিসংখ্যান সংস্থা জানিয়েছে, এপ্রিলে এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় শিল্পোৎপাদন বেড়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং কারখানার সরঞ্জামের মতো স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া খুচরা খাতে বিক্রি বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু বার্ষিক হিসেবে আবাসন খাতে বিক্রি কমেছে ২৫ শতাংশ, ফ্লোরভিত্তিক বিক্রি কমেছে ২০ শতাংশ। এ সময় আবাসন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন ২৫ শতাংশ কমেছে।
চীনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা আশা করেছিলেন চলতি বছরের শুরু থেকে দেশটিতে চাহিদা পুনরুদ্ধার হবে। এর জন্য সরকারি প্রচারণাও ছিল, যাতে পুরনো গাড়ি ও যন্ত্রপাতি বিক্রি করে মানুষ নতুন পণ্য কেনে। সূত্র: এপি।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা

দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
অর্থ ও বাণিজ্য
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক করল সরকার

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কেউ এ-সংক্রান্ত নির্দেশিকার ব্যত্যয় ঘটালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’ অনুযায়ী পরিহারযোগ্য বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন তথ্যাদি শেয়ার করছেন এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারকে বিব্রত করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন; যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চাকরিবিধির পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ। প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। অনেক ক্ষেত্রে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হানিকর এবং বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের পর্যায়ের অপরাধ। এ ধরনের বিভিন্ন ব্যত্যয়গুলো নজরে আসায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আদেশে জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’-এর সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা’, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা’ এবং ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা’ অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
-
বিবিধ2 years ago
বাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
সীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
রাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
মাত্র ২৪ ঘন্টায় খতিয়ানের ভূল সংশোধনের সরকারি নির্দেশনা
-
ফিচার4 weeks ago
প্রথম ফ্ল্যাট কিনে ঠকতে না চাইলে মেনে চলুন এই ১০ কৌশল
-
আইন-কানুন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
প্রিমিয়াম হোল্ডিংয়ের বর্ষপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী একক আবাসন মেলা অনুষ্ঠিত