আবাসন সংবাদ
বিনিয়োগ বাড়ছে বিলাসবহুল হাউজিংয়ে
১ কোটির বেশি টাকা ডিপোজিট আছে, ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে নতুন করে এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে ১৩,৮৮১ জন।
প্রতি কাঠা ২৫- ৫২ লাখ টাকার মধ্যে পূর্বাচলে হাউজিং প্লট বরাদ্দ দিচ্ছে ইউএস-বাংলা অ্যাসেটস।
এসব প্লট পাওয়া যাচ্ছে ৩ কাঠা থেকে ১ বিঘার মধ্যে। এসব প্লটের নির্ধারিত দাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে কোম্পানিটির টার্গেট উচ্চ আয়ের গ্রাহকরা। উচ্চবিত্ত গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে ২০ হাজার প্লটের এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাউজিং কোম্পানিটি।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) পাঁচ দিনব্যাপী মেলার প্রথম চারদিনেই গ্রাহকদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছে ইউএস-বাংলা, এখনি ৩৫টি বুকিং পেয়েছে কোম্পানিটি।
মেলা প্রাঙ্গনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে ইউএস-বাংলা অ্যাসেটসের সিনিয়র ম্যানেজার এমআই মঈন বলেন, গ্রাহকদের সাড়া দেখে বোঝা যাচ্ছে মানুষের হাতে টাকা আছে।
তিনি জানান, মহামারির আগে ন্যূনতম দাম ছিল ৯ লাখ, যা এখন তিনগুণ বেড়েছে। তারপরও আগের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে।
দাম বাড়ার পরও বিলাসবহুল হাউজিং প্লট আর ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়ছে। পূর্বাচলের মতো উপশহরে হাউজিং প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী মানুষ। এমআই মঈন জানান, সবুজ পরিবেশ, লেক, পার্ক, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও সুপারমার্কেটসহ বিলাসবহুল জীবন যাপনের সব উপাদানে থাকার কারণেই এই আগ্রহ।
অন্যান্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোও টার্গেটও ধনী গ্রাহকরা। পেন্টহাউজ, বিশেষ ডিজাইনের অ্যাপার্ট্মেন্ট, ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট এখন জনপ্রিয়। ঢাকার উপকণ্ঠে পূর্বাচল-উত্তরার মতো নতুন গড়ে ওঠা উপশহর এসব গ্রাহকদের প্রধান আকর্ষণ।
এছাড়া, ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় প্রথম দিকে আছে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ধানমন্ডি।
আরেকটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি রূপায়নও রিহ্যাব মেলায় উচ্চ আয়ের গ্রাহকদের জন্য অ্যাপার্ট্মেন্ট নিয়ে এসেছে।
উত্তরায় এ প্রকল্পের অ্যাপার্ট্মেন্টের আকার ন্যূনতম দুই হাজার বর্গফুট থেকে সর্বোচ্চ আট হাজার বর্গফুট। দাম প্রতি বর্গফুট ১১,৮০০ থেকে ১৭ হাজার টাকা।
রূপায়নের সহকারি ম্যানেজার বায়েজিদ হাসান বলেন, উচ্চ আয়ের গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখেই ১৪৪ বিঘা জমিতে উত্তরার এই প্রকল্প গড়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, মহামারির পর অ্যাপার্টমেন্টের দাম প্রতি বর্গফুটে ৩ হাজার বাড়লেও চাহিদা বেশি ছিল, মেলায় গ্রাহকদের সাড়াও ছিল সন্তোষজনক।
মেলায় নিজেদের নতুন হাউজিং প্রকল্প নিয়ে আসে নাভানা রিয়েল এস্টেটও। গুলশানের এ প্রকল্পের অ্যাপার্ট্মেন্টগুলোর আকার ৪-৫ হাজার বর্গফুট, প্রতি বর্গফুটের দাম কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা।
মেলায় নাভানার স্টলে কোম্পানিটির কর্মকর্তা রাশিদুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, মহামারির প্রভাব কমে আসার পর হাউজিং ব্যবসা বেশ ভালো চলছে। মানুষ নিজেদের জমানো টাকায় আবাসন খাতে বিনিয়োগ করছে।
এছাড়া, মহামারির সময় দেশে বেড়েছে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যাও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১ কোটির বেশি টাকা ডিপোজিট আছে, ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে নতুন করে এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে ১৩,৮৮১ জন।
গত বছরের জুনের পর ১ কোটির বেশি টাকা ডিপোজিট আছে এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল ৮৬,০৩৭টি। চলতি বছর এ সংখ্যা বেড়ে ৯৯,৯১৮ এ দাঁড়িয়েছে।
দাম বাড়ছে কেন?
রেডিমেড ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া। মহামারির পর গ্রাহকদের হাতে নগদ অর্থের যোগান থাকাও দাম বাড়ার কারণ বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
ঋণদাতারাও ৭.৫ শতাংশ অর্থায়নের অফার দিচ্ছে যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। একারণেও ফ্ল্যাট কিনতে প্রলুব্ধ হচ্ছেন ক্রেতারা।
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান বলেন, মহামারির কারণে বিনিয়োগের সুযোগ কমে এসেছে। কম সুদে ডিপোজিট রাখার সুবিধা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এছাড়া, আবাসনে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় এ খাতের বিনিয়োগ বাড়ছে।
চাহিদা বাড়লেও মহামারির সময় নতুন প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে আগানোয় চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ বাড়েনি। নতুন ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ডিএপি) ‘ওয়েট-অ্যান্ড-সি’ নীতি হাতে নিয়েছে হাউজিং কোম্পানিগুলো।
ফরহাদুজ্জামান বলেন, বেশি চাহিদা আর কম সরবরাহের মধ্যে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে।
কিউব হোল্ডিংসের ডেপুটি ম্যানেজার মো শফিকুর রহমান সবুজ বলেন, মহামারির পর ছোট অ্যাপার্ট্মেন্টের দামও প্রতি বর্গফুটে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা বেড়েছে।
কোম্পানিটি বসুন্ধরায় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজারের অ্যাপার্ট্মেন্ট বিক্রি করছে, দাম প্রতি বর্গফুট ন্যূনতম নয় হাজার থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
আবাসন সংবাদ
ভূমিকম্পে ঢাকার বড় বিপদ স্পষ্ট হচ্ছে
ভূমিকম্পে রাজধানী শহর ঢাকার বড় বিপদের ঝুঁকি আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের নৈকট্য, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও প্রাণহানির ঝুঁকিকে বিবেচনায় নিয়ে এমন মত দিয়েছেন ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞরা।
গত শুক্র ও গতকাল শনিবার প্রায় ৩১ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশে চারটি ভূমিকম্পের ঘটনা এমন ঝুঁকির বিষয়টি সামনে এনেছে। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎস ছিল নরসিংদীর মাধবদী। উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে উৎপত্তিস্থলের গভীরতা যত কম হবে, তত বেশি ঝাঁকুনি হবে। শুক্রবারের ভূকম্পনের তীব্রতা ছিল স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তীব্র ঝাঁকুনিতে কেঁপে ওঠে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। এ ভূমিকম্পের ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত হন। আহত হন ৬ শতাধিক মানুষ।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে গতকাল সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার এবং সাড়ে সাত ঘণ্টার পর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আরও একটি ভূমিকম্প হয়, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। এ ভূমিকম্প দুটোরই উৎপত্তি ছিল নরসিংদী। সন্ধ্যায় কাছাকাছি সময়ে আরও একটি ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল রাজধানীর বাড্ডা; যার মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৭।
এসব মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পকে বড় ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন ভূমিকম্প ঢাকার ঝুঁকি কতটা স্পষ্ট করছে, তা বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিগত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের নথিভুক্ত ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ভূমিকম্পের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সময়ে ৩৯টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে। এর মধ্যে ১১টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৮৬ কিলোমিটার এলাকার ভেতরে। অর্থাৎ ২৮ শতাংশের বেশি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার কাছে। এসব ভূমিকম্পের মাত্রা ৩ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ৭। এর মধ্যে শুক্রবার নরসিংদীতে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রার (৫ দশমিক ৬) ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, ঢাকার ১০০ থেকে ২৬৭ কিলোমিটারের মধ্যে বাকি ২৮টি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল।
পাঁচ বছরে ১৮ জেলায় ভূমিকম্প হয়েছে। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, নেত্রকোনা, দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, রংপুর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, পাবনা, হবিগঞ্জ, রাঙামাটি, চুয়াডাঙ্গা, শরীয়তপুর, যশোর ও কুড়িগ্রাম।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রে একসময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন মো. মমিনুল ইসলাম। এখন তিনি আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নরসিংদীতে এর আগেও ভূমিকম্প হয়েছে। তবে মাত্রা ছিল কম। বাংলাদেশের সীমান্তে তিনটি টেকটনিক প্লেট আছে। এই তিনটি প্লেটই সক্রিয়। প্রতিনিয়ত এখানে ছোট ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে। প্লেট বাউন্ডারির পাশে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকে।
মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, নরসিংদীতে একটি সাব-ফল্ট রয়েছে। নরসিংদীতে আগে ছোট ভূমিকম্প হলেও গুরুত্ব দেওয়া হতো না। এখন বোঝা যাচ্ছে, এই সাব-ফল্ট অনেক বড়। এটা ঢাকার কাছ পর্যন্ত চলে এসেছে। এই ভূমিকম্প প্রমাণ করল ঢাকা বড় ঝুঁকির মধ্যে।
বেশি ভূমিকম্প রাতে
গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে হওয়া ৩৯টি ভূমিকম্প কোন সময় হয়েছে, সেটিও আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশ্লেষণে এসেছে। এতে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ভূমিকম্প হয়েছে রাতে। যেমন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সময়ে ভূমিকম্প হয়েছে ২৩টি। বাকি ১৬টি ভূমিকম্প হয়েছে দিনের বেলায় (ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা)।
রাতে বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়ে অথবা বাসায় থাকে। এমন সময়ে ভূমিকম্পে প্রাণহানির আশঙ্কা বেশি থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, যে পরিমাণ ভূমিকম্পের শক্তি সাবডাকশন জোনে (দুটি টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থল) পুঞ্জীভূত হয়ে আছে, তার ১ শতাংশের কম নির্গত হয়েছে। ফলে বারবার হওয়া এই ভূকম্পগুলো বড় একটি ভূমিকম্পের পথ খুলে দিয়েছে।
অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর ‘আফটার শক’ হবে, এমনটা আগেই ধারণা করা হয়েছিল। তবে আফটার শকগুলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভূ-অভ্যন্তরের যে ফাটল বা ফল্ট লাইনটি এত দিন ধরে প্রচণ্ড চাপে একে অপরের সঙ্গে আটকে ছিল, তা নড়তে শুরু করেছে এবং শক্তি নির্গমনের একটি প্রক্রিয়া চালু করেছে। এমন আফটার শক হতে হতে বড় ভূমিকম্প হবে। সেটা খুবই নিকটে হতে পারে।
ঝুঁকির চার কারণ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রাকিব হাসান চারটি কারণে ঢাকার বিপদটা স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উৎপত্তিস্থল থেকে ঢাকার নৈকট্য একটা কারণ। ঢাকার কাছে এ ফল্টটা সম্পর্কে এত স্পষ্ট ধারণা ছিল না। সেটা এখন খুলতে শুরু করেছে। যার প্রভাবে সামনে আরও ভূমিকম্প হতে পারে।
মাটির গঠনকে দ্বিতীয় কারণ হিসেবে উল্লেখ করে রাকিব হাসান বলেন, ঢাকার নতুন অংশগুলো খুব নিচু জায়গায় মাটি ভরাট করে গড়ে উঠেছে। এমন অঞ্চলে ভূমিকম্পের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। তৃতীয়ত, ঢাকার ভবনগুলো ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ডিজাইন কোড মেনে হচ্ছে না। চার নম্বর হলো ঢাকা শহরের জনঘনত্ব। এ কারণে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে।
প্রস্তুতি কেমন
২০১৬ সালে ভূমিকম্পের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলার অংশ হিসেবে ন্যাশনাল অপারেশন সেন্টার নির্মাণে চীনের সঙ্গে চুক্তি হলেও গত এক দশকে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ সেন্টার নির্মাণে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় জায়গাও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব আবু দাউদ মো. গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, তেজগাঁওয়ে এক একর জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভবন নির্মাণ করতে গেলে নির্মাণসামগ্রী রাখার জন্য কমপক্ষে আরও ২৫ বর্গমিটার জায়গা থাকা দরকার। সেটা পাওয়া যায়নি।
দুর্যোগের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগের জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হচ্ছে। বড় দুর্যোগের ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসকে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন সংস্থার জন্য আরও সরঞ্জাম সংগ্রহের কাজ চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রুততার সঙ্গে আমরা সে সংগ্রহ সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা উপকূলে আমাদের ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক আছেন। নগরে আছে ৪৮ হাজার। তাঁদের যুক্ত করে মানুষকে ভূমিকম্প নিয়ে সচেতন করার কাজ শুরু করব।’
তবে প্রস্তুতি ও করণীয় দিকগুলো যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন দুর্যোগ ফোরামের সদস্যসচিব গওহর নঈম ওয়ারা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুর্যোগ মন্ত্রণালয় জেলা পর্যায়ে চিঠি দিয়েছে দুর্যোগের তথ্য দেওয়ার জন্য। এ ধরনের দুর্যোগে এমনিতে তথ্য আসার কথা। সেটার জন্য চিঠি দিতে হবে কেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নরসিংদীর দুর্যোগের তথ্য আসতে লেগেছে এক দিনের বেশি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারের জায়গা নেই জানিয়ে গওহর নঈম ওয়ারা বলেন, যে দেশগুলো স্থানীয় সরকারকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, তারা দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে আছে। দুর্যোগ নিয়ে সচেতনতার বিষয়টি পাঠ্যসূচিতে থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন ছাত্রাবাস থেকে ছাত্ররা লাফিয়ে পড়েছে। এ রকম কেন হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব চর্চা করায় না। এটা স্কুল থেকে শেখাতে হবে।
আবাসন সংবাদ
ভূমিকম্প-পরবর্তী জরুরি পরিস্থিতি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা
ভূমিকম্প–পরবর্তী উদ্ভূত জরুরি পরিস্থিতিতে আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও পরাঘাতের কারণে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক আঘাতের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি তাঁদের সার্বিক নিরাপত্তার দিক সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সভায় বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের পরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলীর মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। তাঁরা ভূমিকম্প–পরবর্তী আবাসিক হলগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামগ্রিক ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার বলে মতামত দেন। ঝুঁকি নিরূপণ ও সম্ভাব্য সংস্কারের স্বার্থে আবাসিক হলগুলো খালি করার কথাও বলেন তাঁরা।
এ পটভূমিতে সভায় আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা এবং আবাসিক হলগুলো খালি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাই আগামীকাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছেড়ে যেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রাধ্যক্ষদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
তবে বন্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসগুলো যথারীতি খোলা থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এর আগে আজ রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছিল।
-
বিবিধ2 years agoবাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন2 years agoরিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ3 months agoরাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আইন-কানুন3 months agoদলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়
-
আইন-কানুন2 years agoরিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ3 months agoসীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ12 months agoবন্ধ হচ্ছে অবৈধ আবাসন প্রকল্প
-
বিবিধ2 years agoফ্ল্যাট বা অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র নমুনা
