অর্থ ও বাণিজ্য
অভিবাসনে বিদেশী ধনীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে দুবাই
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) করবান্ধব শহরগুলো চলতি বছর ধনী বিদেশীদের কাছে বসবাসের জন্য আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এখানে মিলিয়নেয়ারদের অভিবাসন হবে বেশি। হেনলি প্রাইভেট ওয়েলথ মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৪ অনুযায়ী, বিদেশীদের এ সংখ্যা হতে পারে ৬ হাজার ৭০০।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইউএইতে পাড়ি জমানোয় এগিয়ে থাকবেন যুক্তরাজ্য, ভারত ও আফ্রিকার কোটিপতিরা। বিশেষ করে দুবাইয়ে অভিবাসনে তাদের আগ্রহ থাকবে তুলনামূলক বেশি। মূলত গোল্ডেন ভিসা নীতি, কম কর সুবিধা, জাঁকজমকপূর্ণ জীবনধারা ও কৌশলগত অবস্থান দেশটিতে বসবাসে তাদের প্রলুব্ধ করছে।
এ নিয়ে তৃতীয় বছরের মতো বৈশ্বিক সম্পদ স্থানান্তরে শীর্ষ গন্তব্য হিসেবে প্রস্তুত হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বছরের শেষ নাগাদ রেকর্ড ৬ হাজার ৭০০ মিলিয়নেয়ার দেশটিতে থিতু হবে।
হেনলির রিপোর্ট অনুসারে, সম্প্রতি ব্রিটিশ ও অন্য ইউরোপীয়দের প্রবেশ বেড়েছে আমিরাতে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ইউরোপীয় মিলিয়নেয়ারকে আকর্ষণ করবে ইউরোপ। এছাড়া চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর হওয়া মিলিয়নেয়ারদের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৩ হাজার ৮০০।
দুবাইয়ের হুরানির প্রাইভেট ওয়েলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি অফিসের অংশীদার সুনিতা সিং-দালালের মতে, ধনীদের স্থানান্তরের পেছনে রয়েছে আরব আমিরাতের সম্পদ ব্যবস্থাপনা খাতের অভূতপূর্ব বিকাশ। পাঁচ বছরেরও কম সময়ে ইউএই শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক কাঠামো চালু করেছে। এর মাধ্যমে ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ রক্ষা, সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ সহজ হয়েছে।
মিলিয়নেয়ারদের অভিবাসনের ক্ষেত্রে ইউএই ও যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে সিঙ্গাপুর। চলতি বছরে এ নগররাষ্ট্রে ৩ হাজার ৫০০ বিদেশী থিতু হতে পারেন। এর পরই রয়েছে জনপ্রিয় দুই গন্তব্য কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। দেশ দুটি যথাক্রমে ৩ হাজার ২০০ ও ২ হাজার ৫০০ মিলিয়নেয়ার গ্রহণ করবে। শীর্ষ ১০ দেশে আরো রয়েছে ইতালি (২ হাজার ২০০), সুইজারল্যান্ড (১ হাজার ৫০০), গ্রিস (১ হাজার ২০০), পর্তুগাল (৮০০) ও জাপান (৪০০)।
একসময় জ্বালানি তেলের ওপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতি নির্ভরশীল থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বৈচিত্র্যকরণ নীতি গ্রহণ করেছে দেশটি। নীতি সুবিধার কারণে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের অবৈধ অর্থ পাচারের নিরাপদ গন্তব্য হয়ে উঠেছে ইউএই।
অভিবাসী ধনীদের কাছ থেকে নানা ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা পায় দেশগুলো। নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথের গবেষণা বিভাগের প্রধান অ্যান্ড্রু অ্যামোয়েলসের মতে, অভিবাসী মিলিয়নেয়াররা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তারা দেশে থেকে বড় অংকের অর্থ নিয়ে আসেন।
তাদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ উদ্যোক্তা ও কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা থাকেন, যারা নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যা নতুন দেশে স্থানীয়দের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে পারে। সেন্টি মিলিয়নেয়ার ও বিলিয়নেয়ার মিলিয়ে এ হার ৬০ শতাংশেরও বেশি হয়ে যায়।
এদিকে চলতি বছর মিলিয়নেয়ার হারানোর দিক থেকে এগিয়ে থাকবে চীন। দেশটি ছেড়ে যাবেন ১৫ হাজার ২০০ মিলিয়নেয়ার। এরপর ৯ হাজার ৫০০ জন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থান যুক্তরাজ্যের। সূত্র: অ্যারাবিয়ান বিজনেস।
অর্থ ও বাণিজ্য
দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট জগতে সফল বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: এক দশকেরও কম সময়ে কঠোর পরিশ্রম, সততা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মাত্র ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আকিব মুনির। নান্দনিক শহর দুবাইয়ের অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক আবাসন (রিয়েল এস্টেট) খাতে তিনি শুধু নিজের অবস্থানই তৈরি করেননি, প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম এমজে প্রপার্টিজ (MJ Properties)।
এমজে প্রপার্টিজ আকিবের নেতৃত্বে অল্প সময়েই দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় এক উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছে। এই সাফল্যের মূল কারণ হলো গ্রাহকদের প্রতি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে মেধাবী তরুণ-তরুণীদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাদের লক্ষ্য দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা।
আকিবের অঙ্গীকার: “সততা ও ন্যায়ের মাধ্যমে এমজে প্রপার্টিজকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেন এই প্রতিষ্ঠান দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে।”
একসময় আকিবের স্বপ্ন ছিল স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েই তিনি এখন এমজে প্রপার্টিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (Founder & CEO)। তার কর্মজীবনের শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে—হজ, ওমরাহ ও টিকেটিং-এর কাজের মাধ্যমে। সেখানেই সততা ও কঠোর পরিশ্রমের হাত ধরে একজন সফল উদ্যোক্তা ও প্রকল্প উদ্ভাবক হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে ওঠে।
উদ্যোক্তা হিসেবে আকিবের বিশেষ গুণ হলো *বিনিয়োগের সঠিক ক্ষেত্র নির্ধারণ* করে ক্লায়েন্টদের জন্য *সর্বোচ্চ মুনাফা ও নিরাপদ রিটার্ন* নিশ্চিত করা। তিনি দুবাইয়ের আধুনিক স্থাপত্য ও সমৃদ্ধ জীবনযাত্রার মান বজায় রেখে নির্মিত উন্নতমানের আবাসন প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য ক্লায়েন্টদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আকিবকে। ছাত্রাবস্থায়, ২০১৪ সালে বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের, বিশেষত মায়ের, দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত থাকাকালে করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়িক ধস নামলে উন্নত জীবনের আশায় তিনি দুবাই পাড়ি জমান।
বর্তমানে তিনি রিয়েল এস্টেট ছাড়াও আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার পুরো পরিবার নিয়ে দুবাইতেই বসবাস করছেন। সততা, কঠোর পরিশ্রম আর স্বপ্ন পূরণের অদম্য স্পৃহা আকিব মুনিরকে আজ তরুণ প্রজন্মের কাছে একজন আদর্শ রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আকিবের বাবা ছিলেন খুলনার বিশিষ্ট সাংবাদিক, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং খুলনার সুপরিচিত একটি পত্রিকার সম্পাদক—এডভোকেট কামরুল মুনির। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন খুলনার শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদের একজন। ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের ভার নেমে আসে তরুণ আকিবের কাঁধে।
বাবার মৃত্যুর শোক সামলেই তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। শুরুটা ছিল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি দিয়ে। সেখানেই ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক জগতে তাঁর হাতেখড়ি।
তবে ভাগ্যের পরিক্রমায় আসে করোনাকালীন সংকট। বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক ধস নেমে আসে, বন্ধ হয়ে যায় ট্রাভেল খাতের কার্যক্রমও। জীবনের কঠিন সময়ে হাল না ছেড়ে আকিব নতুন করে স্বপ্ন দেখেন—উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা
দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
-
বিবিধ2 years agoবাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন2 years agoরিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ3 months agoরাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আইন-কানুন3 months agoদলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়
-
আবাসন সংবাদ3 months agoসীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আইন-কানুন2 years agoরিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ3 months agoপ্রিমিয়াম হোল্ডিংয়ের বর্ষপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী একক আবাসন মেলা অনুষ্ঠিত
-
আবাসন সংবাদ11 months agoবন্ধ হচ্ছে অবৈধ আবাসন প্রকল্প
