সকালে ঘুম থেকে উঠে মৃদুমন্দ নির্মল বাতাসে হাঁটা, বিকেলের নরম রোদে ছাদবাগানে সময় কাটানো কিংবা রাতের তারাভরা আকাশ উপভোগ—কংক্রিটের নগরী ঢাকার অনেক বাসিন্দাই স্বপ্ন দেখেন, নিজের ফ্ল্যাটে এমন সুযোগগুলো পাওয়া যাবে। কর্মব্যস্ত দিন শেষে, মন প্রফুল্ল রাখতে প্রকৃতির সান্নিধ্য আমরা চাই আজকাল। কীভাবে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়। সেই সঙ্গে অ্যাপার্টমেন্ট, ছাদ, পার্কিং, এমনকি লবিতে কতটা সবুজের ছোঁয়া দেওয়া যায়—এই ভাবনায় ব্যস্ত সবাই। একটা সময় গাছপালার সবুজ আমাদের ঘিরে রাখত। আর এখন এক টুকরা সবুজ প্রকৃতির আশায় ছুটতে হয় দূর থেকে দূরের কোনো গ্রামে। রাজধানীতে নিসর্গের দেখা নেই বললেই চলে। বারান্দায় দাঁড়ালে কিংবা জানালায় চোখ রাখলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক টুকরা আকাশও দেখা যায় না।
একসময় বাড়ির উঠানে থাকত ফুলের বাগান। পেছনে থাকত ফল কিংবা সবজির আবাদ; এখন যা শুধুই স্মৃতি। তাই পরিবেশবান্ধব ফ্ল্যাটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ক্রেতারা। বাড়ির পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত করতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও নকশার ক্ষেত্রে সেটব্যাকের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করেছে। তা মেনে ভবনের নকশা করলে সামনে-পেছনে জমির আয়তন অনুসারে জায়গা ছাড়তে হয়। ফলে ভবন নির্মাণের পর আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত উৎস রাখা সম্ভব হয়। ক্রেতার চাহিদা, পরিবেশবান্ধব আবাসন ও আধুনিক নগরায়ণের পাশাপাশি গুণগত মান বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে আবাসন প্রতিষ্ঠান আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন খালিদ বলেন, ‘আমরা পরিবেশবান্ধব আবাসনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। এ কারণেই নকশার সময় থেকেই তা নিশ্চিত করা হয়। আমাদের প্রতিটি প্রকল্পে সোলারের মাধ্যমে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা এবং রেইনওয়াটার হার্ভেস্টিং পদ্ধতি সংযুক্ত থাকে। তা ছাড়া আলো-বাতাসের পরিপূর্ণ ব্যবস্থা রাখতে সেটব্যাক মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা ছেড়ে তবেই ভবন নির্মাণ করা হয়।’
এরই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক মানের নকশা, আধুনিকতা ও নান্দনিকতার সমন্বয় ঘটেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি ভবনে। বাড়তি সুযোগ-সুবিধা থাকছে এক্সক্লুসিভ প্রজেক্টগুলোতে। যেমন একাধিক বেজমেন্ট ও ওপেন গ্রাউন্ড ফ্লোরের সঙ্গে পার্কিং, রিসেপশন, ওয়েটিং এরিয়া, জিম, নামাজের স্থান, কমিউনিটি স্পেস, ড্রাইভারদের বসার জায়গা, লন্ড্রি ইত্যাদি। পাশাপাশি থাকছে পর্যাপ্ত সবুজের ব্যবস্থা। আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের ভবনগুলোর আধুনিকায়ন বিষয়ে হোসেন খালিদ বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি প্রজেক্টের সব কটি ভবনের প্রতি ইউনিটেই রয়েছে প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। মিলবে সবুজঘেরা প্রবেশপথ। আছে ফোয়ারা। অনেক ভবনে ফায়ার হাইড্রেন্টের বিশেষ সুবিধাও পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কোথাও আগুন লাগলে তা শনাক্তকরণ ও নিরোধক—দুই ধরনের ব্যবস্থাই থাকে। রয়েছে হোম অটোমেশন পদ্ধতি ও রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং পদ্ধতি। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার পাশাপাশি আছে ভিডিও ইন্টারকম ব্যবস্থা। প্রযুক্তিনির্ভরতার কথা মাথায় রেখে অনেক কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে ওয়াই-ফাইয়ের সুব্যবস্থাও। একাধিক লিফটের পাশাপাশি জেনারেটরের ব্যবস্থা তো থাকছেই।’
আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের ভবনগুলোর ইন্টেরিয়র ডিজাইনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘স্বতন্ত্র ডিজাইনের পাশাপাশি ম্যাটেরিয়াল ব্যবহারেও আমরা আধুনিক ও নান্দনিক। এক্সক্লুসিভ প্রজেক্টগুলোর বেডরুম, ডাইনিং, ড্রয়িং, লিভিং, ফায়ার এবং ব্যালকনিতে ব্যবহৃত হয় উন্নত মানের মিরর পলিশ টাইলস। বাথরুম ও কিচেনের ফ্লোরে ব্যবহার করা হয় বিদেশি লেজার কাট টাইলস। বাইরের ক্ষতিকর তাপ ও শব্দ যেন তুলনামূলক কম প্রবেশ করে, সে জন্য জানালাগুলোতে ব্যবহার করা হয় ডাবল গ্লেসড গ্লাস। রান্নাঘরের ইন্টেরিয়রের ক্ষেত্রেও বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়। সেখানে সিলিং পর্যন্ত শোভা পায় উন্নত মানের বিদেশি ওয়াল টাইলস। রয়েছে কেবিনেটের সুব্যবস্থা। সেই সঙ্গে কিচেন টপে গ্রানাইটের ব্যবহার সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি ওয়ার্কটপ হিসেবেও কাজ করে। চলমান অনেক এক্সক্লুসিভ প্রজেক্টের ছাদে রয়েছে সুইমিংপুল। প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি। প্রয়োজনের তাগিদে যতই কংক্রিটের স্থাপনা তৈরি হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত প্রকৃতি ছাড়া সুস্থ-সুন্দর জীবন অসম্ভব।’
নগরজীবনে বসবাসের জন্য মধ্যবিত্তদের কাছে কনডোমিনিয়াম প্রকল্প জনপ্রিয় হচ্ছে। সে জন্য বড় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন সেদিকে ঝুঁকছে। আনোয়ার ল্যান্ডমার্কও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিষ্ঠানটি সবার আগে প্রাধান্য দিচ্ছে পরিবেশবান্ধব আবাসনের বিষয়টিকে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের কনডোমিনিয়ামগুলোর সুযোগ-সুবিধা।
ফিটনেস ও স্পোর্টস জোন: এই জোনে সুইমিংপুল, ছেলেদের ফিটনেস সেন্টার, মেয়েদের ফিটনেস সেন্টার, বিলিয়ার্ড রুম, স্কোয়াশ, বাস্কেট বল কোর্ট এবং জগিং লুপের ব্যবস্থা থাকছে।
অতিথি আপ্যায়ন: যেকোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কনডোমিনিয়ামের বাসিন্দাদের যেন বাইরে যেতে না হয়, সে জন্য দুটি পার্টি হলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ক্যাফে এবং বেকারির ব্যবস্থাও থাকছে। অতিথিদের বিষয়টিও স্থপতিদের নজর এড়ায়নি। তাই তাদের অপেক্ষার জন্য থাকছে বসার সুব্যবস্থাও।
ফ্যামিলি এন্টারটেইনমেন্ট: এই জোনের মধ্যে অ্যাম্ফিথিয়েটার, মুভি থিয়েটার, লাইব্রেরি, রিডিং রুম, সিনিয়র লাউঞ্জ ছাড়াও থাকছে নামাজের স্থান।
শিশুদের বিনোদন: কংক্রিটের এই নগরীতে শিশুদের সময় কাটছে চার দেয়ালের মধ্যে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা। তাই এই প্রকল্পে শিশুদের জন্য থাকছে খেলার মাঠ, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, টোডলার নার্সারি এবং অ্যাকটিভিটি রুমের ব্যবস্থা।
অন্যান্য সুবিধা: কমপ্লেক্সের বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য মিনি মার্ট, বিউটি পার্লার, সেলুন, বিজনেস সেন্টার, লন্ড্রি, ডাক্তার হাউস, ২৪ ঘণ্টা ফার্মেসি সুবিধা এবং গাড়ি মেরামতের ব্যবস্থাও থাকছে।
কাঠামোগত সুবিধাদি: গেট হাউস, ইএমই হাব, ওয়াটার রিজার্ভার, গ্যাস/এলপিজি স্টোরেজ হাব, অগ্নিনির্বাপণ অফিস, নিরাপত্তাকেন্দ্র, গারবেজ বিন এবং এখানকার কর্মচারীদের জন্য ডরমিটরির ব্যবস্থাও থাকছে এই প্রকল্পের আওতায়।