ভারতের আবাসন খাতে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ কমেছে। ২০২৩ সালে ভারতের আবাসন খাতে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশীদারত্ব ৩০ শতাংশ কমে ২৭৩ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, আগের বছরে যা ছিল ৩৯০ কোটি ডলার। হিন্দুস্তান টাইমসের সংবাদে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ভারতের আবাসন খাতে সামগ্রিকভাবেই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে। ২০২৩ সালে এ খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১২ শতাংশ কমে ৪৩০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ভারতের আবাসন খাতে বিনিয়োগ পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এলেও আশা করা হচ্ছে, ২০২৪ সালে ভারতীয় অর্থনীতির উচ্চ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে আবাসন খাতেও বিনিয়োগ বাড়বে। সেই সঙ্গে চলতি বছর ভারতে অবকাঠামো খাতে বড় ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা আছে। সে জন্য ধারণা করা হচ্ছে, আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে।
মূলত অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ার জন্যই বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে বলে ভারতের আবাসন খাতের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ভেস্টিয়ানের প্রতিবেদনের সূত্রে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে।
ভারতের আবাসন খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রাধান্য ছিল। ২০২৩ সালে এ খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ৬৫ শতাংশ করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, যদিও তার আগের বছর এটা ছিল ৭৯ শতাংশ। বিদেশি বিনিয়োগের প্রায় ৭২ শতাংশ বাণিজ্যিক সম্পদে করা হয়েছে। এরপর আছে শিল্প ও গুদাম খাতে, যদিও এই দুই খাতে বিনিয়োগ মোট বিনিয়োগের মাত্র ১৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের আবাসন খাতে অভ্যন্তরীণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২০২৩ সালে দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর এই বিনিয়োগ ১৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২২ সালে এই বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ফলে ভারতের আবাসন খাতে অভ্যন্তরীণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ গত বছর ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, ২০২২ সালে যা ছিল ১৪ শতাংশ।
ভারতের অভ্যন্তরীণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাণিজ্যিক সম্পদ, যেমন অফিস, খুচরা দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিনিয়োগ করেছেন।
ভেস্টিয়ানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রীনিবাস রাও বলেছেন, আবাসন খাতে চাহিদা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও গত বছর ভালো বিনিয়োগ হয়েছে। ভারতের দেশীয় বিনিয়োগকারীদের আশাবাদের কারণে এই বাজার চাঙা ছিল।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের আবাসন খাতে ঋণপ্রবাহ আগের বছরের একই সময়ে তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি স্থিতিশীল হবে; সেই সঙ্গে ভারত উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। ভারতের বিপুল ভোক্তাশ্রেণি, ক্রমবর্ধমান হারে দপ্তরে গিয়ে কাজ করার রীতি পুনরায় চালু হওয়া এবং অনুকূল সরকারি নীতির কারণে ভারতের আবাসন খাতে এ বছর বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রীনিবাস রাও বলেন, ভারতের আবাসন খাত দ্রুত হারে বাড়ছে, সেই সঙ্গে ঋণ ও অর্থের চাহিদাও বাড়ছে। ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করে উচ্চ মুনাফা করার সম্ভাবনা আছে—এমন বিবেচনায় বিনিয়োগকারীরা ভারতের বাজারের প্রতি আকৃষ্ট হবেন।