অর্থ ও বাণিজ্য
চীনে আবাসন কোম্পানি বন্ধে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিরল আবেদন

চীনের আবাসন কোম্পানিগুলোর সংকট প্রশ্নে অনমনীয় ভূমিকা বহাল রেখেছে দেশটির সরকার। সাম্প্রতিক এক ঘটনায় বিষয়টি নতুন মাত্রা লাভ করেছে। আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় গতকাল আবাসন জায়ান্ট শিমাও গ্রুপের বিরুদ্ধে লিকুইডেশন পিটিশন দায়ের করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক (এশিয়া)।
শিমাও গ্রুপের পক্ষ থেকে পিটিশনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ১৫৮ কোটি হংকং ডলার (২৭ কোটি ২০ লাখ ডলার) আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ পিটিশন চীনের সংকট-বিধ্বস্ত রিয়েল এস্টেট বাজারে বড় অভিঘাত তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য পিটিশনের জোরালো বিরোধিতা কারা হবে বলে জানিয়েছে শিমাও গ্রুপ।
চীনের মূল ভূখণ্ডের একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হংকং থেকে অফশোর আইনি ব্যবস্থার এ সিদ্ধান্ত দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে বিরল একটি সিদ্ধান্ত। এর আগে এভারগ্রান্ড গ্রুপ ও কান্ট্রি গার্ডেনের মতো শীর্ষ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের আইনি প্রক্রিয়ায় শুরু করেছিল বিদেশী ঋণদাতারা।
পিটিশনের খবর প্রকাশের পর সোমবার শিমাওয়ের হংকং-তালিকাভুক্ত শেয়ার ১২ দশমিক ১ শতাংশ কমে লেনদেনের সময় সর্বকালের সর্বনিম্ন ৪০ হংকং সেন্টে পৌঁছেছে।
অন্যান্য চীনা আবাসন কোম্পানির মতোই সাংহাইভিত্তিক শিমাও ২০২২ সালে অফশোর বন্ডে খেলাপি হয়েছিল। গত মাসে ঋণ পুনর্গঠনে বিশদ পরিকল্পনা তৈরির কথা জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
শিমাও দাবি করছে, পিটিশনটি কোম্পানির অফশোর ঋণদাতা ও অন্য স্টেকহোল্ডারদের সম্মিলিত স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে না। অন্যদিকে চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক মন্তব্যের জন্য অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি।
এর আগে জানুয়ারিতে প্রতিদ্বন্দ্বী আবাসন জায়ান্ট চায়না এভারগ্রান্ডকে হংকংয়ের একটি আদালত অবসায়নের আদেশ দেন। কোম্পানিটির দেনার পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার কোটি ডলার। ওই ঘটনা চীনের আবাসন খাতে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিঘাত তৈরি করে।
একসময় চীনের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশে নির্মাণ ও আবাসন খাতের অবদান ছিল । ২০২১ সাল থেকে বড় ধরনের আর্থিক চাপের মুখে রয়েছে এ খাত। বড় ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো কী পরিমাণ অর্থ ঋণ নিতে পারবে তা নিয়ন্ত্রণে ওই সময় নতুন নীতি প্রবর্তন করেছিল সরকার। একই সময়ে ভবন সমাপ্ত করতে না পারা ও বিক্রি কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো জটিলতায় পড়ে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকেও যথাযথ সাড়া মেলেনি। তবে খাতটিকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
শিমাও গ্রুপের বিরুদ্ধে পিটিশন প্রসঙ্গে কেটি ক্যাপিটালের গবেষক ফার্ন ওয়াং বলেছেন, ‘ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যাংকগুলো বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খুব সম্ভবত সিসিবি বিকল্পের বাইরে চলে যাচ্ছে। তারা শিমাওয়ের অবসান চাইছে।’
এদিকে রয়টার্সকে একটি সূত্র বলেছে, এরই মধ্যে প্রধান বন্ডহোল্ডারদের একটি পক্ষ শিমাওয়ের পুনর্গঠন পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে।
ডয়চে ব্যাংকও শিমাওয়ের বিরুদ্ধে সিসিবির মতো একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কথা বিবেচনা করছে বলে গত মাসের শুরুতে একটি সূত্র জানিয়েছিল রয়টার্সকে। তখন বলা হয়েছিল, ঋণ পুনর্গঠনে শিমাওয়ের ঘোষিত শর্ত তাদের মাঝে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত শিমাও ২০২৩ সালে ৮২০ কোটি ডলার আয় করেছে, যা ২০২২ সালের চেয়ে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ কম।
কভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে ভুগছে চীনের অর্থনীতি। সাম্প্রতিক বছরে কিছুটা পুনরুদ্ধার দেখা গেলেও আবাসন খাত দুর্বল রয়ে গেছে। মার্চে প্রকাশিত চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম দুই মাসে চীনে আবাসন খাতে বিনিয়োগ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ কমেছে, যেখানে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কমার হার ছিল ২৪ শতাংশ। এছাড়া ফ্লোর এরিয়া অনুসারে, সম্পত্তি বিক্রি এক বছর আগের তুলনায় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে, যা গত বছরের ডিসেম্বরে ২৩ শতাংশ কমেছে। সূত্র: রয়টার্স।
অর্থ ও বাণিজ্য
ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা বেড়েছে ২১ কোটি টাকা

দেশের আবাসন খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৭৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ২১ কোটি টাকা বা সাড়ে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন হাউজিং গতকাল মঙ্গলবার তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে মুনাফার এই হিসাব দিয়েছে। একই সভা থেকে কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত অর্থবছরে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মুনাফা ও লভ্যাংশ উভয়ই বেড়েছে।
কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে চূড়ান্ত করা মুনাফা ও লভ্যাংশের তথ্য আজ বুধবার স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত অর্থবছরের জন্য তারা শেয়ারধারীদের প্রতি শেয়ারের বিপরীতে আড়াই টাকা (২৫ শতাংশ) করে লভ্যাংশ দেবে। বর্তমানে শেয়ারধারীদের হাতে কোম্পানিটির যে শেয়ার রয়েছে তার বিপরীতে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করতে হবে। আগের অর্থবছরে (২০২৩–২৪) কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১৯ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একেকজন শেয়ারধারী ১ টাকা ৯০ পয়সা করে পেয়েছিলেন। ওই বছর ঘোষিত লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটিকে বিতরণ করেছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ বাবদ ৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ বাবদ বাড়তি এই ব্যয়ের জোগান আসছে বাড়তি মুনাফা থেকে। কারণ, এক বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ২১ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির খবরে আজ শেয়ারবাজারে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল লেনদেনের শুরু থেকে। প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা বা সোয়া ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির ৮ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
অর্থ ও বাণিজ্য
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক করল সরকার

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কেউ এ-সংক্রান্ত নির্দেশিকার ব্যত্যয় ঘটালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’ অনুযায়ী পরিহারযোগ্য বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন তথ্যাদি শেয়ার করছেন এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকারকে বিব্রত করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন; যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চাকরিবিধির পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ। প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। অনেক ক্ষেত্রে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হানিকর এবং বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের পর্যায়ের অপরাধ। এ ধরনের বিভিন্ন ব্যত্যয়গুলো নজরে আসায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আদেশে জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’-এর সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিটি ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা’, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা’ এবং ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা’ অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
-
বিবিধ2 years ago
বাংলাদেশে প্রচলিত বাড়ি ভাড়ার চুক্তি, নিয়ম ও নীতিমালা
-
নির্বাচিত প্রতিবেদন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করবেন যেভাবে
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
রাজউকের নির্দেশে নর্থ সাউথ গ্রীন সিটি বন্ধ
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
সীমান্ত রিয়েল এস্টেট এর অনুমোদনহীন সীমান্ত সিটি ও সীমান্ত কান্ট্রি প্রকল্প
-
আবাসন সংবাদ1 month ago
মাত্র ২৪ ঘন্টায় খতিয়ানের ভূল সংশোধনের সরকারি নির্দেশনা
-
ফিচার4 weeks ago
প্রথম ফ্ল্যাট কিনে ঠকতে না চাইলে মেনে চলুন এই ১০ কৌশল
-
আইন-কানুন1 year ago
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের সাথে জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে সমস্যা ও তার প্রতিকার (১ম পর্ব)
-
আবাসন সংবাদ4 weeks ago
আবাসন পরিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও হিসাবরক্ষক সাময়িক বরখাস্ত