Connect with us
<

নির্বাচিত প্রতিবেদন

আধুনিক রান্নাঘর সাজানোর ১০ উপায়

আধুনিক রান্নাঘর সাজানোর ১০ উপায়

সৌন্দর্য বরাবরই মানুষের নান্দনিক আনন্দের ধারক হিসেবে পরিচিত হয়ে এসেছে। কারণ সকলেই ছিম-ছাম গোছানো জিনিস পছন্দ করে। আবার এই সৌন্দর্যের সাথে রুচিবোধের মিশেলের মাধ্যমে মানুষ সৌখিন হয়ে উঠে।

যদিও সৌখিন বলতে আমরা ব্যাক্তির পরিপাটি থাকা এবং তার বাহ্যিক অবস্থাকে বোঝাই। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে একজন সৈখিন ব্যক্তি নিজের পাশাপাশি তার আশপাশের পরিবেশ ও বাসস্থানকেও নান্দনিকভাবে সাজাতে পছন্দ করে।

বাসস্থান সাজানোর ক্ষেত্রে প্রায় সকলের আগ্রহ থাকে শোবার ঘর, খাবার ঘর কিংবা বসার ঘরের প্রতি। কিন্তু বাসার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রান্নাঘরের প্রতি মানুষের তেমন খেয়াল থাকেনা বললেই চলে।

বলা বাহুল্য যে, একটি গৃহের মধ্যে অন্যান্য রুমের চাইতে রান্নাঘর কোন অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ অংশ নয়। রান্নাঘরকে বাড়ির যতটা অবহেলিত জায়গা মনে করা হয়, বিষয়টি একদমই তা নয় বরং সাজানোর বা ডেকোরেশনের জন্য সবার আগে সকলের রান্নাঘরের কথাই বিবেচনা করা উচিত।

যেহেতু আমাদের বাড়ির গৃহিণীরা দিনের অধিকাংশ সময় রান্নাঘরে কাটিয়ে দেয়, এই বিবেচনাবোধ থেকে হলেও আমাদের উচিত রান্নাঘরকে তাদের জন্য আরামদায়ক ও সুন্দরভাবে ভাবে সজ্জিত করা দেয়া।

Advertisement

আধুনিক রান্নাঘর সাজানোর ১০ টি উপায়
বর্তমান সময়ে রান্নাঘর ডেকোরেশন করা নিয়ে অনেকে তৎপর হলেও, বেশিরভার মানুষই ভাবেন যে রান্নাঘর সাজাতে অনেক বড় অংকের টাকা ব্যয় করতে হয়। কিন্তু, বাস্তবিকতা হলো, খুব সাশ্রয়ী বাজেটের মধ্যে আধুনিক ডিজাইনের রান্নাঘর সাজানো সম্ভব যা আপনার রান্নাঘরকে দুর্দান্ত সুন্দর করে তুলবে।

রান্নাঘরের লে আউট
রান্নাঘরের পরিবেশ মূলত জায়গার উপর নির্ভর করে। ছোট রান্নাঘরের জন্য প্যারালাল শেইপ বেশ মানানসই। তবে রান্নাঘর যদি বড় হয়, তাহলে তা ইংরেজি ইউ (U) অথবা এল (L) শেইপে রাখলে ভাল হবে। এতে হাটাচলার যথেস্ট স্পেস পাওয়া যাবে এবং স্বাচ্ছন্দ্য অনুসারে কাজও করা যাবে।

লে আউট প্ল্যানিংয়ের সময় রান্নাঘরে বড় একটি জানালার থাকা অবশ্যক , কেননা বাংলাদেশ একটি গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। রান্নাঘরে যেহেতু আগুনের সাহায্যেই রান্নাবান্না করা হয় তাই এই রুমে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হবে এই স্বাভাবিক। আর এই তাপ বেরিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বড় জানালা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে রান্নাঘরের স্থান স্বল্পতা কারণে বড় জানালা ব্যবহার করা না গেলে, ছোট একটি ফ্যান এবং সাথে একটি এগজস্ট ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন। এতে রান্নাঘরে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি রান্নাঘরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও সাবলীল হতে হবে।

রান্নাঘরের চিমনি
তেল মশলা মিশ্রিত রান্নার ধরনের কারনে আমাদের রান্নাঘরের দেয়ালে ও সিলিংয়ে তেল চিটচিটে ভাব বেশি থাকে। আবার এই কারনে রান্নাঘরে ধোঁয়া ও গন্ধ-দুটিই বেশি হয়।

Advertisement

তাই মসলার গন্ধ হোক বা তেল চিটচিটে ভাব-দুটি কমাতেই স্মার্ট রান্নাঘরে রাখা চাই কিচেন হুড বা চিমনি। আধুনিক সময়ে রান্নাঘরের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নানা নকশার স্টাইলিশ চিমনি।

এমন চিমনিতে তাই রান্নাঘরের সৌন্দর্যও বাড়ে। সঙ্গে রান্নাঘরে তৈরি হয় স্বস্তিকর পরিবেশ। বৈদ্যুতিক চিমনি বাজারে এখন বেশ জনপ্রিয়। এ ধরনের চিমনি ধোঁয়া ও তাপ টেনে নেয়। আধুনিক এই চিমনিতে থাকে এয়ার পিউরিফায়ার ও ফ্যান। বিদ্যুৎ বিলও আসে কম। মাঝারি আকারের চিমনি রান্নাঘরের কাউন্টার ছাদেও সহজে বসানো যায়।

রান্নাঘরের ক্যাবিনেট
বাংলাদেশে কিচেন ক্যাবিনেটের ব্যবহার করাটা এখনো বেশ নতুন একটা কনসেপ্ট। আজ থেকে ৫/৭ বছর আগেও মানুষজন বাড়ি তৈরির সময় রান্নাঘরে “তাক” এর ব্যবস্থা করত এবং সেই তাকের উপরই রান্নার সক তৈজসপত্র রাখত।

কিন্তু বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের মানুষের রুচিবোধের ব্যপক পরিবর্তন হয়েছে এবং এই পরিবর্তনের ধারার সাথেই ক্যাবিনেটের মাধ্যমে রান্নাঘরের তাক প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। রান্নাঘরে ক্যাবিনেটের মধ্যে সহজেই প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা যায় এবং আলাদা করে কিচেন র‍্যাক ব্যবহারের দরকার পড়েনা বলে অনেকখানি জায়গা সাশ্রয় হয়।

আপনি চাইলে আপনার বাসার জন্য কাস্টমাইজড ক্যাবিনেট তৈরী করে নিতে পারেন, যেখানে আপনার চাহিদা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির জন্য আলাদা সেকশন থাকবে। এছাড়া, হাতিলে রয়েছে মডিউল্যার কিচেন যেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দ অনুসারে যেকোন কিচেন ক্যাবিনেট স্টাইল সিলেক্ট করতে পারেন।

Advertisement

রান্নাঘরের দেয়াল
রান্নাঘরের দেয়াল হওয়া উচিত উজ্জ্বল রঙের। তাই উপরের সিলিং এবং পাশের দেয়ালে এমন রঙ ব্যবহার করা উচিত যা আলোর প্রতিফলন ঘটায়। ডেকোরেশনের ক্ষেত্রে কালার স্কিমের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তাই আপনি চাইলে তিনটি রঙের সমন্বয়ে একটি প্যালেট ব্যবহার করতে পারেন।

আবার রান্নাঘরের যদি দেয়াল ফাকা থাকে তবে সেখানে বিভিন্ন শোপিস প্লেট কিংবা কাচের ঢাকনি ব্যবহার করে কিচেন ওয়ালটিকে সাজিয়ে তুলতে পারেন। এতে করে আপনার সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে এবং আপনার রান্নাঘর অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি সুসজ্জিত বলে মনে হবে।

রান্নাঘরের মেঝে
রান্নাঘরের জন্য আইডিয়াল ফ্লোরিং ম্যাটেরিয়াল হলো সিরামিকের টাইলস। কারণ এতে দাগ লাগলে খুব সহজেই পরিষ্কার করা যায়। এমনকি মেঝেটি দেখতেও খুব চকচকে লাগে। যারা সিরামিকের টাইলস ব্যবহার করতে পারবে না তাদের জন্য বিকল্প হিসেবে বর্তমানে বাজারে বেশ কিছু ডিজাইনের ফ্লোর কভার পাওয়া যাচ্ছে এটিও বেশ চমৎকার কাজে আসে। আপনি যদি মেঝেতে চীনামাটির বাসন অর্থাৎ পোর্সেলিন স্টোনের কার্পেট ব্যবহার করেন তবে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকগুণ কম সময় লাগবে।

রান্নাঘরের লাইটিং
সাধারণত একটি ফ্ল্যাটের মাঝামাঝির দিকেই রান্নাঘর অবস্থিত হয়ে থাকে। তাই আশে পাশে খোলা মেলা না থাকার কারণে এই ঘরে আলোর ব্যবহার কম থাকে। আলোর উৎস হিসেবে অনেকে এক বা একাধিক লাইট ব্যবহার করে থাকেন। তবে, অনেক ক্ষেত্রেই তা অপ্রতুল হিসেবে পরিগনিত হয়।

তাই রান্নাঘর সাজানো পরিকল্পনায় সঠিক বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন। এছাড়াও কেবিনেট এর নিচে অথবা সিলিং এর অংশের লাইটিং করে সাজাতে পারেন। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ডিজাইনের ঝাড়বাতি বা পেন্ডেন্ট লাইট পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো ও ব্যবহার করতে পারেন। আলোকসজ্জা আপনার রান্নাঘরে আধুনিকতার ছোঁয়া এনে দেবে।

Advertisement

রান্নাঘরের ফার্নিচার
রান্নাঘরে আসবাবপত্র হওয়া উচিত প্রয়োজনমাফিক এবং যুক্তিসংগত, অর্থাৎ যা না হলেই নয় এ ধরনের আসবাব দিয়ে রান্নাঘর সাজানো উচিত, অতিরিক্ত আসবাবপত্রের কারণে রান্নাঘরকে অগোছালো দেখাতে পারে। অনেক জায়গা ও এতে নষ্ট হয় ফলে চলাচলের অসুবিধা সৃষ্টি হয়।

আসবাবপত্র রান্নাঘরে যত কম হবে, রান্নাঘরটি তত খোলামেলা থাকবে। চাইলে আপনার রান্না ঘরে সাদা রংয়ের আসবাবপত্র ব্যবহার করতে পারেন সাদা হল একটি ভিজ্যুয়াল স্পেস এক্সপেন্ডার যা আপনার রান্নাঘরকে আরও উজ্জ্বল এবং আরও শৌখিন করে তুলবে।

রান্নাঘরের স্টোরেজ
শুকনো ইনস্ট্যান্ট খাবার বা স্নাক্স রাখার জন্য আলাদা ড্রয়ার তৈরি করতে পারেন। বিস্কুট, নুডুলস, চিপস বা যে কোন স্নাক্স প্রায়শই অগোছালো অবস্থায় থাকে। আবার অনেক সময় খুঁজে পেতে সমস্যা হয়, তাই স্টোরেজের জন্য আলাদা জায়গা থাকলে জিনিসগুলো গোছানো থাকবে এবং সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যাবে।

রান্নাঘরের সাজসজ্জা
রান্নাঘরের সাজসজ্জায় পার্সোনাল টাচের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা আছে। যেমন রান্নাঘরে পেইন্টিং, বিভিন্ন ইনডোর প্ল্যান্ট, ইত্যাদি লাগাতে পারেন। আবার চাইলে রান্নাঘরে কফি মগ এবং শোপিস সাজিয়ে রাখার জন্য খোলা তাক ব্যবহার করতে পারেন।

অবশ্য অনেকের ধারণা মতে, খোলা তাকগুলোতে জিনিসপত্র রাখলে সেগুলো সহজেই এলোমেলো ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। কিন্তু আপনি যদি সুন্দর পরিপাটি করে গুছিয়ে রাখতে পারেন, এটি হতে পারে আপনার রান্নাঘরের অন্যতম আকর্ষণ।

Advertisement

রান্নাঘরের কাজের স্থান
আমাদের দেশের হোমমেকাররা প্রায় সারাদিনই রান্নাঘরে অতিবাহিত করেন। পুরো রান্নাঘর ঘুরে ঘুরে কাজ করতে তারা একদিকে যেমন দিন শেষে ক্লান্তিও অনুভব করেন। আবার অন্যদিকে পরিষ্কার করার ঝামেলাও এতে বেড়ে যায়।

এই ঝামেলা থেকে মুক্তির জন্য আপনার রান্নাঘরে একটি নির্দিষ্ট অংশ রাখতে পারেন যেখানে রান্না ঘরের যাবতীয় কাজ যেমন সবজি, মাছ কাটা বা বাছার কাজ করা যাবে। চেস্টা করবেন এই জায়গাটা যেন কিচেন সিংকের পাশে হয় তাহলে সহজেই ধোয়ার কাজও করতে পারবেন। এই কাজের স্থান রান্নাঘরের একটা কোনার দিকে রাখার চেস্টা করুন, তা না হলে কাজ করার সময় ময়লা পুরো রান্নাঘরেই ছড়িয়ে যেতে পারে।

আপনার রান্নাঘরের ডিজাইন পরিকল্পনা করার সময় এই সামগ্রিক বিষয়গুলো মাথায় রেখে তারপর ডিজাইনিং করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। খেয়াল রাখবেন, রান্নাঘর ছোট হোক কিংবা বড়, সব কিছু সাজানো গুছানো রাখলে পুরো রান্নাঘর জুড়ে সব কিছুর মধ্যেই সৌন্দর্যের আবির্ভাব ঘটানো সম্ভব।

পরিপাটি, ছিমছাম এবং পর্যাপ্ত আলো-বাতাস এর সুব্যবস্থা আছে এমন একটি রান্নাঘর দেখতে ও ভীষণ নান্দনিক লাগে। তাই দেরি না করে সাশ্রয়ী বাজেটে নতুন করে সাজিয়ে তুলুন আপনার বাড়ির রান্নাঘরটা। নিজের সৌখিনতা ও সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটান সৌন্দর্যের বিকাশের মাধ্যমে।

লেখক: কাজি মোহাম্মদ আরাফাত রহমান

Advertisement
Continue Reading
Advertisement

আবাসন সংবাদ

রিহ্যাবের আধুনিক ভবন নির্মাণে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

Published

on

By

আবাসন কনটেন্ট কাউন্সিলর

রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল অফিসে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান হাজী দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সিডিএ কর্তৃক প্রস্তাবিত মাস্টারপ্ল্যান সম্পর্কে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা প্রদান বিষয়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সভায় অভিমত ব্যক্ত করা হয়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা সম্বলিত সুপরিকল্পিত বিশ্বমানের আধুনিক ভবন নির্মাণে রিহ্যাব সদস্যবৃন্দ বদ্ধপরিকর। এ জন্য সিডিএসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সহযোগীতা কামনা করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের পরিচালক ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির কো-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোরশেদুল হাসান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির সদস্য সৈয়দ ইরফানুল আলম, নূর উদ্দীন আহাম্মদ, শারিস্থ বিনতে নূর, মোঃ মাঈনুল হাসান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিয়নের সিডিএ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটির উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার এস. এম আবু সুফিয়ান, উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল সদস্যবৃন্দ এবং রিহ্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রকৌশলী ও স্থপতিবৃন্দ।

Continue Reading

নির্বাচিত প্রতিবেদন

আবাসন খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে

Published

on

By

আবাসন কনটেন্ট কাউন্সিলর

দেশের আবাসন খাতের অবস্থা বিভিন্ন কারণে কিছুটা নাজুক। এ খাতের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা অনুপস্থিত। এর ওপর রাজনৈতিক অস্থিরতা বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে নির্বাচনের পর আবাসন খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমরা আশা করছি। কারণ তখন বড় অঙ্কের বিনিয়োগে মানুষের মনে দ্বিধা বা ঝুঁকি থাকবে না।

এই পরিস্থিতিতে আবাসন খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আরবান ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর চিফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট অফিসার শেখ কামরুজ্জামান।

ডেভেলপারদের বর্তমান পরিস্থিতি : বর্তমানে বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডেভেলপাররা কিছুটা চাপের মধ্যে আছেন। পুঁজি ব্যবস্থাপনা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এর প্রধান কারণ-মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে না। পাশাপাশি, সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো ইতিবাচক প্রণোদনা নেই। কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগও কমে এসেছে। এছাড়া ব্যাংকিং সেক্টরে তারল্য সংকট ব্যাংকগুলো আবাসন খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ পাচ্ছে না। এর ফলে ডেভেলপাররা মূলধন ব্যবস্থাপনার গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। রাজউকের কর্মকর্তাদের ভালো উদ্দেশ্য থাকা সত্ত্বেও সফটওয়্যারের ত্রুটি আবাসন খাতে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এর ফলে দৈনন্দিন কাজে বিলম্ব হচ্ছে। যা পুরো খাতের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে।

নির্মাণ সামগ্রী উপকরণের দামের অস্থিরতা আবাসন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

নতুন ড্যাপ : প্রস্তাবিত নতুন ড্যাপ (DAP) পাস হলে উন্নয়নের ক্ষেত্র বাড়বে। আগের ড্যাপ ডেভেলপার বা ক্রেতা কারোর জন্যই সুবিধাজনক ছিল না। নতুন ড্যাপ খুব সম্ভাবনাময়।

Advertisement

ফ্ল্যাট বিক্রির গতি : বর্তমানে ফ্ল্যাট বিক্রি কিছুটা ধীর গতিতে চলছে। অনেক ক্রেতা আশা করছেন ফ্ল্যাটের দাম আরও কমবে। আগামী তিন-চার মাসের আগে মন্দা কাটবে কিনা তা বলা কঠিন। তবে জাতীয় নির্বাচনের পর আবাসন খাত আবার স্বাভাবিক গতিতে ফিরবে বলে আমরা আশাবাদী।

রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব : রাজনৈতিক অস্থিরতায় সবাই শঙ্কিত থাকে। এর ফলে ব্যাংক ঋণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যা আবাসন খাতকেও প্রভাবিত করে। সাধারণত, যখন মানুষ অন্য দেশে অভিবাসী হয়, তখন তারা তাদের কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়, যা সেকেন্ডারি বাজারের বিকাশের জন্য ইতিবাচক। আমরা মনে করি না যে এটি আবাসন খাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি অর্থনীতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

রেজিস্ট্রেশন ফি’র প্রভাব : ফ্ল্যাট বিক্রির ওপর রেজিস্ট্রেশন ফি কমা বা বৃদ্ধি সাধারণত খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও ফ্ল্যাট কেনা বা বিক্রির প্রধান নিয়ামক নয়। তবে আমাদের দেশে রেজিস্ট্রেশন খরচ অন্য দেশের তুলনায় বেশি, যা আবাসন খাতের উন্নয়নের জন্য সহায়ক নয়। সরকার বড় আকারের অবকাঠামো উন্নয়নে মনোযোগ দিলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাশের এলাকায় আবাসন খাতের প্রসার ঘটবে।

আবাসন খাতকে উদ্যমপূর্ণ করার জন্য ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা : ব্যাংকের জন্য আবাসন খাত সাধারণত ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে থাকে। তারা অন্যসব খাতে ঋণ দিতে বেশি আগ্রহী, যদিও আবাসন একটি নিরাপদ বিনিয়োগ এবং এখানে আসল সম্পত্তি জামানত হিসাবে থাকে। ব্যাংকগুলোর কাছে দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের অভাব রয়েছে। এ কারণে তাদের সম্পদ-দায় ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়।

যৌথ উদ্যোগে উন্নয়ন :
আবাসন খাতের উন্নয়নে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ডেভেলপারদের কাছে জমি সরবরাহ করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ডেভেলপার বাছাইয়ে সতর্ক থাকতে হবে। রাজউকের নকশা অনুমোদন ও অন্য সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করা যেতে পারে।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Advertisement
আবাসন সংবাদ3 weeks ago

রিহ্যাবের আধুনিক ভবন নির্মাণে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল অফিসে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান হাজী দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সিডিএ কর্তৃক প্রস্তাবিত মাস্টারপ্ল্যান...

নির্বাচিত প্রতিবেদন3 weeks ago

আবাসন খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে

দেশের আবাসন খাতের অবস্থা বিভিন্ন কারণে কিছুটা নাজুক। এ খাতের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিবেশ দরকার, তা অনুপস্থিত। এর ওপর...

অর্থ ও বাণিজ্য3 weeks ago

ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা

দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭...

আবাসন সংবাদ4 weeks ago

আবাসন পরিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও হিসাবরক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

চাকুরির গ্রেড ও বেসিক বেতন বিবেচনায় না নিয়ে সরকারি বাসা বরাদ্দের সুপারিশ, ডি-১ ও ডি-২ শ্রেণির বাসা বরাদ্দের ক্ষেত্রে মোটা...

আইন-কানুন4 weeks ago

একই জমি দুইজনের কাছে বিক্রি: কে হবেন প্রকৃত মালিক?

একটি জমি যদি ভিন্ন সময়ে দুইজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়, তাহলে প্রকৃত মালিক কে হবেন? এ বিষয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া...

Advertisement

সর্বাধিক পঠিত