আইন-কানুন
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)

প্রচলিত একটি বিষয় হচ্ছে চুক্তি করার আগে ডেভেলপাররা ভূমির মালিককে রীতিমতো মিষ্টি কথা শোনালেও চুক্তির পর তার চিত্র ঠিক উল্টো। আবার ফ্রি অফার, নির্দিষ্ট সময়ে হস্তান্তর, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা-নানা ছলাকলার ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই জলের মধ্যে টাকা ফেলেন।
অথচ বছরের পর বছর পার হলেও সেই জলও শোকায় না। ফ্ল্যাটেরও দেখা মেলে না। আশা তখন হতাশায় পরিণত হয়। তাই, চুক্তি করার আগে কিংবা ফ্ল্যাট বা প্লট বুকিং দেওয়ার আগে কিছু বিষয় সবারই জানা দরকার। সমস্যা সমাধানকল্পে ২০১০ সালে প্রণীত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইনেই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার নিবন্ধন ও তার দায়দায়িত্ব
ডেভেলপারের হাতে জমি তুলে দেওয়ার আগে জেনে নিন ডেভেলপার কোম্পানিটি নিবন্ধিত কি না। নিবন্ধিত ডেভেলপারদের তালিকা রিহ্যাবের লিস্টে আছে কিনা দেখে নিবেন। যদি কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত থাকে সেখান থেকেই আপনি জেনে নিতে পারবেন। ডেভেলপারকে তাদের প্রসপেক্টাসে রিয়েল এস্টেটের নিবন্ধন নম্বরসহ নাম, ঠিকানা ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত নকশার নম্বরসহ স্মারক নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
কোনো ডেভেলপারই প্রকল্প অনুমোদনের আগে প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারবে না এবং ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো চুক্তি করতে পারবে না। প্লট কেনার আগে অবশ্যই আপনি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও জমির মালিকানাসংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে নেবেন এবং ডেভেলপার তা আপনাকে দেখাতে বাধ্য। কোনো ব্যক্তি নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করলে বা কোনো ডেভেলপার অনুমোদন ছাড়া প্রকল্পের কাজ শুরু করলে বা বিজ্ঞাপন প্রচার করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
মালিক ও ডেভেলপারের মধ্যে অংশের ভাগাভাগির চুক্তি
রিয়েল এস্টেট উন্নয়নের লক্ষ্যে জমি হস্তান্তরের আগে মালিক ও ডেভেলপারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি (Joint Venture Agreement) সম্পাদন করতে হয়। চুক্তিতে কে কত অংশ পাবে তার বিস্তারিত উল্লেখ থাকতে হবে অর্থাৎ রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বাবদ ডেভেলপারের পাওয়া অংশ ও জমির মালিকের অংশের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিকের অংশ হস্তান্তর না করলে বা দখল বুঝিয়ে না দিলে ডেভেলপারের দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা ২০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
আবার ভূমির মালিক যদি চুক্তিতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে ডেভেলপারের কাছে জমির দখল হস্তান্তর না করে বা ডেভেলপার বরাবর সম্পাদিত আমমোক্তারনামা কোনো নোটিশ ছাড়াই বাতিল করে, তবে সেও দণ্ডিত হবে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রত্যেক ডেভেলপারকে রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের পর কমপক্ষে এক বছর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং নির্মাণসংক্রান্ত ত্রুটির কারণে মেরামতের প্রয়োজন হলে দুই বছর পর্যন্ত ডেভেলপার নিজ খরচে তা মেরামত করবে।
রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রয়, রেজিস্ট্রেশন, হস্তান্তর
আপনাকে ফ্ল্যাট কিনতে হলে ডেভেলপারের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে এবং এ চুক্তিতে ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত বিস্তারিত শর্ত উল্লেখ থাকবে। চুক্তি বা বরাদ্দপত্রে ভবনে অবশ্যই যেসব ফিটিংস-ফিক্সার ইত্যাদি ব্যবহার করা হবে তার বিবরণ থাকতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে কাঠামো নকশা যোগ্যতাসম্পন্ন লোক দ্বারা প্রণয়ন করা হয়েছে কি না, এবং প্রণয়নের সময় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়েছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
প্রণীত অনুমোদিত নকশা ডেভেলপার আপনাকে দিতে বাধ্য থাকবে। চুক্তির-ভিত্তিতে ডেভেলপার আপনাকে পছন্দসই ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেবে এবং আপনার বিনা অনুমতিতে বরাদ্দ করা প্লট বা ফ্ল্যাট পরিবর্তন করতে পারবে না। চুক্তিতে উল্লিখিত শর্তের বাইরে অতিরিক্ত কোনো অর্থ দিতে আপনি বাধ্য নন। তবে যদি কোনো উন্নতমানের সরঞ্জাম সংযোজনের দরকার হয়, তবে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিতে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া যেতে পারে।
সমস্ত মূল্য পরিশোধের তিন মাসের মধ্যে ডেভেলপার আপনাকে দখল হস্তান্তর, দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশনের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে দেবে এবং হস্তান্তরকালে আয়তন কম-বেশি হলে তার মূল্য ক্রয়মূল্য অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। আপনাকে রিয়েল এস্টেটের মূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে এককালীন বা কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
আপনি এককালীন বা কিস্তিতে মূল্য পরিশোধে ব্যর্থ হলে ডেভেলপার ৬০ দিনের আগে নোটিশ দিয়ে বরাদ্দ বাতিল করতে পারবে এবং এ ক্ষেত্রে ডেভেলপার আপনার জমা করা অর্থ পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে চেকের মাধ্যমে একসঙ্গে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। তবে আপনি বিলম্বিত সময়ের জন্য কিস্তির অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে সুদ প্রদানসহকারে কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। তবে তা তিনবারের বেশি করতে পারবেন না।
আবার ডেভেলপার নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তরে ব্যর্থ হলে চুক্তিতে নির্ধারিত ক্ষতিপূরণসহ সব অর্থ আপনাকে ছয় মাসের মধ্যে ফেরত দেবে। তবে চুক্তিতে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ না থাকলে তা পরিশোধিত অর্থের ওপর ১৫ শতাংশ হারে নির্ধারিত হবে। আবার আপনি কোনো কারণে বরাদ্দ বাতিল করতে চাইলে ডেভেলপার আপনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিশোধিত অর্থের ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে বাকি অর্থ তিন মাসের মধ্যে এককালীন চেক বা পে-িঅর্ডারের মাধ্যমে ফেরত দেবে। (চলবে)
লেখক: এম টি উল্যাহ, আইনজীবী।
আইন-কানুন
একই জমি দুইজনের কাছে বিক্রি: কে হবেন প্রকৃত মালিক?

একটি জমি যদি ভিন্ন সময়ে দুইজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়, তাহলে প্রকৃত মালিক কে হবেন? এ বিষয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া আনজুম স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ধরুন, একটি জমি ২০০০ সালে একজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়েছে, যার দলিল নম্বর ১২০০। পরে একই জমি ২০০৫ সালে আরেকজনের কাছে বিক্রি হয়, যার দলিল নম্বর ২০০০। দ্বিতীয় ব্যক্তি সেই জমির নামজারিও করে ফেলেছেন।”
এই পরিস্থিতিতে আইন অনুযায়ী, যিনি আগে জমিটি কিনেছেন অর্থাৎ ২০০০ সালের দলিল যাঁর নামে, তিনিই হবেন জমির প্রকৃত মালিক। যদিও দ্বিতীয় ব্যক্তি নামজারি করে ফেলেছেন, তবুও প্রথম ক্রেতা এসিল্যান্ড অফিসে ‘মিসকেস’-এর মাধ্যমে দ্বিতীয় নামজারিটি বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ব্যারিস্টার তাসমিয়া আরও জানান, “আবেদনের পর কর্তৃপক্ষ উভয় দলিল পর্যবেক্ষণ করবে। যদি দেখা যায় একটি দলিল আগে হয়েছে এবং অপরটি পরে, তাহলে প্রথম দলিলটিই বৈধ হিসেবে গণ্য হবে। ফলে দ্বিতীয় দলিল ও নামজারি উভয়ই বাতিল হয়ে যাবে।”
সুতরাং, একই জমি একাধিকবার বিক্রি হলেও—আইন অনুযায়ী যে ব্যক্তি আগে দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন, তিনিই হবেন জমির বৈধ ও প্রকৃত মালিক।
আইন-কানুন
দলিলে লেখা এসব শব্দের অর্থ জেনে রাখুন, নাহলে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়

যেকোনো দলিল লিখতে হয় আইনে বলে দেওয়া নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে। বিশেষ করে সাফকবলা, হেবা বা দানপত্র দলিল, বায়না দলিল, আমমোক্তার দলিলসহ অন্যান্য জমিজমাসংক্রান্ত দলিলে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ব্যতিক্রমী শব্দ ও সংকেত। এসব শব্দ সচরাচর অন্য কোথাও ব্যবহৃত হয় না। দলিল করার সময় কিংবা দলিল তল্লাশি বা পরীক্ষা করে দেখার সময় এসব শব্দের অর্থ ভালোভাবে না বুঝলে হতে পারে নানা জটিলতা, পড়তে পারেন বিপদে। তাই জেনে নিন, দলিলে ব্যবহৃত কিছু শব্দের আসল অর্থ।
১. গং
অর্থ: অন্যান্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। একজনের নামের সঙ্গে গং থাকলে বোঝায় তাঁর সঙ্গে আরও লোক আছে।
২. খং
অর্থ: খতিয়ান। জমির বিবরণ, দাগ নম্বর, অংশসহ সরকারি জরিপের একটি দলিল। বিভিন্ন দলিলে খতিয়ানের সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে খং লেখা হয়।
৩. নিং
অর্থ: নিরক্ষর। যে ব্যক্তি লেখাপড়া জানেন না, তাঁর পক্ষে দলিলে অন্য কেউ স্বাক্ষর দিলে প্রথমে নিরক্ষর ব্যক্তির নামের বাঁ পাশে বা সামনে লেখা হয় নিং।
৪. বং
অর্থ: বাহক। যিনি নিরক্ষর ব্যক্তির নাম লিখে সাক্ষর দেন, তাঁর নামের সামনে লেখা থাকে বং।
৫. সাং
অর্থ: সাকিন বা গ্রাম। বাসস্থানের ঠিকানা অর্থে ব্যবহৃত হয়।
৬. জং
অর্থ: স্বামী। দলিলে কোনো বিবাহিত নারীর স্বামীর নামের সামনে লেখা হয় জং।
৭. মং
অর্থ: মোট। কোনো মোট হিসাব বা পরিমাণের সংক্ষিপ্ত রূপ এটি। অনেক দলিলে ‘মবলক’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয় মোট পরিমাণ বোঝাতে।
৮. এওয়াজ
অর্থ: বিনিময়। সমমূল্যের জমি বা সম্পদের বিনিময়কে বলা হয় এওয়াজ।
৯. সিট
অর্থ: মানচিত্রের অংশ।
১০. পিং
অর্থ: পিতা। দলিলে কোনো ব্যক্তির পিতার নামের আগে লেখা হয়।
১১. ইয়াদিকৃত
অর্থ: পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু। শব্দটি লেখা হতো পুরোনো দলিলগুলোতে।
১২. পত্র মিদং
অর্থ: পত্রের মাধ্যমে। চিঠি দিয়ে জানানো বা অবগত করা হয়েছে, এ অর্থে ব্যবহার করা হয়।
১৩. বিং
অর্থ: বিস্তারিত। কোনো কিছু বিস্তারিত বোঝাতে ব্যবহার করা হয় বিং।
১৪. দং
অর্থ: দখলকারী। কোনো জমি যাঁর দখলে আছে, তাঁর নামের পাশে লেখা হয় দং।
১৫. হাল দাগ
অর্থ: বর্তমানে প্রচলিত দাগ নম্বর।
১৬. সাবেক দাগ
অর্থ: পূর্বের বা আগের দাগ নম্বর।
১৭. চালা
অর্থ: একটু উঁচু জমি, যেখানে সহজে চাষবাস করা যায়।
১৮. নাল
অর্থ: যে জমিতে চাষবাস করা যায় বা চাষের উপযুক্ত।
১৯. বাইদ
অর্থ: বৃষ্টির পানি জমে, এমন নিচু ও জলাভূমি প্রকৃতির জমি।
২০. কোর্ফা বা কোরফা
অর্থ: জমির মালিকানা স্বত্ব, যা প্রজা তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা রাজার কাছ থেকে নিয়ে চাষ করেন।
২১. ছাহাম
অর্থ: জমিজমার অংশ বা ভাগ। কোনো জমিতে কে কত অংশ জমি পেলেন বা পাবেন, বিশেষ করে শরিকদের মধ্যে জমিজমার প্রাপ্য অংশ বোঝাতে ব্যবহার করা হয় ছাহাম।
২২. খাসজমি
অর্থ: সরকারি মালিকানাধীন জমি।
২৩. পতিত জমি
অর্থ: যে জমিতে চাষবাস করা হতো, কিন্তু জমির উর্বরতা বাড়ানোর জন্য সাময়িকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে না।
২৪. চাকরান
অর্থ: জমিদারেরা চাকরদের বেতনের বদলে জমিতে যে ভোগদখলের সুবিধা দিতেন, তাকে বলে চাকরান।
২৫. ছুট বা ছুটা দাগ
অর্থ: জমির নকশায় ভূমির দাগ নম্বর দেওয়ার সময় ভুলে কোনো সংখ্যা বাদ পড়ে গেলে বাদ পড়া নম্বরটি হচ্ছে ছুট বা ছুটা দাগ।
২৬. বাটা
অর্থ: বাটা মানে বিভক্ত। জমির নকশা তৈরির সময় কোনো দাগ বিভক্ত করে বা আলাদা করে নতুন দাগ নম্বর সৃষ্টি করার সময় বিশেষভাবে দাগ তৈরি করা হয়, একেই বলে বাটা দাগ।
২৭. ছড়া বা ছড়ি
অর্থ: পাহাড় বা টিলা থেকে যে জমি সমতলের দিকে ছড়িয়ে পড়েছে, তাকে বলে ছড়া বা ছড়ি।
২৮. নয়নজুলি
অর্থ: কোনো রাস্তা তৈরির সময় দুই দিক থেকে মাটি তোলার ফলে একধরনের নালা তৈরি হয়। সেই নালাকেই বলে নয়নজুলি।
২৯. হালট
অর্থ: জমির পাশ দিয়ে চাষের সুবিধার্থে বলদ কিংবা কৃষকদের চলাচলের জন্য যে পথ রাখা হয়, তাকে বলে হালট।
৩০. সিকস্তি
অর্থ: নদী বা সাগরের জোয়ারে যখন কোনো জমি ভেঙে যায়, তাকে বলে সিকস্তি।
৩১. পয়স্তি
নদী বা সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়া কোনো জমি যখন পুনরায় চরের মতো জেগে ওঠে, তাকে বলে পয়স্তি।
৩২. বিলা
অর্থ: জলাবদ্ধ এলাকা, মৌসুমি জলাভূমি।
৩৩. ডাঙ্গা
অর্থ: চাষের উপযোগী উঁচু জমি।
৩৪. গোপাট
অর্থ: পতিত জমি, যেখানে গবাদিপশু ঘাস খাওয়ার জন্য চষে বেড়ায়।
৩৫. কোলা জমি
অর্থ: বসতবাড়ির সঙ্গে অবস্থিত কোনো নাল বা চাষাবাদের জমিকে বলে কোলা জমি।
৩৬. চিরাগী
অর্থ: মসজিদ বা কবরস্থানে আলো জ্বালানোর জন্য যে খরচ হয়, তা মেটানোর জন্য কোনো দানকৃত ভূমি।
৩৭. পালাম ভূমি
অর্থ: বসতবাড়ির পাশেই অবস্থিত সবজি চাষের জন্য উঁচু জমি।
৩৮. লায়েক জমি
অর্থ: চাষের উপযুক্ত জমি।
৩৯. কস্য
অর্থ: কস্য মানে হলো কার নামে দলিল। মালিকের নামে দলিল হলে কস্য শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
৪০. মৌরশী
অর্থ: পৈত্রিক সম্পত্তি।
৪১. চটান
অর্থ: বাড়ির কাছাকাছি থাকা একটি উঁচু কিন্তু সমতল বা ঢালু এলাকা, যেখানে কোনো চাষবাস হয় না।
৪২. ইজা
অর্থ: চলমান কোনো হিসাবে টেনে আনা।
৪৩. খারাজ
অর্থ: কৃষিকাজে ব্যবহৃত কোনো জমির ওপর ধার্য করা কর।
৪৪. লাখেরাজ
অর্থ: যে জমিতে কোনো কর দিতে হয় না বা করের আওতামুক্ত।
৪৫. তসদিক
অর্থ: কোনো প্রমাণ, দলিল–দস্তাবেজ বা সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করা।
৪৬. জমাবন্দী
অর্থ: ভূমি অফিসে প্রজা বা ক্রেতার নাম, জমির বিবরণ ও খাজনার বিবরণী লিপিবদ্ধ করা।
৪৭. আমলনামা
অর্থ: জমিদার কর্তৃক জমির বন্দোবস্ত দেওয়ার নির্দেশপত্র বা দলিল।
৪৮. চান্দিনা
অর্থ: হাটবাজারের জন্য স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া অকৃষি জমি।
৪৯. হারাহারি
অর্থ: গড়পড়তা, অনুপাত অনুযায়ী ভাগবাঁটোয়ারা বা অনুপাত অনুযায়ী। জমির পরিমাপ বা ভাগাভাগির ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়।
৫০. তৌজি
অর্থ: রাজস্ব রেকর্ড, যা কোনো জমি বা সম্পত্তির রাজস্বের পরিমাণ এবং মালিকের নাম ধারণ করে। এটি মূলত ব্রিটিশ আমলে ভূমি রাজস্ব আদায়ের জন্য ব্যবহৃত হতো।
৫১. কায়েমি
অর্থ: বিশেষ অধিকার, যা স্থায়ী ও কোনো শর্তের ওপর নির্ভরশীল নয়। অর্থাৎ কায়েমি সত্তা বা অধিকার হলো এমন এক অধিকার, যা সহজে বাতিল করা যায় না।
৫২. খাইখন্দক
অর্থ: জলাশয় বা গর্তযুক্ত ভূমিকে বলা হয় খাইখন্দক।
৫৩. বাস্তু
অর্থ: বসতভিটাকে বলা হয় বাস্তু।
৫৪. রোক
অর্থ: নগদ অর্থ দিয়ে কেনা জমি। রোক মানে নগদ।
৫৫. আসলি
অর্থ: মূল ভূমি বোঝাতে লেখা হয় আসলি।
৫৬. তুদাবন্দী
অর্থ: জমির সীমানা নির্ধারণ করা।
৫৭. দিয়ারা
অর্থ: নদীর পলি দিয়ে গঠিত কোনো চরাঞ্চল বা জমিকে বলে দিয়ারা জমি।
৫৮. কিত্তা
অর্থ: ভূমিখণ্ডকে কিত্তা লেখা হয় অনেক দলিলে।
৫৯. কবুলিয়ত
অর্থ: স্বীকারোক্তি দলিলকে বলা হয় কবুলিয়ত।
৬০. কান্দা
অর্থ: নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা উর্বর কোনো উঁচু জমি।
৬১. কিসমত
অর্থ: ভূমির অংশ বোঝাতে কিসমত লেখা হয়।
৬২. গির্ব
অর্থ: বন্ধক। কোনো জমি বন্ধক নিলে বা বন্ধকি জমি বোঝাতে বলা হয় গির্ব।
৬৩. টেক
অর্থ: নদীর পলি জমে সৃষ্ট ভূমি।
৬৪. দরবস্ত
অর্থ: সবকিছু।
৬৫. দিঘলি
অর্থ: নির্দিষ্ট খাজনা প্রদানকারী।
৬৬. নক্সা ভাওড়ন বা নকশা ভাওড়ন
অর্থ: আগের জরিপের কোনো মানচিত্রকে বলা হয় নক্সা ভাওড়ন বা নকশা ভাওড়ন।
-
বিবিধ2 years ago
বাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
সীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
রাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
মাত্র ২৪ ঘন্টায় খতিয়ানের ভূল সংশোধনের সরকারি নির্দেশনা
-
ফিচার4 weeks ago
প্রথম ফ্ল্যাট কিনে ঠকতে না চাইলে মেনে চলুন এই ১০ কৌশল
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
প্রিমিয়াম হোল্ডিংয়ের বর্ষপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী একক আবাসন মেলা অনুষ্ঠিত
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
ডম-ইনো এফেক্ট: ফ্ল্যাট ক্রেতারা প্রতারিত, প্রকল্পগুলো পরিত্যক্ত