বৈষম্যমূলক বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনা ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) বাতিল করার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নেতারা। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ ও মাস্টার প্ল্যান (ড্যাপ)-২০১০ বিধি অনুসারে ভবনের নকশা অনুমোদনের দাবি জানানো হয়। গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান রিহ্যাব নেতারা। রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব নেতারা দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান। এ সময় রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, সহ-সভাপতি (অর্থ) আব্দুর রাজ্জাক, প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ লাবিব বিল্লাহ্-সহ রিহ্যাব পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান। আগামী দিনে প্রধান উপদেষ্টা এবং তরুণ ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধ ও বৈষম্য মুক্ত দেশে রূপান্তরিত হবে- এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, নানা চড়াই-উৎরাই এবং সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে আবাসন খাত এগিয়ে গেলেও সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হয় ২০২২ সালের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান ড্যাপের (২০২২-২০৩৫) প্রজ্ঞাপন জারির পর। ড্যাপ পাসের পর ঢাকা শহরের উন্নয়ন একেবারেই থমকে গেছে, যার কারণে আবাসন খাতে ব্যাপক মাত্রায় স্থবিরতা নেমে এসেছে।
রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, একটি সুন্দর ও সময়োপযোগী ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ কে উপেক্ষা করে ও মাস্টার প্ল্যান-২০১০কে অন্যায়ভাবে রহিত করা হয়। এর মাধ্যমে আবাসন খাতকে কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে খুশি করতে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এ কাজ করেন। ড্যাপ প্রকাশের এক বছরের মধ্যেই তড়িঘড়ি করে কিছু সংশোধন করা হলেও আবাসন শিল্পের স্থবিরতা কাটেনি এবং জনগণের অসন্তোষ বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমান এই বৈষম্যমূলক বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০২২-২০৩৫ অনুসারে ঢাকা শহরের বেশির ভাগ এলাকায় পূর্বে ভবনের যে আয়তন পাওয়া যেত এখন তার প্রায় ৬০ শতাংশ পাওয়া যায়। ফলে ডেভেলপাররা নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করতে পারছেন না। যারা ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ি করেন তারাও প্ল্যান পাস করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ অনেক এলাকায় আগে যেখানে ৮ তলা ভবন তৈরি করতে পারতেন সেখানে পারবেন ৪ থেকে ৫ তলা। আগামী এক বছর পর থেকে সংকট আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে এবং আবাসন শিল্প একেবারে কোমায় চলে যাবে বলে শংকা তার।
রিহ্যাব প্রেসিডেন্টের প্রত্যাশা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।