অর্থ ও বাণিজ্য
বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য জমি পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর

পতেঙ্গার সাগরপাড়ে ‘বে টার্মিনাল’ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫০১ একর খাসজমি প্রতীকী মূল্যে পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। পণ্য ও কনটেইনার ওঠানো-নামানোর এই টার্মিনালের জন্য তিন কোটি তিন টাকা সেলামি মূল্য জমা দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে তিনটি পৃথক চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
গত ৩০ এপ্রিল জেলা প্রশাসন থেকে পাঠানো এই চিঠি বৃহস্পতিবার বন্দর কর্তৃপক্ষ বুঝে পেয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এই চিঠি দেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত টাকা জমা দেওয়ার পর দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত দলিল হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের এই দলিল স্বাক্ষরিত হবে।
আমদানি-রপ্তানি বাড়তে থাকায় এক দশক আগে পতেঙ্গার সাগরপাড়ে ৮৭০ একর জমিতে বে টার্মিনালে নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, জমি বরাদ্দ পেতে ২০১৪ সালের মে মাসে প্রক্রিয়া শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রথম দফায় ২০১৭ সালে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৬৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে বন্দরকে বরাদ্দ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। প্রায় ১০ বছর পর এখন আরও প্রায় ৫০১ একর জমি বুঝে পাচ্ছে বন্দর। এখন পর্যন্ত ৫৬৭ একর জমি হাতে পাচ্ছে বন্দর। তবে আরও প্রায় ৩০০ একরের মতো জমি এখনো বুঝে পায়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, জেলা প্রশাসনের চিঠি হাতে পেয়েছি। এখন জমি বন্দোবস্ত বাবদ টাকা জমা দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাকি প্রায় ৩০০ একর জমি বরাদ্দ পেতে প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।
এক দশক ধরে ব্যবসায়ীরা বে টার্মিনাল প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। নতুন এই প্রকল্পে বন্দরের সেবা বর্তমানের তুলনায় অনেক বাড়বে। সেখানে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা বড় জাহাজ ভিড়ানো যাবে। কনটেইনার ও পণ্য খালাস করে শহরে না ঢুকেই দেশের নানা স্থানে নেওয়া যাবে। বন্দর ব্যবহারের খরচ কমবে এই আশায় ব্যবসায়ীরা বে টার্মিনাল প্রকল্পকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তবে গত ১০ বছরে এই প্রকল্পের খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ২০২৪ সালে এই টার্মিনাল চালুর আশা করেছিলেন। ২০২১ সালের আগস্টে এই প্রকল্প পরিদর্শন করে এমন আশার বাণী শোনালেও মাঠপর্যায়ে কাজ হয়নি।
প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বন্দর জলসীমার শেষ প্রান্তে চট্টগ্রাম ইপিজেডের পেছনের সাগরপাড় থেকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অদূরে রাসমনিঘাট পর্যন্ত প্রায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা প্রকল্প এলাকায় বড় সাইনবোর্ড রয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে এবং এর পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছে। তবে প্রকল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব প্রায় চূড়ান্ত হলেও কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এখন পর্যন্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বে টার্মিনাল প্রকল্পে যে চারটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে, তার একটি তেল ও গ্যাসের টার্মিনাল। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ইস্ট কোস্ট গ্রুপ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। মোট ৩৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে গ্রুপটি।
এর বাইরে কনটেইনার ও পণ্য ওঠানো-নামানোর তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল ও আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করবে। এ জন্য প্রতিষ্ঠান ২টি ১৫০ কোটি ডলার করে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। আবুধাবি পোর্টস আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ হতে পারে। এ ছাড়া নৌপথ তৈরিতে ৫৯ কোটি ডলার বিনিয়োগের পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৮০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে।
সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে এখন দেশের তিনটি বন্দর ব্যবহৃত হচ্ছে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা-এই তিন বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন হয় প্রায় ৮৭ শতাংশ। সরকার এখন এই বন্দর ঘিরে নতুন তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি প্রকল্প ‘পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল’ নির্মাণ শেষে এখন চালুর অপেক্ষায় আছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। শুধু পিছিয়ে আছে বে টার্মিনাল প্রকল্প।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা

দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
অর্থ ও বাণিজ্য
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক করল সরকার

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কেউ এ-সংক্রান্ত নির্দেশিকার ব্যত্যয় ঘটালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’ অনুযায়ী পরিহারযোগ্য বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন তথ্যাদি শেয়ার করছেন এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারকে বিব্রত করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন; যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চাকরিবিধির পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ। প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। অনেক ক্ষেত্রে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হানিকর এবং বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের পর্যায়ের অপরাধ। এ ধরনের বিভিন্ন ব্যত্যয়গুলো নজরে আসায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আদেশে জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’-এর সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা’, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা’ এবং ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা’ অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
-
বিবিধ2 years ago
বাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
রাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
সীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ2 months ago
মাত্র ২৪ ঘন্টায় খতিয়ানের ভূল সংশোধনের সরকারি নির্দেশনা
-
ফিচার1 month ago
প্রথম ফ্ল্যাট কিনে ঠকতে না চাইলে মেনে চলুন এই ১০ কৌশল
-
আইন-কানুন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
আবাসন পরিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও হিসাবরক্ষক সাময়িক বরখাস্ত